কোভিড ১৯ ভাইরাস প্রাণ কেড়েছিল লক্ষ লক্ষ মানুষের। এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে লকডাউনের পথে হাঁটতে হয়েছিল বিশ্বের প্রায় সব দেশকে। সেই ক্ষত এখনও দগদগে। তারই মধ্যে চোখ রাঙাচ্ছে আরও একটি ভাইরাস। যার নাম হিউম্যান মেটানিউরো ভাইরাস বা HMPV। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এর উৎসস্থল চিন। সেই দেশে নাকি ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে।
চিন থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের খবর সামনে আসার পর বিশ্বের নানা দেশ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। ব্যতিক্রম নয় ভারতও। বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে আট মাস ও তিন মাসের দুই শিশুর শরীরে এই ভাইরাসের নমুনা মিলেছে। স্বাস্থ্য দফতর যদিও জানিয়েছে, চিনে হদিশ মেলা এই ভাইরাসের সঙ্গে ভারতে পাওয়া ভাইরাসের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কারণ, চিকিৎসকদের মতে, এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সবথেকে বেশি সম্ভাবনা শিশুদেরই। বয়স্করাও আক্রান্ত হতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা এও দাবি করছেন, শীতের সময় HMPV-র সংক্রমণ বেশি হতে পারে। কারণ, এই সময় জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা বেশি হয়।
কোভিড-১৯ এবং HMPV-র কতটা মিল? করোনা ভাইরাস বা COVID-19 হল SARS-CoV-2 ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ। এই HMPV এবং SARS-CoV-2 ভাইরাস প্রায় একই রকমের। উদাহরণস্বরূপ, এইচএমপিভির কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও তাই হয়। এই দুটি ভাইরাসই শিশু, বয়স্কদের আক্রান্ত করে। যাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারাও এতে আক্রান্ত হয়।
COVID-19 এবং HMPV-এর উপসর্গ প্রায় একই রকম
HMPV-এর সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে কাশি, জ্বর, নাক বন্ধ হওয়া এবং শ্বাসকষ্ট। কোভিড -19-এ সংক্রামিত ব্যক্তিদের লক্ষণও প্রায় একই রকম ছিল। এই দুই ভাইরাসই সংক্রামিত ব্যক্তির কাশি, হাঁচি থেকে ছড়াতে পারে। বছরের যে কোনও সময় HMPV সংক্রমিত হতে পারে। তবে শীত ও বসন্তের সময় আমেরিকায় এর কেস সর্বোচ্চ।
ভারতের জন্য কতটা বিপদ?
ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের ডিরেক্টর ডাঃ অতুল গোয়েল জানান, এই ভাইরাসের কারণে ভারতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে সাধারণ মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ডাঃ অতুল আরও বলেন, 'আমরা দেশে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের তথ্য বিশ্লেষণ করেছি। ২০২৪ সালের পরিসংখ্যানে এত বড় কোনও বৃদ্ধি নেই। শীতকালে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে। সেজন্য হাসপাতাগুলোকে প্রস্তুত থাকতে হয়।'