কয়েক সপ্তাহ আগেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI) রেপো রেট ০.৫০ শতাংশ কমিয়েছে। এর ফলে রেপো রেট ৬ শতাংশ থেকে কমে ৫.৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ব্যাঙ্কিং সেক্টর নিয়ে একটু-আধটু যাঁরা খবর রাখেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই এটা জানা। কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পিছনে উদ্দেশ্য একটাই, দেশের অর্থনীতিতে গতি আনা। তার পাশাপাশি EMI আরও সস্তা করাও লক্ষ্য কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের। কারণ ঋণের ইএমআই যত কম হবে, মানুষ তত বেশি বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন।
কিন্তু, তার মানে এই নয় যে, আপনার EMI হঠাৎ করে কমে যাবে। এমনটাই জানালেন সিএ নীতিন কৌশিক। তাঁর মতে, সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে আপনার অজান্তেই কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত খরচ হয়ে যেতে পারে।
আপনি নিজে উদ্যোগ না নিলে EMI কমবে না
নীতিন কৌশিক বলছেন, অনেকে ভাবেন RBI রেপো রেট কমালে তাঁদের EMI এমনিতেই কমে যাবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই সঙ্গে সঙ্গে কোনও প্রভাব পড়ে না। তিনি বলেন, ঋণগ্রহীতাদের নিজে থেকেই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। নচেত লোন চলাকালীন বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।
কারা এই সুবিধা পাবেন?
যাঁদের ঋণ RLLR (Repo Linked Lending Rate) বা EBLR (External Benchmark Lending Rate) ভিত্তিক, তাঁরাই কেবল রেপো রেট কমার সুবিধা পাবেন। তবে আর্থিক বিশেষজ্ঞ এটাও জানালেন যে, সবসময় আপনাআপনিই EMI না-ও কমতে পারে। ফলে আপনাকেই নিজে থেকে ব্যাঙ্কে গিয়ে যোগাযোগ করে এই সুবিধা নিতে হবে।
৯০ দিন সময়
অনেক সময় গ্রাহকরা রেপো রেট কমার তথ্য সময়মতো জানতে পারেন না। ফলে তাঁরা বুঝতেই পারেন না যে তাঁদের EMI কমা উচিত। নীতিন কৌশিকের মতে, রেপো রেট কমার পর ৯০ দিনের সময়সীমা থাকে। এই সময়ের মধ্যে আবেদন না করলে ভবিষ্যতে বেশি EMI গুনতে হতে পারে।
কী করবেন?
প্রথমেই দেখে নিন আপনার লোন RLLR বা EBLR বেসড কি না। যদি পুরনো MCLR বা অন্য সিস্টেমে হয়ে থাকে, তা হলে লোন ট্রান্সফার বা সিস্টেম পরিবর্তনের কথাও বিবেচনা করতে পারেন।
এর জন্য ২ থেকে ৫ হাজার টাকা ফি লাগতে পারে। কয়েক মাসের মধ্যেই সেই টাকা উঠে আসবে।
নিজের লোনের রিসেট ডেট চেক করুন। EMI সেই অনুযায়ী কমছে কি না তা হিসেব করে দেখুন।
RBI-তে কীভাবে অভিযোগ জানাবেন?
RBI-এর সংশোধিত ২০১৯ নির্দেশিকা (২০২৪ সংস্করণ) অনুযায়ী, যদি আপনার সুদের হার কমে, তা হলে ব্যাঙ্ককে সে বিষয়ে ইমেল করে জানানো উচিত। যদি ব্যাঙ্ক কোনও উদ্যোগ না নেয়, সেক্ষেত্রে RBI-এর গ্রিভান্স রেড্রেসাল সিস্টেমে অভিযোগ জানাতে পারেন।
সিএ নীতিন কৌশিকের মতে, শুধু ব্যাঙ্ক বলছে না বলেই বেশি EMI দিতে থাকবেন না। দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে রেপো রেট কমার সুবিধাটা কাজে লাগান। আর সেটা করলেই ঋণ মেয়াদের মধ্যেই কয়েক লক্ষ টাকা বাঁচিয়ে নিতে পারবেন।