Indian mango varieties: চৌসা-ল্যাংড়া-আলফানসো-কেশর, আমের এমন আজব নাম কেন? রইল কাহিনি

ভারতের গ্রীষ্ম মানেই আমের মরসুম। তবে এই মিষ্টি ফলটির শুধু স্বাদেই নয়, নামের মধ্যেও লুকিয়ে আছে বিস্ময়কর ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আঞ্চলিক পরিচয়ের ছাপ। আপনি যে আম খান, চৌসা, ল্যাংড়া, দশেরি, কেসর, মালদা বা আলফোনসো, জানেন কি, এই প্রতিটি নামের পিছনেই রয়েছে কোনও না কোনও ঐতিহাসিক গল্প?

Advertisement
চৌসা-ল্যাংড়া-আলফানসো-কেশর, আমের এমন আজব নাম কেন? রইল কাহিনি
হাইলাইটস
  • ভারতের গ্রীষ্ম মানেই আমের মরসুম।
  • তবে এই মিষ্টি ফলটির শুধু স্বাদেই নয়, নামের মধ্যেও লুকিয়ে আছে বিস্ময়কর ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আঞ্চলিক পরিচয়ের ছাপ।

ভারতের গ্রীষ্ম মানেই আমের মরসুম। তবে এই মিষ্টি ফলটির শুধু স্বাদেই নয়, নামের মধ্যেও লুকিয়ে আছে বিস্ময়কর ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আঞ্চলিক পরিচয়ের ছাপ। আপনি যে আম খান, চৌসা, ল্যাংড়া, দশেরি, কেসর, মালদা বা আলফোনসো, জানেন কি, এই প্রতিটি নামের পিছনেই রয়েছে কোনও না কোনও ঐতিহাসিক গল্প?

চলুন, জেনে নিই ভারতের জনপ্রিয় কিছু আমের নামকরণের কাহিনী।

চৌসা আম: যুদ্ধজয়ের স্বাদে নামকরণ
১৫৩৯ সালে বিহারের চৌসা শহরে শের শাহ সুরি মুঘল সম্রাট হুমায়ুনকে পরাজিত করেছিলেন। বিজয়ের আনন্দে শের শাহ সেখানে উৎপন্ন একটি সুস্বাদু আমের প্রশংসা করে সেটির নাম দেন 'চৌসা আম'। তাঁর মনে হয়েছিল, যেমন জয় স্মরণীয়, তেমনই এই আমও হওয়া উচিত কালজয়ী।

দশেরি আম: নবাবদের প্রিয় রাজকীয় ফল
উত্তরপ্রদেশের দশেরি গ্রামে এক গাছ থেকে জন্ম নেওয়া এক মিষ্টি জাতের আম এতটাই জনপ্রিয় হয় যে তার নাম হয় 'দশেরি'। আওধের নবাবরা এই আম পছন্দ করতেন, একে 'রাজকীয় আম' বলেও উল্লেখ করা হয়।

ল্যাংড়া আম: খোঁড়া ফকিরের উঠোন থেকে বিশ্বে খ্যাতি
বারাণসীতে এক খোঁড়া ফকির তাঁর উঠোনে একটি আমগাছ লাগান। সেই গাছে ফল আসার পর এলাকাবাসীরা আমটির অদ্ভুত মিষ্টতা ও গন্ধে মুগ্ধ হয়। কারণ ওই ফকিরকে সবাই বলত 'ল্যাংড়া বাবা', তাই আমটির নাম হয়ে যায় 'ল্যাংড়া'।

কেসর আম: সোনালি রঙে নবাবের মুগ্ধতা
গুজরাটের গিরনার পাহাড় অঞ্চলে জন্মানো এই আমটির শাঁস ছিল ঘন ও জাফরান রঙের। ১৯৩১ সালে জুনাগড়ের নবাব এই আম খেয়ে এতটাই মুগ্ধ হন যে, নাম দেন 'কেসর', অর্থাৎ জাফরান, যার সঙ্গে মিল ছিল আমের রঙের।

মালদা আম: বাংলার আম-রাজত্বের নামধারী
পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলা বিখ্যাত তার বিভিন্ন আমের জাতের জন্য। তাই একে 'আমের শহর' বলা হয়। এই অঞ্চলে উৎপন্ন আমগুলিকে সম্মিলিতভাবে বলা হয় 'মালদা আম'। ব্রিটিশ আমল থেকে মুঘল দরবার পর্যন্ত মালদার আম ছিল জনপ্রিয়।

Advertisement

আলফোনসো আম: পর্তুগিজদের উপহার
ভারতে পর্তুগিজ শাসক আলফোনসো ডি আলবুকার্ক-এর নামে এই আমের নামকরণ। ষোড়শ শতকে পর্তুগিজরা যে বিশেষ জাতের আম কলম করে তৈরি করে, তার ফল হয় অতি রসালো ও মিষ্টি। বর্তমানে এটি মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে চাষ হয়, স্থানীয়ভাবে একে 'হাপুস' বলা হয়।

সিঁদুরি আম: রঙেই ফুটে ওঠে নাম
এই আম পাকলে এর রঙ হয় সিঁদুরের মতো হালকা লাল-কমলা। সেই রঙ থেকেই এসেছে নাম 'সিঁদুরি'। এটি উত্তর ভারত, বিশেষত বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পূর্ব উত্তরপ্রদেশে চাষ হয়।

বাগনাপল্লি আম: রাজা-নবাবদের প্রিয় আম
অন্ধ্রপ্রদেশের বাগনাপল্লি শহর থেকেই এই আমের উৎপত্তি। স্থানীয় রাজা ও নবাবদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই জাতের আম জনপ্রিয়তা পায়। অনেক জায়গায় একে 'সফেদা আম' বলেও চেনে।

 

POST A COMMENT
Advertisement