গত এক বছরে বাড়তি করের বোঝায় এক ধাক্কায় ৩০-৪০ শতাংশ দাম বেড়েছিল মদের(wine)। ফলে যাঁরা নিয়মিত গলা ভেজাতে পছন্দ করেন,অথবা চুর হয়ে যেতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য এ ছিল এক বিশাল ধাক্কা। কেউ কেউ পছন্দের ব্র্যান্ড-এর সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করে সস্তার ব্র্যান্ডে চলে গিয়েছিলেন। কেউ কেউ বিদেশি(Foreign liquor) ছেড়ে দেশি(Country Liquor)র পথে হাঁটাটাকেই শ্রেয় বলে মনে করছিলেন। আবার কেউ মনের দুঃখে মদ খাওয়াও ছেড়ে দিয়েছিলেন। মোট কথা মদের শোকে বিবাগী হওয়া মানুষের সংখ্যাটা এ রাজ্য়ে কম ছিল না।
দুঃখের দিন শেষ হতে চলেছে সুরাপায়ীদের
তবে এবার হয়ত তাঁদের শোকের দিন শেষ হতে চলেছে। রাজ্য সরকার সুরাপ্রেমীদের অন্তরের আর্জি শুনে ফেলেছেন। তাঁদের জন্য সুখবর ! কারণ রাজ্য সরকার সেপ্টেম্বর থেকেই কমাতে পারে মদের দাম। মোটামুটি সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই লক্ষ্যেই মদের উপর চাপানো অতিরিক্ত কর প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে অর্থদপ্তরে সেই নয়া কর কাঠামোর খসড়া জমা করে দিয়েছে আবগারি দপ্তর। এমনটাই খবর মিলেছে।
মদের দাম বাড়ায় শুরু হয়েছে অবৈধ কারবার
করোনা আবহে (Covid) এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়েছে মদের দাম। বিশেষ করে বিদেশি মদের দাম এতটাই বেড়েছে, যাতে অনেক সুরাপ্রেমী হতাশ। তাই তাঁরা বিমুখ হয়েছেন মদে। কমেছে মদের বিক্রিও। এতে রাজস্ব আদায় যেমন কিছুটা কমেছে, পাশাপাশি, অন্যান্য রাজ্য থেকে চোরাপথে বাংলায় মদ ঢুকতে শুরু করে। এমনকী জাল ও সস্তার অবৈধ মদও বাজারে ছড়াতে শুরু করে। ফলে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার আগে দাম কমানোই শ্রেয় বলে মনে করছেন।
দামের বল এখন অর্থদপ্তরের কোর্টে
তাই অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে এবার মদের দাম কমানোর পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, আবগারি দপ্তর মদের উপরে নতুন করের কাঠামো তৈরি করে অর্থদপ্তরের কাছে পাঠিয়েছে। যদি অর্থদপ্তর নতুন কর কাঠামোকে ছাড় দেয়, তবেই কমে যাবে মদের দাম। তাহলে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই মদের দাম কমে যাবে বলে মনে করছেন দপ্তরের আধিকারিকরা।
বিদেশী সস্তা হচ্ছে, দেশি হচ্ছে দামী
নতুন কাঠামোয় কি ধরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ? নতুন প্রস্তাবে বিদেশি মদের দাম কমানোর কথা বলা হয়েছে। নতুন কর পরিকাঠামো গ্রহণ করলে ভদকা, রাম, হুইস্কি, স্কচের দাম কমানো হবে। তবে বেশ খানিকটা বাড়তে পারে দেশি মদের দাম। প্রায় ১০০ টাকা বাড়তে পারে দেশি মদের দাম। তবে কতটা কমবে তা এখনও স্থির সিদ্ধান্ত হয়নি। তবু কমবে, এটুকু শুনেই ফুর্তি শুরু করেছেন মদ্যপায়ীরা।
মদ্যপানে এগিয়ে বাংলা
সুরাপান নিয়ে গোটা দেশে যৌথসমীক্ষা চালায় ICRIER এবং আইনি পরামর্শদাতা সংস্থা পিএলআর চেম্বার্স। সমীক্ষায় দেখা যায় মদ্যপানে দেশে প্রথমে উত্তরপ্রদেশর পরই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলা। এ রাজ্যের প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ সুরা পান করেন। তাই এ বিভাগ থেকে আসে প্রচুর রাজস্বও। সমীক্ষার ফল বলছে, মদ এ রাজ্যে শীর্ষ তিনটি কর বাবদ আদায়ের অন্যতম একটি। তবে সম্প্রতি মদের দামের মডেল পরিবর্তন করা হয়। যার জেরে ইন্ডিয়ান মেড ফরেন লিকারের দাম পরিবর্তন হয়েছে। তার জেরে বেশ কিছুটা কমেছে বিদেশি মদের বিক্রি। তবু সুরাপান বিরতি নেই এ রাজ্যে।