আমেরিকার এক ব্যক্তি নিজের পুরুষাঙ্গে কোকেন ইঞ্জেকশন নেন। কেন তা করেন সে সম্পর্কে কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। তবে এর পরে যা হয়েছিল, তা শুনে যে কেউ শিউরে উঠবেন। এই রোগীর চিকিৎসা করা চিকিৎসক আমেরিকান জার্নাল অফ কেস রিপোর্টে এই অদ্ভুত ঘটনার রিপোর্টটি প্রকাশ করেন। জেনে নেওয়া যাক ঠিক কী ঘটেছিল এই চমকপ্রদ ও ভীতিকর ঘটনায়। (ছবি: গেটি)
৩৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি তিন দিন ধরে নিজের লিঙ্গ ও তার আশেপাশের অঙ্গে অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। ব্যথা এতটাই ছিল যে তাঁর ডান অণ্ডকোষ ও ডান পা-ও ফুলে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা যখন দেখেন, তারা অবাক হন। রোগীর যৌনাঙ্গ ফুলেও গিয়েছিল। তাঁর পুরুষাঙ্গের টিস্যুতেও পচন ধরেছিল। প্রস্রাব এবং বীর্যের নলের চারপাশে ফোস্কা পরে গিয়েছিল। এমনকি সেখান থেকেও বিকট দুর্গন্ধ আসছিল। (ছবি: গেটি)
চিকিৎসকরা প্রথমে ভেবেছিলেন গ্যাংগ্রিন হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকরা কিছুই ধরতে পারছিলেন না। চিকিৎসকরা ভেবেছিলেন যৌন সংক্রমণ। এই ঘটনায় চিকিৎসকদের গোটা টিম উঠে পড়ে লাগে রোগটির সন্ধান করতে। রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিকও দেওয়া হয়েছিল, যাতে তাঁর লিঙ্গের তৈরি ক্ষত সেরে যায়। সাধারণত এই ধরনের ক্ষেত্রে অঙ্গ কেটে ফেলতে হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক উপায়ে তাঁকে বাঁচান চিকিৎসকরা। (ছবি: গেটি)
চিকিৎসার সময় দেখা যায়, রোগী বহু বছর ধরে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে নেশা চালিয়ে যেতেন। তাঁর শরীরে ইঞ্জেকশন দেওয়ার কারণে অনেক জায়গায় ক্ষত তৈরি হয়েছে। তাই তিনি শরীরের নতুন জায়গায় ইঞ্জেকশন নেন। কারণ, যৌনাঙ্গ ছাড়া আর কোনও অংশ খালি ছিল না। সে জন্য পুরুষাঙ্গের ডোরসাল ভেনে কোকেনের ইঞ্জেকশন নিয়ে নেন। (ছবি: গেটি)
দু-তিনটে চিকিৎসা করার পর চিকিৎসকেরা রোগীকে জানান, যে অংশটা পচে যাচ্ছে সেটা কেটে ফেলতে হবে। অন্যথায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে। রোগী এতে রাজি হননি। এরপর চিকিৎসকরা তাঁকে দীর্ঘ চিকিৎসার প্রক্রিয়া জানান। ১৫ দিন ধরে রোগী হাসপাতালেই ছিলেন। (ছবি: গেটি)
২ সপ্তাহে দু'বার এই কাজটি করেছিলেন। কিন্তু যখনই তৃতীয়বার ইঞ্জেকশন নেন, তখনই তার প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রোগী কোকেন ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য যে পুরুষাঙ্গের শিরা বেছে নিয়েছিলেন, সেটি সংক্রমিত হলে কেটে ফেলতে হবে। নেক্রোসিস এবং গ্যাংগ্রিন হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। চিকিৎসকদের বক্তব্য, সরকারের উচিত মাদক সেবনকারীদের নোটিশ জারি করা যে, তারা যেন শরীরের কোনও অংশে কোকেন না দেয়। মাদক সেবনকে বন্ধ করা। (ছবি: গেটি)
প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ধরা পড়া সমস্ত মাদকের ৮০শতাংশ মানুষ কোকেন সেবনে ধরা পড়ে। এটি একটি পরজীবী কৃমি নাশক ওষুধ লেভামিসোল দিয়ে পাচার করা হয়। কোকেন এবং এই ড্রাগটি একসঙ্গে গ্রহণ করে, যাতে তারা আরও নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু তারা জানেন না যে এই দুটির মিশ্রণ শরীরের যে কোনও জায়গায় নেক্রোসিস হতে পারে। নেক্রোসিস মানে টিস্যুর ক্ষয়। (ছবি: গেটি)
জানা যায়, কোকেন গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা পর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় চিকিৎসকরা রোগীর প্রস্রাব পরীক্ষা করেননি। ব্যক্তি যদি আগে আসতেন তাহলে জানা যেত সূঁচ দিয়ে রোগীর শরীরে কী পরিমাণ ড্রাগস ঢুকেছে। শরীরের কোথাও ড্রাগস ইঞ্জেকশন দেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয় বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এও জানিয়েছেন, শরীরের এমন অংশে প্রয়োগ করা উচিত নয়... কারণ এটি ভারী ক্ষতির কারণ হতে পারে। (ছবি: গেটি)