Russia Ukraine War Updates : ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের সুরক্ষিতভাবে বের করে নিয়ে আসার কাজ জারি রয়েছে। এরই মধ্যে ১৭ বছরের এক ভারতীয় কিশোরী যে মানবতাবোধের পরিচয় দিয়েছে এবং ইউক্রেনীয়দের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন করেছেন, তা প্রশংসা করছে গোটা বিশ্ব। ইতিমধ্যেই তার রিঅ্যাকশন ভাইরাল হয়ে গিয়েছে বিশ্বজুড়েই। সে ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের বের করে নিয়ে আসার সময় ইউক্রেন ছাড়তে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন যে তিনি যেই ঘরে পেইং গেস্ট থাকেন তার মালিক যুদ্ধে অংশ নিতে গেছেন। এর মধ্যে তার বাচ্চারা রয়েছে। বাড়িতে তাদের কে দেখবে? তাই তাদের দেখাশোনার জন্য সেই ইউক্রেনে ওই বাড়িতেই থাকতে চায়। ভারতে ফিরতে অস্বীকার করে ওই কিশোরী।
আবেগপ্রবণ গোটা বিশ্ব
টাইমস অফ ইন্ডিয়া (Times Of India)-র রিপোর্ট অনুযায়ী ইউক্রেনের মেডিকেলে পড়াশোনা করতেন হরিয়ানার ১৭ বছর বয়সী নেহা সাঙ্গওয়ান গিয়েছিলেন। সুযোগ পেলেও তিনি যুদ্ধগ্রস্ত দেশ ছেড়ে আসতে অস্বীকার করেন। এর পেছনে তিনি যা কারণ জানিয়েছেন তা আবেগপ্রবণ করে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে
বাচ্চা ও মালকিনকে ছাড়তে রাজি নন
নেহা এ কারণেই ইউক্রেন ছাড়তে রাজি হননি। বলা হচ্ছে যে, তিনি যে ঘরে পেইং গেস্ট থাকেন, তার মালিক রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে দেশের হয়ে লড়াই করতে চলে গিয়েছেন। তিনি বাড়িতে ছোট বাচ্চা এবং স্ত্রীকে ছেড়ে গিয়েছেন। এর মধ্যে তাদের সঙ্গেই থাকছিলেন ভারতের নেহা। তিনি ওই ব্যক্তির অবর্তমানে তার বাচ্চাদের দেখভালের জন্য তার স্ত্রীর সঙ্গে ইউক্রেন থেকে যাওয়ার কথা মনস্থির করেছেন। যেখানে ভারতীয় দূতাবাসের সুযোগ নিয়ে দেশ ছেড়ে চলে আসা সম্পূর্ণ সুযোগ ছিল।
ম্যায় রহু ইয়া না রহু (আমি থাকি বা না থাকি)
চরখি দাদরি জেলার বাসিন্দা। তিনি নিজের মাকে জানিয়েছেন, আমি থাকি বা না থাকি কিন্তু আমি এই বাচ্চা এবং তার মাকে এই পরিস্থিতিতে ছেড়ে যেতে পারবো না। নেহা গত বছর ইউক্রেনে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছেন। রিপোর্ট অনুসারে নিজের বাবাকে হারিয়েছেন নেহা। তাঁর বাবা ভারতীয় সেনাতে ছিলেন। সম্প্রতি ইউক্রেনের নিজের বাড়ির মালিকের স্ত্রী এবং তার তিন বাচ্চার সঙ্গে থাকছেন।
নেহার কাকিমা শেয়ার করেছেন কাহিনী
মেডিকেল স্টুডেন্ট নেহার কাকিমা সবিতা জাখর এর আগে ফেসবুক পোস্টের পরিস্থিতি ব্যক্ত করেছিলেন। তিনি লিখেছেন মেডিকেলের পড়াশোনা করতে গিয়ে খুব কাছের বন্ধুর মেয়ে ইউক্রেনের কিয়েভে ফেঁসে গেছেন। হোস্টেল না পাওয়ায় তিনি একটি পরিবারের সঙ্গে থাকছেন। কিন্তু এখন যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। তখন তিনি মুশকিলের মধ্যে ফেলে বাড়ির মালিকের স্ত্রী ও তাদের বাচ্চাদের ছেড়ে দেশে ফিরে আসতে রাজি নন। বাড়ির মালিক ইউক্রেনের আর্মি জয়েন করতে গিয়েছেন এবং বাড়ির মালিকের স্ত্রী এবং তিন বাচ্চার সঙ্গে বাংকারে সময় কাটাচ্ছেন।
ভারতীয় দূতাবাসকে না নেহার
সবিতা যখন বলছেন যে ইন্ডিয়ান এম্বাসি নেহার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কিন্তু তিনি ইউক্রেন ছেড়ে ভারতীয় সাহায্যকারীদের সঙ্গে দেশে ফিরতে রাজি হননি। ইউক্রেনের ওপর থেকে সংকট চলে যাওয়া পর্যন্ত যদি তিনি জীবিত থাকেন তাহলেই ভারতে ফিরবেন একথা জানিয়ে দিয়েছেন। ফোনে নেহা জানিয়েছেন, যে বাংকারে ইউক্রেনে রয়েছেন যদি হামলায় তারা সবাই মারা যায় তাহলে আমারও তাদের সঙ্গে মারা যেতে কোন দুঃখ নেই। কিন্তু আমি তাদের একা ছেড়ে ভারতে ফিরবো না। এই কিশোরী কন্যার গল্প সোশ্যাল মিডিয়াতে এখন শিরোনামে রয়েছে। বিশ্ববাসী তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়ায়। সেইসঙ্গে সকলেই তার দীর্ঘায়ু কামনা করছেন এবং সাফল্য কামনা করেছেন।