একটি কোম্পানিতে কাজ করতেন এক মহিলা। এর মধ্যেই তার এক বছরের মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাতে একে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। তিনি মেয়ে দেখাশোনার জন্য অফিস থেকে বসের কাছে ছুটে চেয়েছিলেন। কিন্তু ছুটি দিতে রাজি হননি বস। মহিলা চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে দেন। সেই মহিলা এখন বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করেন। কীভাবে সম্ভব হলো এই আশ্চর্য রূপান্তর, তা না জানলে একটা অধ্যায় অজানাই থেকে যাবে।
মেয়েকে দেখভালই মুখ্য ছিল
ওই মহিলা নিজের অসুস্থ মেয়ের দেখভালের জন্য বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করতেন এবং সেখান থেকে ছুটি চান। ছুটি না পেয়ে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হতে হয়। কারণ বিকল্প কোনও বন্দোবস্ত তাদের ছিল না। এরপর তাঁর পক্ষে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়ে।
বন্ধুদের পরামর্শে বদলে যায় জীবন
কিন্তু তিনি চাকরি না খুঁজে তার বন্ধুদের পরামর্শে অনলাইন বিজনেস শুরু করেন। শুরুতে অনেক রকম বাধা বিপত্তি এবং প্রতিবন্ধকতা সামনে পড়তে হয়। কিন্তু এখন তিনি প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা আয় করছেন। কীভাবে কিসের ব্যবসা করে এভাবে কোটিপতি হলেন, আসুন জেনে নেওয়া যাক।
মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাতে হতো
মিরর ইউকের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ব্রিটেনের নর্দাম্পটন এর ৩৩ বছর বয়সী ওমোটায়ো আদিবেসি একটি ইউটিলিটি কোম্পানির জন্য কাজ করতেন। কিন্তু তার মাঝখানে তার মেয়ের অসুস্থতার কারণে তাকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হতে হয়। কারণ তাঁকে মেয়ের সঙ্গে সারাক্ষণ হাসপাতালে থাকতে হতো।
আর্থিক পরিস্থিতি ভাল ছিল না
বাধ্য হয়ে চাকরিতে হলেও তাকে বিকল্প রোজগারের জন্য দ্রুত বন্দোবস্ত করার দিকে নামতে হয়। কারণ তাদের আর্থিক পরিস্থিতি ভাল ছিল না। তিনি কিছুদিনের মধ্যে দ্বিতীয় চাকরির দরকার বলে মনে করলেন। এরই মধ্যে তাঁর বন্ধুরা তাকে একটি প্রস্তাব দেন। নিজের অনলাইন বিজনেস শুরু করতে। এই আইডিয়াই তার জীবন বদলে দিয়েছে। দুটি বাচ্চার মা ওমোটায়ো আদিবেসি tilzmart.com লঞ্চ করেন। জন্মদিনের খেলনা, গিফট হ্যাম্পার এবং ফিটনেস আইটেমের সঙ্গে ওয়ান স্টপ শপের রূপে পোর্টাল করেন।
২০১৭ সালে শুরু করেন কোম্পানি
আদিবেসি ২০১৭ সালে নিজের কোম্পানি শুরু করেন। তার নিজের জমা চার লক্ষ টাকা দিয়ে তিনি জিনিসপত্র কিনে এনে অনলাইনে বিক্রি করতেন। আদিবেসি জানান, এই কাজ শুরুতে আমার স্বামী আমাকে সহযোগিতা করেছে। ঘরেই জিনিসপত্র প্যাকিং, লেভেলিং করা একসঙ্গে করতেন। বিজনেসে তার প্রথমে লক্ষাধিক টাকা লোকসান সহ্য করতে হয় এদের। তবে দম্পতি নিজেদের উপর আস্থা হারাননি এবং ভুলগুলো শুধরে নিয়ে তারপর সেগুলিকে সরিয়ে রেখে ধীরে ধীরে ব্যবসার ঘাঁৎঘোৎগুলি শিখতে শুরু করেন।
আমাজনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে চমৎকার
এরপর ২০১৯ সালে AMAZON পেজের সাথে নিজেদের ওয়েবসাইট যুক্ত করেন। এখন তাঁদের সাইন অনলাইনে বিভিন্ন গিফট আইটেমের অগ্রণী শপিং পোর্টাল। ওয়েবসাইটের ৯০০ টাকার হট চকলেট থেকে গিফট সেট কিংবা হাজার টাকার গার্ডেন ফার্নিচার এবং আউটডোর হিটার পর্যন্ত সব কিছু বিক্রি করে তাঁদের কাছে ৭০ থেকে বেশি কোম্পানির ব্র্যান্ড রয়েছে। বাৎসরিক আয় ১৪ কোটি টাকার বেশি। আপাতত তাঁদের কাছে পঁচিশটি পার্টটাইম এবং এবং ফুলটাইম কর্মচারী রয়েছে। আদিবেসি বিজনেসকে আরও বাড়াতে চান। এ কারণে তিনি আর্থিক সহযোগিতা চাইছেন।