হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে জগন্নাথ দেব এবং পুরীর আলাদা একটা মাহাত্ম্য আছে। রথ যাত্রা বিশাল করে পালিত হয় ওড়িশায়। প্রচুর ভক্তের ভিড় হয় সেখানে। এই ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য পুরীর মন্দির কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি একটা নির্দেশিকাও জারি করেছে। যেখানে এখন আলাদা আলাদা লাইন করা হয়েছে মহিলা পুরুষ সবার জন্য। আর এবার সেই জগন্নাথ দেবকে নিয়ে হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত দিলেন এক বিদেশিনী। নেপথ্যে রয়েছে একটা ট্যাটু।
এক বিদেশি মহিলা নিজের উরুতে জগন্নাথ দেবের একটি ট্যাটু করিয়েছেন। যাকে কেন্দ্র করে ওড়িশায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভক্তরা তাঁদের শ্রদ্ধেয় দেবতার প্রতি এই ব্যবহারকে অসম্মানজনক বলে মনে করছেন। ভুবনেশ্বরের একটি স্থানীয় ট্যাটু পার্লারে ওই মহিলা এই ট্যাটু করিয়েছেন। তবে ওই মহিলার পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তিনি ট্যাটুটি প্রদর্শন করতে বিতর্ক শুরু হয়। আসলে কেউ নিজের ইচ্ছা মতো ফ্যাশান করতেই পারেন। কিন্তু কারও ভাবাবেগে সেই নিয়ে আঘাত দেওয়া ঠিক নয়। জগন্নাথ দেব ভক্তদের কাছে পরম শ্রদ্ধার। সেই শ্রদ্ধার সঙ্গে রীতিমতো ছিনিমিনি খেলা করেছেন ওই বিদেশিনী। হতেই পারে তিনি বিদেশি। তিনি হয়তো হিন্দু সনাতন ধর্ম বোঝেন না। কিন্তু আপনি যদি একটা বিষয় না জানেন, তাহলে আগে জেনে নিন। তারপর কাজ করুন। তা না করে ওই মহিলা যা করলেন, তা হিন্দুদের ভাবাবেগে যথেষ্ট আঘাত করেছে বলে মনে করছেন হিন্দু সনাতনীরা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্যাটুর ছবি প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে। যার ফলে ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং ভক্তদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই জগন্নাথ দেবের প্রতি অশ্রদ্ধার বিষয়টাকে সমালোচনা করেছেন। দেবতার পবিত্রতা এবং সাংস্কৃতিক অনুভূতিকে অসম্মান করার বিষয়টা তুলে ধরে থানার দ্বারস্থ হয়েছেন হিন্দু সনাতনীরা।
হিন্দু সেনা নামে একটি ধর্মীয় সংগঠনের সদস্যরা সাংস্কৃতিক অবমাননার কথা উল্লেখ করে শহিদ নগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনাটি সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা এবং ধর্মীয় প্রতীক চিত্রিত করার সময় সচেতনতার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টা তুলে ধরেছে। নেটিজেন এবং ধর্মীয় নেতারা এই নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন।
বিতর্কের জেরে ট্যাটু পার্লারের মালিক ট্যাটু বানানোর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি বলেন, আমি তাঁকে পায়ে ট্যাটু না করার জন্য রাজি করিয়ে ছিলাম, কিন্তু সে আমাকে এটা করতে বাধ্য করেছিল। সে বলেছিল যেহেতু সে একটি এনজিওতে কাজ করে, তাই সংস্থাটি শরীরের অন্য অংশে ট্যাটু করার অনুমতি দেয় না। তাই সে তার পায়ে ট্যাটু করতে বাধ্য হয়েছিল।
এতো বিতর্কের পর বিদেশী মহিলা নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন যেখানে তিনি লিখেছেন, আমি ভগবান জগন্নাথকে অসম্মান করতে চাইনি। আমি খুবই দুঃখিত, আমি ভুল করেছি, দয়া করে আমার ভুল ক্ষমা করুন।
রিপোর্টার: অজয়কুমার নাথ