Hooghly: টানা কয়েক ঘণ্টার রোমহর্ষক পর্ব। ঘুম ভাঙাতে ভাঙতে হল দরজা! যিনি ঘুমিয়ে পরিছেন, তাঁর কোনও তাপ উত্তাপ নেই। শনিবার দুপুরের দিকে ঘুমিয়ে পরেছিলেন তিনি। আর রবিবার সকালে অনেক কষ্ট করেও তাকে ডেকে তোলা যায়নি। ফলে ভাঙতে হয় তালা।
কলিযুগের এক কুম্ভকর্ণর হদিশ মিলল হুগলির চুঁচুড়ায়। নাম সৌমেন নিয়োগী। তিনি চুঁচুড়ার বড়বাজারে একটি আবাসনের তিনতলায় থাকেন। বছর ৪২-এর সৌমেনবাবু ভারতীয় রেলের শিয়ালদহ শাখায় লোকো পাইলট হিসাবে কর্মরত।
সৌমেনবাবু স্ত্রী বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষে বর্ধমানের মেমারিতে বাপের বাড়িতে গিয়েছেন। সৌমেনবাবু একাই ছিলেন বাড়িতে।
আবাসন সূত্রে খবর, এদিন সকাল ৯টা নাগাদ স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথাও হয় সৌমেনবাবুর। যদিও এদিন ঘর থেকে তাঁকে বের হতে দেখা যায়নি।
সৌমেনবাবুর স্ত্রী ওই আবাসনেরই আর এক আবাসিক মনোজিৎ দত্তকে ফোন করে স্বামীকে ডাকতে বলেন। কিন্তু মনোজিৎবাবু সৌমেনবাবুকে বহু ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি।
তিনি ঘরের দরজা ভেঙে দিতে বলেন এবং বিপদের আশঙ্কা করে বিয়ে বাড়ি থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে চুঁচুড়ার দিকে রওনা দেন। মনোজিৎবাবুর দৌলতেই খবর যায় চুঁচুড়া থানায়। চুঁচুড়া থানার পুলিশ এসে পৌঁছয়। পুলিশ কর্মীরাও ডাকাডাকি করে সাড়া পাননি।
এরপর পুলিশ লোক ডেকে মিস্ত্রি ডেকে আনেন। মিস্ত্রির ছেনি হাঁতুড়ির ঘায়ে কোলাপসিবল গেটের তালা ভাঙা হয়।
সমাপ্ত হয় নাটকের। বাইরে টানা কয়েকঘন্টা ধরে যে সাসপেন্স চলছিল তিনি তা কিছুই জানেন না। তবে এ কোন ঘুম?
ঘুম! ঘুম নিয়ে গবেষণা নতুন নয়। বই ঘাটলে দেখা যাবে দীর্ঘদিন থেকেই হয় তো ঘুম নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে আধুনিক বিজ্ঞানের কথায় ঘুম হল একটি জৈবিক বিষয়।
যা প্রাণীকুলের কাছে অত্যন্ত স্বাভাবিক। মানুষ সারা জীবনের প্রায় ৩৫% সময় ঘুমেই কাটিয়ে দেন। অর্থাৎ কেউ যদি ৬০বছর বাঁচে তবে হিসেব কষলে দেখা যাবে তিনি জীবনের সাড়ে ২১বছর ঘুমিয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ঘুম যদি হয় অবিরাম।
কোনও ভাবেই যদি ঘুম না ভাঙে। অর্থাৎ কুম্ভকর্ণ। হিন্দুপুরাণ রামায়ণে কুম্ভকর্ণকে রক্ষকুলের সাথে তুলনা করা হয়েছে। তিনি ছিলেন রাবণের মধ্যম ভ্রাতা। কুম্ভকর্ণ তাঁর ভ্রাতাদ্বয় রাবণ ও বিভীষণের সহিত এক মহাযজ্ঞে অংশগ্রহণ করে তারা প্রজাপতি ব্রহ্মাকে তুষ্ট করতে সফল হন।