লাদাখ বরাবরই তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী পর্যটকদের টানে। তবে এখানে এমন একটি জায়গা রয়েছে যা এলিয়েনদের ঘাঁটি নামেও পরিচিত। ভিনগ্রহের রহস্যের কারণে এই এলাকা বিগত প্রায় সাত দশক ধরেই চর্চায় রয়েছে। লাদাখের কঙ্গকা লা (Kongka La) গিরিপথের নিজের মধ্যেই একটি রহস্য রয়েছে। এখানে বহুবার এলিয়েনদের দেখা গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। তাই এই অংশটিকে ফ্লাইং সসার বা ইউএফও বেস বলা হয়। এর সত্যতা যাচাই করার জন্য অনেক বিজ্ঞানী গবেষণাও করেছেন। এই অঞ্চলের নজরদারিও বেশ কড়া।
লাদাখের কঙ্গকা লা পাস (Kongka La Pass) এমন একটি এলাকা যেখানে কেউ থাকে না। এলিয়েনরা সত্যিই এখানে আসে কি না তা বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা ২০০৪ সালে এখানে এসে গবেষণা করেছিলেন। ওই বিজ্ঞানীরা পরে জানান, গবেষণার সময় লাদাখের এই অংশে একটি রোবটকে হাঁটতে দেখা গেছে। বিজ্ঞানীরা সেই জায়গায় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই জিনিসটি অদৃশ্য হয়ে যায়।
তবে এটাই একমাত্র ঘটনা নয়। ২০১২ সালে, ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং ITBP কর্মীরাও একই রকম রহস্যময় জিনিস দেখার কথা জানিয়েছিলেন। দিল্লি সদর দফতরে সেনাবাহিনীর পাঠানো রিপোর্টে বলা হয় যে, লাদাখের কঙ্গকা লা পাস (Kongka La Pass) এলাকায় UFO দেখা গেছে।
এখনও এই গোটা বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বিজ্ঞানীরা। কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে, কঙ্গকার স্তরটি বিশ্বের প্রাচিনতম। এর গভীরতা পৃথিবীর অন্যান্য অংশের চেয়ে দ্বিগুণ। এটি একটি খুব শক্তিশালী শিলা। যার কারণে ইউএফও বেসের ধারণাটি সঠিক বলে বিবেচিত হয়। পাশাপাশি, কিছু বিজ্ঞানী বলেছেন যে, এখানে এলিয়েন বা ইউএফও বলে কিছু নেই। কারণ, এখানে এলিয়ান উপস্থিতির তেমন কোনও পোক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি, যার ভিত্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়।
এই রহস্যের হদিস পেতে ২০১২ সালে, DRDO এবং ন্যাশনাল টেকনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন একসঙ্গে একটি গবেষণা চালিয়েছিল। তদন্ত ও গবেষণার পরেও উভয় প্রতিষ্ঠানই কোনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। কঙ্গকা পাস (Kongka La Pass), যেখানে প্রায়শই ইউএফও দেখার দাবি করা হয়, এটি ভারত-চিন সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছেই অবস্থিত। তাই সেখানে সাধারণ মানুষের চলাচলে এমনিতেই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিছু স্থানীয়দের দাবি, ইউএফওগুলিকে ভারত এবং চিন উভয় দিকেই উড়ে আসতে দেখা গেছে। দুই দেশের সেনাবাহিনীই এ বিষয়ে অবগত। কিন্তু এর সত্যতা কী, তা আজ পর্যন্ত রহস্যই রয়ে গেছে।
২৪ জুন, ১৯৪৭-এ, ওয়াশিংটনের মাউন্ট রেইনিয়ারের কাছে নয়টি দ্রুতগতির বস্তুকে প্রথমবারের মতো উড়তে দেখা যায়। বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে ইউএফও, এলিয়েন বা ভিন-গ্রহের বাসিন্দা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা খুবই জরুরি। তবে আজও লাদাখের কঙ্গকা লা পাস (Kongka La Pass) এলাকার ইউএফও, এলিয়েন সংক্রান্ত রহস্যের কোনও সমাধান হয়নি।