Post Office Best Scheme: টাকা জমানো এক জিনিস। আবার রোজগার করা টাকাকে সঠিকভাবে জমিয়ে ও সুরক্ষিতভাবে বাড়ানোটা আরও বড় চ্যালেঞ্জ। অনেকেই বলেন ‘স্যালারি কোথা থেকে শেষ হয়ে যায় বুঝতেও পারি না!’ আজকাল অধিকাংশ মধ্যবিত্তই এই সমস্যায় ভোগেন। অনেকে পরামর্শ দেন, হাতে টাকা এলেই শেয়ার কিনে রাখুন। কেউ আবার বলেন, সোনা কিনুন। কিন্তু শেয়ার বাজারে ঝুঁকি যথেষ্ট। অন্যদিকে সোনার কেনা, প্রয়োজনের সময়ে তা বিক্রি করা নিয়েও হাজারো দুশ্চিন্তা থাকে। আর শুধু ব্যাঙ্কে টাকা ফেলে রাখলে তেমন সুদ মেলে না। আর খরুচে হাত হলে তো কথাই নেই। UPI, কার্ডের ফাঁক গলে টাকা যে কোথায় খরচ হয়ে যাবে, মনেও থাকবে না। তবে কি টাকা সুরক্ষিতভাবে বাড়ানোর সত্যিই কোনও উপায় নেই?
আছে। একদম নিরাপদ এবং সরকারি। তার নাম কিষাণ বিকাশ পত্র (Kisan Vikas Patra, KVP)। কেন্দ্রীয় সরকারের স্কিম। এটি পোস্ট অফিসের অন্য়তম জনপ্রিয় সেভিংস স্কিম(post office savings scheme)। যে কেউ করতে পারেন। সহজেই টাকা জমিয়ে দ্বিগুণ করতে পারবেন। ভবিষ্যত সুরক্ষিত করার জন্য এই বিষয়ে ভেবে দেখতেই পারেন।
কিষাণ বিকাশ পত্র কী?(Kisan Vikas Patra)
নামে ‘কিষাণ’ থাকলেও, এই প্রকল্প শুধুমাত্র কৃষকদের জন্য নয়। ভারতের যেকোনও নাগরিক এতে লগ্নি করতে পারেন। পোস্ট অফিসে গিয়ে খোঁজ নিলেই হবে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এখানে আপনার টাকা ১০০% সুরক্ষিত। অর্থাৎ লগ্নির টাকা হারানোর কোনও ভয় নেই। অনামী, ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা কোনও সংস্থায় বিনিয়োগের থেকে অনেক ভাল।
কত দিনে টাকা দ্বিগুণ হয়?
বর্তমানে, ৭.৫% হারে সুদ মিলছে। বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ে। হিসাব অনুযায়ী টাকা ১১৫ মাসে, অর্থাৎ ৯ বছর ৭ মাসে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আপনার টাকা বাড়তে থাকবে। কোনও বাড়তি পরিশ্রম ছাড়াই।
ধরুন আপনার ৫ লক্ষ টাকা জমানো আছে। সেটা শুধু শুধু ফেলে রাখা বা, বাজে খরচের বদলে এভাবে কিষাণ বিকাশ পত্র করে রাখতে পারেন। পরে বাড়ি বা গাড়ি কেনা, ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ, বিয়ের খরচ, রিটায়ারমেন্ট ফান্ড হিসাবে এই টাকা কাজে লেগে যাবে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখন থেকেই পরিকল্পনা করতে শুরু করুন।
কারা করতে পারবেন?
১৮ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে যেকোনও ভারতীয় নাগরিক
বাবা-মা সন্তানের নামে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন
২ বা ৩ জন মিলে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন
কীভাবে করবেন?
খুব সহজ।
১. কাছাকাছির পোস্ট অফিসে যান
২. KVP ফর্ম নিয়ে ফিল আপ করুন
৩. KYC নথি (আধার, প্যান কার্ড) জমা দিন
4. টাকা জমা দিন
5. কিষাণ বিকাশ পত্রের সার্টিফিকেট নিয়ে নিন
সীমা
সর্বনিম্ন: ₹১,০০০
সর্বোচ্চ সীমা নেই: যত ইচ্ছা KVP সার্টিফিকেট কিনতে পারেন
আরও সুবিধা পাবেন
নমিনি: মৃত্যুর পরে কে টাকা পাবেন তা আগে থেকেই নমিনি করে রাখা যায়
ঋণ: এই সার্টিফিকেট ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে তার এগেনস্টে ঋণ নেওয়া যায়
ট্রান্সফারেবল: এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তিকে, অথবা এক পোস্ট অফিস থেকে অন্য পোস্ট অফিসে ট্রান্সফার করা যায়
অ্যাডভান্স উইথড্রয়াল: আপদকালীন পরিস্থিতিতে ২ বছর ৬ মাস পরে নির্দিষ্ট কিছু শর্তে টাকা তুলে নিতে পারবেন
ফলে, কিষাণ বিকাশ পত্র এখন সেরা বিনিয়োগগুলির মধ্যে অন্যতম। যাঁরা সুরক্ষিত এবং নিশ্চিত বিনিয়োগের অপশন খুঁজছেন, তাঁদের জন্য এটি আদর্শ।
দ্রষ্টব্য: শেয়ার, বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলি বাজার পর্যবেক্ষণ মাত্র। এগুলি বিনিয়োগের পরামর্শ নয়। বাজারে বিনিয়োগের আগে অবশ্যই পড়াশোনা করুন এবং বিশেষজ্ঞের সাহায্য গ্রহণ করুন।