দিন কয়েকে সোনার দাম কয়েকগুণ কমেছে। তবে এই খুশি বেশিদিনের নয়। আবারও সোনার দাম বাড়বে বলে মনে করছে স্বর্ণ বিশেষজ্ঞ মহল। চলতি বছরেই এক লাখের গণ্ডি ছুঁতে চলেছে এমনটাই খবর। গোল্ডম্যান স্যাকস-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সোনার দাম ২০২৫-এই নতুন রেকর্ড তৈরি করতে পারে। সাম্প্রতিক কালে সোনার দাম এতই কমেছে যে বিনিয়োগের একটি চমৎকার সুযোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোনার দাম ১ লক্ষ ছোঁবে
বিশ্ববিখ্যাত বিনিয়োগ সংস্থা গোল্ডম্যান শ্যাক্স ২০২৫-কে সোনার জন্য একটি ঐতিহাসিক বছর হিসাবে বর্ণনা করেছে এবং ভবিষ্যদ্বাণী করেছে ২০২৫ সোনার দাম একটি নতুন উচ্চতা ছুঁতে পারে। ২০২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সোনা প্রতি আউন্সে ৩ হাজার ডলারে পৌঁছবে। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম আউন্স প্রতি ৩ হাজার ডলারে পৌঁছলে ভারতের বাজারে সোনার দাম ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
ভারতের বাজারে সোনার অবস্থা
বর্তমানে ভারতের বাজারে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ১০ গ্রাম প্রতি ৭৭ হাজার টাকা হলেও মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে সোনার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার টাকার উপরে। ভারতের বাজারে সর্বকালের সর্বোচ্চ দামের তুলনায় সোনার দাম কিছুটা কম হয়েছে। তবে আন্দাজ করা হচ্ছে আগামী বছর সোনার দাম এক লক্ষ টাকায় পৌঁছতে পারে।
এর জন্য গোল্ডম্যান শ্যাক্সের উদ্ধৃত প্রধান কারণগুলির মধ্যে রয়েছে: বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ক্রয়, যারা তাদের সোনার রিজার্ভ বাড়াতে সোনা কিনছে। এর মধ্যে বিপুল পরিমাণ মার্কিন ট্রেজারি বন্ড ধারণকারী ব্যাঙ্কগুলি ক্রয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোও সোনাকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে, কারণ ফেডারেল রিজার্ভের সহজ মুদ্রানীতি ডলারকে দুর্বল করবে, যা সোনার চাহিদা বাড়াবে। এ ছাড়া এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ডে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও সোনার দামকে সমর্থন করেছে।
সোনার চমক আগামী বছরও অব্যাহত থাকবে
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সোনার জন্য উপকারী প্রমাণিত হতে পারে, কারণ ট্রাম্পের আগমনের পরে, বাণিজ্য বাড়বে, সোনায় বিনিয়োগ একটি নিরাপদ বিকল্প হিসাবে তৈরি হবে। এর বাইরে আমেরিকার আর্থিক সংকট, ক্রমবর্ধমান ঋণ এবং বাজেট ঘাটতির উদ্বেগের কারণে সোনার চাহিদা আরও বাড়তে পারে। সোনার পাশাপাশি, গোল্ডম্যান শ্যাস ২০২৫ ব্রেন্ট ক্রুডের দামের ভবিষ্যদ্বাণী করেছে, যা অনুযায়ী অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৭০ ডলার থেকে পরের বছর ব্যারেল প্রতি ৮৫ ব্যারেলের মধ্যে হতে পারে।
এর অর্থ হল আগামী বছরও ভারতের মতো অপরিশোধিত আমদানির উপর নির্ভরশীল দেশগুলিকে মুদ্রাস্ফীতির চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে গবেষণা সংস্থা বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে তেলের দাম বাড়তে পারে।
একই সময়ে, আমেরিকা ও ইজরায়েলের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক ইরানের তেল সরবরাহে ব্রেক ফেলতে পারে, যার অর্থ সুদের হার কম রাখা আগামী বছর নীতিনির্ধারকদের জন্য আবার চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে যা বৃদ্ধি কমিয়ে দিতে পারে।