Important Fish Species Of Ganga Declined: সম্প্রতি ICAR-সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (CIFRI)-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, গঙ্গায় একাধিক বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের প্রজাতির অস্বাভাবিক ভাবে হ্রাস পেয়েছে। এই CIFRI একটি স্বশাসিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান যা কেন্দ্র সরকারের ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের অধীনে অভ্যন্তরীণ মৎস্য ব্যবস্থাপনা এবং বৃদ্ধির জন্য নানা কাজ করে চলেছে। কেন্দ্র সরকারের অধিনস্ত এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট দেশের মাছের জোগানের অন্যতম একটি উৎসয় (গঙ্গায়) বড়সড় ঘাটতির অশনি সংকেত দিচ্ছে।
ICAR-CIFRI রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ৫০ বছরে গঙ্গাতে মাছ কমছে ব্যাপক হারে! গঙ্গায় প্রাকৃতিক ডিম পোনা (মাছের ডিম) মারাত্মকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, আগে যেখানে প্রায় ৩০০০ এমএল মাছের ডিম পাওয়া যেত, বর্তমানে সেখানে মাত্র ২১ এমএল ডিম পোনা মিলছে! এর ফলে, গঙ্গার উপর নির্ভরশীল দেশের লক্ষাধিক মৎস্যজীবী আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়ছেন। বিপর্যস্ত হচ্ছে জলজ বাস্তুতন্ত্রও।
কেন গঙ্গায় কমছে মাছের জোগান?
গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী, গঙ্গায় রাসায়নিক বর্জ্য ফেলা, জলদূষণ, যথেচ্ছভাবে মাছ ধরা, বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ দিয়ে নদীর স্বাভাবিক স্রোতে বাধার সৃষ্টির মতো একাধিক কারণে গঙ্গায় মাছের সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। ICAR-CIFRI রিপোর্ট বলছে, গঙ্গায় মারাত্মকভাবে কমছে রুই, কাতলা, মৃগেলের মতো অতি পরিচিত মাছের সংখ্যাও। গঙ্গাবক্ষে প্রাকৃতিক ভাবে মেলা মাছের ডিমের (ডিম পোনা) পরিমাণ অস্বাভাবিক ভাবে হ্রাসের যে প্রমাণ মিলেছে তা থেকেই নদীতে মাছের জোগানের বড়সড় ঘাটতির ছবিটা স্পষ্ট ধরা পড়েছে।
৫০ বছরে গঙ্গায় কতটা কমছে মাছের জোগান?
সমীক্ষা দেখা গেছে যে, ১৯৬৪ সালে গঙ্গায় যেখানে ২,৯৮৪ এমএল প্রাকৃতিক মাছের ডিম (ডিম পোনা) পাওয়া যেত সেখানে ২০০৭ সালে তা কমে মাত্র ২৭ এমএলে দাঁড়ায়। ২০১৮-এর শেষ সমীক্ষায় এই পরিমাণ আরও কমে মাত্র ২১ এমএলে নেমে এসেছে! এই ঘটনাকে গঙ্গার বাস্তুতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন গবেষকরা। গঙ্গায় মাছের জোগান মারাত্মকভাবে হ্রাস পাওয়ার ফলে দেশের লক্ষাধিক মৎস্যজীবী চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্প
সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিশারি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (CIFRI)-এর তরফে জানানো হয়েছে, গঙ্গায় মাছের জোগান বাড়াতে গত কয়েক বছরে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্প। ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও বাংলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৮৪ লক্ষ রুই, কাতলা, মৃগেলের চারা ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছরেই ২২ লক্ষ মাছের চারা ছাড়া হয়েছে গঙ্গায়। এই উদ্যোগের জেরে গঙ্গায় মাছের জোগান বাড়বে এবং নদীর বাস্তুতন্ত্র অনেকটাই স্বাভাবিক হবে বলে আশা গবেষকদের।