সপ্তাহান্তে এক নজরকাড়া দৃশ্যের সাক্ষী হতে চলেছেন ভারতীয়রা। ৭-৮ সেপ্টেম্বর পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হতে চলেছে।সূর্য ও চাঁদের মধ্যে ঠিক মাঝামাঝি পজিশনে আসবে পৃথিবী। ফলে চাঁদের উপর পৃথিবীর ছায়া পড়বে। এর পাশাপাশি কৌণিক প্রভাবের কারণে চন্দ্রগ্রহণের ঠিক আগে ও পরে চাঁদের রঙে চোখ ধাঁধানো লালচে আভা দেখতে পাবেন। মহাকাশ নিয়ে আগ্রহ থাকলে তো কথাই নেই, না থাকলেও এই দৃশ্য় যে নান্দনিক, তা বলাই বাহুল্য।
চন্দ্রগ্রহণ কোথায় দেখা যাবে?
সমগ্র এশিয়ার প্রায় সমস্ত অংশে, বিশেষ করে ভারতের আকাশে এই চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মানুষও এই চন্দ্রগ্রহণ দেখতে পারবেন। ইউরোপ, আফ্রিকা, পূর্ব অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের কিছু অংশে আংশিক চন্দ্রগ্রহণের দৃশ্য দেখা যাবে।
জ্যোতিষে চন্দ্রগ্রহণের প্রভাব
চন্দ্রগ্রহণের সময় বিভিন্ন রাশির ওপর শক্তিশালী প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে মেষ, কন্যা, ধনু ও কুম্ভ রাশির জাতক-জাতিকাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে পারে। সম্পর্ক, অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত এবং মানসিক শক্তি এই সময়ে প্রভাবিত হতে পারে। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, চন্দ্রগ্রহণ সময়ে স্বস্তি ও ধৈর্য বজায় রাখলে সুফল লাভের সম্ভাবনা বাড়ে।
কেন ব্লাড মুন বলা হয়?
চাঁদের লালাভ আভা একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার ফল। ‘রেলেই স্ক্যাটারিং’ নামে পরিচিত এই প্রক্রিয়ায় সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে গেলে ছোট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের নীল আলো ছড়িয়ে যায়, আর বড় লাল তরঙ্গ চাঁদে পৌঁছায়। এর ফলে চাঁদের পৃষ্ঠ লাল-কমলার আভায় আলোকিত হয়, যা ব্লাড মুন নামে পরিচিত।
ভারতে কোথায় দেখা যাবে
এটি সাম্প্রতিক বছরে সবচেয়ে বিস্তৃতভাবে দৃশ্যমান চন্দ্রগ্রহণগুলোর একটি। বিশ্বের প্রায় ৮৫% মানুষ অন্তত আংশিকভাবে এটি দেখতে পাবেন, আকাশ পরিষ্কার থাকলে। শহরের আলো থেকে দূরে ছাদ, ছাউনি, খোলা মাঠ বা পার্ক থেকে দেখলে চমৎকার অভিজ্ঞতা হবে।
ভারতে চন্দ্রগ্রহণের সময়সূচি (IST)
শুরু: ৭ সেপ্টেম্বর, রাত ৮:৫৮
সম্পূর্ণতা (ব্লাড মুন পর্যায়): রাত ১১:০০ – ৮ সেপ্টেম্বর, রাত ১২:২২
শেষ: ৮ সেপ্টেম্বর, রাত ২:২৫
চাঁদ পুরোপুরি পৃথিবীর ছায়ায় নিমজ্জিত থাকবে ৮২ মিনিট ধরে। এটি দশকের অন্যতম সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন চন্দ্রগ্রহণের মধ্যে একটি হবে।
এই চন্দ্রগ্রহণ শুধু দৃষ্টিনন্দন নয়, বরং আকাশপ্রেমী, জ্যোতির্বিদ ও সাধারণ দর্শকের জন্য এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা উপহার দেবে।