কলকাতার স্ট্রীট ফুডগুলির মধ্যে অন্যতম হল ঝালমুড়ি। শহরের অলিতে-গলিতে, লোকাল ট্রেনে এই ঝালমুড়িওয়ালার দেখা পাবেন। মুড়ির সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ, কাঁচালঙ্কা, সেদ্ধ আলু, মশলা, সর্ষের তেল দিয়ে জমিয়ে মাখা হয়, ভাগ্য ভাল থাকলে মুড়িতে নারকেলও পেতে পারেন। এইসব দিয়ে মেখে সেই মশলা মুড়ি পরিবেশন করা হয় কাগজের ঠোঙায়। আর সেখান থেকে যখন একগাল মুড়ি মুখের মধ্যে যায় তখন স্বাদের বিস্ফোরণ হয়। কিন্তু ভাবুন তো বাঙালির প্রিয় এই ঝালনুড়ি যদি লন্ডনে দেখতে পান আর তাও আবার সেটা বিক্রি করছেন এক ব্রিটিশ নাগরিক, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হয়?
এক ব্রিটিশ নাগরিক লন্ডনে বিক্রি করছেন বাঙালির প্রিয় ঝালমুড়ি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও এখন রীতিমতো ভাইরাল। এই ভিডিও দেখলে আপনি অবাক হবেন গ্যারান্টি দিলাম। এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ব্রিটিশ সেই নাগরিক একেবারে পেশাদার ঝালমুড়িওয়ালাদের মতোই ঝালমুড়ি বানাচ্ছেন। এই ভিডিও শেয়ার করেছেন ফুড ব্লগার অংশ রেহান। তাঁর শেয়ার করা ভিডিওতেই দেখা গিয়েছে ব্রিটিশ প্রৌঢ় বানাচ্ছেন ঝালমুড়ি। এই ভিডিও ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামে ৬ মিলিয়ন ভিউ হয়ে গিয়েছে।
অ্যাঙ্গুস ডিনুন, যিনি কলকাতায় এসে এখানকার ঝালমুড়ি খেয়ে তার প্রেমে পড়ে যান। আর তারপরই লন্ডনে গিয়ে নিজের ঝালমুড়ির দোকান খোলেন, যার নাম ঝালমুড়ি এক্সপ্রেস। বাঙালির প্রিয় স্ট্রীট ফুডের সেই স্বাদকেই অ্যাঙ্গুস ডিনুন তাঁর ঝালমুড়িতে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কলকাতার ঝালমুড়িওয়ালাদের মতোই তিনি ঠোঙায় ঠোঙায় মুড়ি বিক্রি করছেন। তাঁর মুড়ির ট্রলারটিও কলকাতা ঝাল মুড়িওয়ালাদের মতোই। ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বিক্রেতা দক্ষতার সঙ্গে ঝালমুড়ি তৈরি করছেন, কলকাতার স্ট্রীট ফুড দৃশ্যের মতো একটি স্টাইলে। তিনি একটি স্টিলের বাটিতে মুড়ি ছুঁড়ে দিচ্ছেন, সঙ্গে যোগ করছেন বাকি মশলা। সেখানে রয়েছে তাজা ধনে, কাটা শসা, পেঁয়াজ এবং মশলা। পর্যটক থেকে স্থানীয়রা তাঁর হাতে তৈরি ঝালমুড়ি খেয়ে রীতিমতো মুগ্ধ। ওই ব্লগার তাঁর ব্লগের শেষে এও জানান যে ওই ব্রিটিশ ব্যক্তি লন্ডনের রাস্তায় সত্যিকারের কলকাতাকে টেনে এনেছেন এবং মুড়ি টেস্ট করে জানান, সেটা একদম পারফেক্ট কলকাতা স্টাইল ঝালমুড়িই হয়েছে।
তবে ডিনুনের এই ঝালমুড়ির ভিডিও এই প্রথমবার ভাইরাল হয়েছে এমনটা নয়। এর আগেও ব্রিটিশ প্রৌঢ়ের এই ঝালমুড়ির দোকান ভাইরাল হয় ২০১৯ সালের ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপের সময়ও। যেখানে তিনি স্টেডিয়ামের বাইরে ম্যাচ চলাকালীনই ঝালমুড়ি বিক্রি করছিলেন। সেই সময় বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনও তাঁর ভিডিও শেয়ার করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়া পেজে। অ্যাঙ্গুস ডিনুনের এই ভিডিও এটা প্রমাণ করে যে খাবারের কোনও সীমান্ত নেই আর তাঁর কলকাতার ঝালমুড়ির প্রতি ভালোবাসা বাংলার সীমা পেরিয়ে চলে এসেছে বিদেশেও।