মেঘভাঙা প্রবল বৃষ্টিতে কার্যত জলের তলায় কলকাতা। এই সময়ে শুধু জলমগ্ন পথঘাটই নয়, বরং বাড়ে এক অদৃশ্য বিপদ, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি। খোলা তার, ভেজা সুইচ কিংবা বাড়ির বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে অসাবধানতার ফলেই ঘটতে পারে মারণ দুর্ঘটনা। তবে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকলে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিলে প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।
প্রাথমিক করণীয়
প্রথমেই নিজের সুরক্ষার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ব্যক্তিকে সরাসরি স্পর্শ করা বিপজ্জনক, বরং আগে বিদ্যুতের উৎস বন্ধ করতে হবে। সম্ভব হলে মেইন সুইচ অবিলম্বে অফ করতে হবে বা সকেট থেকে প্লাগ খুলে ফেলতে হবে। যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা সম্ভব না হয়, তবে শুকনো কাঠ, প্লাস্টিকের কাঠি বা শুকনো কাপড় ব্যবহার করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে উৎস থেকে দূরে সরাতে হবে। ধাতব বা ভেজা জিনিস ব্যবহার একেবারেই বারণ।
দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা
আক্রান্তকে উৎস থেকে আলাদা করার পরই জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। ত্বক পুড়ে গেলে ঠান্ডা জল ব্যবহার করতে হবে, তবে বরফ নয়। ক্ষতস্থানে ভেজা ব্যান্ডেজ লাগানো এবং পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা জরুরি। পোড়ার ফোসকা ফাটানো উচিত নয়। আক্রান্ত ব্যক্তি ঠান্ডা অনুভব করলে কম্বল দিয়ে ঢেকে উষ্ণ রাখতে হবে।
শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে দ্রুত কৃত্রিমভাবে শ্বাস চালু করার চেষ্টা করতে হবে, কারণ পরিসংখ্যান বলছে, তিন মিনিটের মধ্যেই এই ব্যবস্থা নিলে আক্রান্তের প্রাণ বাঁচানোর সম্ভাবনা অনেকগুণ বেড়ে যায়। শ্বাস স্বাভাবিক থাকলে তাঁকে চিৎ করে শুইয়ে কোমর থেকে পা উঁচুতে রাখতে হবে। প্রয়োজনে অল্প জল খাওয়ানো যেতে পারে, তবে শরীরে জল ঢালা যাবে না।
সতর্কতা মেনে চলুন
ক্ষতিগ্রস্ত তার বা আলগা প্লাগ থেকে দূরে থাকুন।
ভেজা হাতে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবেন না।
শিশুদের তার ও সকেট থেকে দূরে রাখুন।
জলের কাছে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন।