ভারত ছাড়া আর কোন কোন দেশের জাতীয় সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথের লেখা?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষায় অসংখ্য গান রচনা করেছিলেন, এ কথা আমরা প্রায় সকলেই জানি। ভারতের জাতীয় সঙ্গীতটিও তাঁরই রচনা। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ভারত ছাড়া আর কোন কোন দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচনা করেছিলেন জানেন?

Advertisement
ভারত ছাড়া আর কোন কোন দেশের জাতীয় সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথের লেখা?রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
হাইলাইটস
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষায় অসংখ্য গান রচনা করেছিলেন, এ কথা আমরা প্রায় সকলেই জানি।
  • ভারতের জাতীয় সঙ্গীতটিও তাঁরই রচনা।
  • কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ভারত ছাড়া আর কোন কোন দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচনা করেছিলেন জানেন?

আজ ২৫ বৈশাখ, নোবেলজয়ী কবি, সাহিত্য, ঔপন্যাসিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ (ইংরেজির ১৮৬১ সালের ৭ মে) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর রচনায় বাঙালির যাবতীয় অনুভূতি, আবেগ, আকাঙ্ক্ষা, অভিব্যক্তির নিখুঁত ও ব্যাপ্ত প্রকাশ ঘটেছে। তিনি একাধারে কবি, চিত্রশিল্পী, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সংগীত রচয়িতা-সুরকার, নাট্যকার, অভিনেতা ও দার্শনিক ছিলেন।

তিনি বাংলা ভাষায় অসংখ্য গান রচনা করেছিলেন, এ কথা আমরা প্রায় সকলেই জানি। ভারতের জাতীয় সঙ্গীতটিও তাঁরই রচনা। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ভারত ছাড়া আর কোন কোন দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচনা করেছিলেন জানেন?

জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে এই গানটি (ভারতের জাতীয় সংগীত) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তৎসম বাংলা ভাষায় রচনা করেছিলেন। ১৯১১ সালে জাতীয় কংগ্রেসের একটি সভায় এটি প্রথম গাওয়া হয়। দেশের স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৫০ সালে স্বাধীন ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের স্বীকৃতি লাভ করে এই রচনার প্রথম স্তবকটি।

Rabindranath Tagore

এবার আসা যাক বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের প্রসঙ্গে। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতটিও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরই রচনা। ১৯০৫ সালে কবিগুরু আমার সোনার বাংলা গানটি রচনা করেন। রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞদের মতে, "আমি কোথায় পাব তারে" এই বাউল গানটির সুর ও সঙ্গীত থেকে অনুপ্রাণিত। ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে আমার সোনার বাংলা গানটি।

অনেকের ধারণা, শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীতটিও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরই রচনা। এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক চলেছে বহুদিন ধরে।

Ananda Samarakoon

শ্রীলঙ্কার জাতীয় সঙ্গীত 'নমো নমো শ্রীলঙ্কা মাতা'। ১৯৪৮-এ শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা লাভ করলে জাতীয় সংগীত নির্ধারণ করবার জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটিতে আনন্দ সামারাকুন তাঁর 'নমো নমো শ্রীলঙ্কা মাতা' গানটি জমা দেন। ওই কমিটি ২২ নভেম্বর, ১৯৫১-এ এই গানটিকে শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতের স্বীকৃতি দেয়।

আনন্দ সামারাকুন ১৯৩০ সালে বিশ্বভারতীতে চারুকলা ও সংগীত বিষয়ে উচ্চশিক্ষার পাঠ নিতে এসেছিলেন। বিশ্বভারতীতে ৬ মাস ছিলেন তিনি। এই সময় তিনি রবীন্দ্রনাথের নৈকট্য লাভ করেন এবং কবি গুরুর সাহিত্য, দর্শণ, সঙ্গীতে বিশেষভাবে প্রভাবিত হন। ১৯৪০ সালে সামারাকুন 'নমো নমো মাতা' এই দেশাত্মবোধক গানটি রচনা করেন যেটি ১৯৪৬ সালে রেকর্ড করা হয়। পরবর্তীতে এই 'নমো নমো মাতা'র লাইন সামান্য বদলে 'নমো নমো শ্রীলঙ্কা মাতা' হিসাবে শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতের স্বীকৃতি পায়। সুতরাং, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারত ছাড়াও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়ীতা। শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতে রবীন্দ্র সাহিত্য, দর্শণ, সঙ্গীতে বিশেষ প্রভাব থাকলেও সেটি তাঁর রচনা নয়।

Advertisement

POST A COMMENT
Advertisement