২০২৫ সাল এখনও অর্ধেকও পেরোয়নি, তার মধ্যেই সোনা দিয়েছে চমকে দেওয়ার মতো রিটার্ন। বছরের প্রথম চার মাসেই সোনা প্রায় ২৫ শতাংশ লাভ দিয়েছে বিনিয়োগকারীদের, যা অন্য যেকোনো বিনিয়োগের থেকে অনেক বেশি। একদিকে শেয়ারবাজারের উত্থান-পতন আর অন্যদিকে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, এর মধ্যেই নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনার গুরুত্ব আরও বেড়েছে।
MCX-এ সর্বোচ্চ রেকর্ড, ১০ গ্রামে দাম প্রায় ৯৬,০০০
মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ (MCX)-এ সোনার দাম সম্প্রতি সর্বোচ্চ ছুঁয়েছে। ৫ জুন মেয়াদোত্তীর্ণ সোনার দর দাঁড়ায় প্রতি ১০ গ্রামে ৯৫,৯৩৫। এপ্রিল মাসেই শুধু সোনার দাম বেড়েছে প্রায় ৫,০০০। বছরের শুরুতে যেখানে প্রতি ১০ গ্রামে দাম ছিল ৭৮,০০০, এখন তা এক লাফে ৯৬,০০০-র কাছাকাছি।
দিল্লি বাজারে ১০ গ্রাম সোনা ৯৮,০০০ ছাড়িয়েছে
রাজধানী দিল্লির বাজারেও সোনার দাম পৌঁছেছে অভূতপূর্ব উচ্চতায়। ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ছাড়িয়েছে ৯৮,০০০, অর্থাৎ লক্ষ টাকার সীমানা ছোঁয়ার খুব কাছাকাছি। বিশ্লেষকদের মতে, এই গতি বজায় থাকলে, ১০ গ্রাম সোনার দাম শীঘ্রই ১,০০,০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
IBJA অনুসারে বিভিন্ন ক্যারেট অনুযায়ী সোনার বর্তমান দাম (১০ গ্রামে):
২৪ ক্যারেট (৯৯৯ বিশুদ্ধতা): ৯৪,৯১০
২২ ক্যারেট: ৯২,৬৩০
২০ ক্যারেট: ৮৪,৪৭০
১৮ ক্যারেট: ৭৬,৮৮০
উল্লেখ্য, এই দামগুলিতে GST এবং মেকিং চার্জ যুক্ত নয়। সোনার গয়না কিনলে বাড়তি চার্জ হিসেবে এগুলো যুক্ত হয়।
সোনার দাম বাড়ছে কেন?
বিশ্বজুড়ে নানা অনিশ্চয়তা, ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি, মার্কিন ডলারের দরপতন, এবং শেয়ারবাজারে অস্থিরতা— সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনাকে বেছে নিচ্ছেন। সেই কারণেই চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সোনার দাম আকাশছোঁয়া।
কীভাবে চিনবেন সোনার বিশুদ্ধতা?
সোনার বিশুদ্ধতা বোঝার জন্য "হলমার্কিং" গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ক্যারেটের জন্য নির্দিষ্ট চিহ্ন রয়েছে: ২৪ ক্যারেট: ৯৯৯, ২৩ ক্যারেট: ৯৫৮, ২২ ক্যারেট: ৯১৬, ২১ ক্যারেট: ৮৭৫, ১৮ ক্যারেট: ৭৫০
বর্তমানে যারা সোনায় বিনিয়োগ করেছেন, তারা লাভে থাকলেও, সাধারণ ক্রেতাদের জন্য এই দাম যথেষ্ট উদ্বেগের। গয়না কেনার পরিকল্পনা যাঁদের আছে, তাঁদের এখনই কিনে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছেন অনেক বিশেষজ্ঞ, কারণ আগামী দিনে সোনার দাম ১ লক্ষ টাকা পার করাও অসম্ভব নয়।