Moon GK Facts: রবিবার পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। ব্লাড মুন নিয়ে মানুষের মধ্যে সত্যিই উত্তেজনা চোখে পড়ার মতো। আসলে আকাশে তারা থাকুক আর নাই থাকুক(সৌজন্যে লাইট পলিউশন), চাঁদ সব সময়ই চোখে পড়ে। অথচ এই চাঁদকে নিয়েই মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। ভাল করে খেয়াল করলে দেখবেন, চাঁদের গায়ে অনেক গর্ত গর্ত কালচে দাগ থাকে। একে চলতি বাংলায় চাঁদের কলঙ্ক বলা হয়। কিন্তু এই দাগ আসলে কী? চাঁদের গায়ে এমন দাগ বা গর্ত কেন দেখা যায়?
বৈজ্ঞানিক ভাষায় একে বলা হয় লুনার ক্রেটার। চাঁদের এই দাগ তৈরি হয়েছে লক্ষ লক্ষ বছর আগে। যুগ যুগ ধরে মহাশূন্যে ঘুরে বেড়ানো অগণিত গ্রহাণু ও ধ্বংসাবশেষ চাঁদের পৃষ্ঠে প্রচণ্ড জোরে আছড়ে পড়েছিল। আর সেই থেকেই এই বিশাল সব গর্তগুলি তৈরি হয়েছে। এই প্রচণ্ড আঘাতের ফলে গলিত উল্কাপিণ্ড চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই লাভা ঠান্ডা হয়ে শক্ত পাথরে পরিণত হয়। চাঁদের গায়ে যে কালো ছোপগুলি দেখতে পান, এগুলি আসলে সেই দাগ।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই দাগগুলিকে লুনার মারিয়া (Lunar Maria) বলা হয়। এগুলি আসলে বিশালাকার সমতল এলাকা। আগ্নেয়গিরির মতো লাভা জমে পাথরে পরিণত হয়েছে। পৃথিবী থেকে চাঁদের দিকে তাকালে এই অংশটি গাঢ় রঙের দেখায়। যেন মনে হয় যেন চাঁদের শরীরে দাগ বা কলঙ্ক রয়েছে।
কিন্তু এই দাগগুলির ভেতরে আসলে কী থাকে? চাঁদের মাটি বা শিলা মূলত সিলিকেট জাতীয় খনিজ দিয়ে তৈরি। লুনার মারিয়ায় ব্যাসাল্ট নামক আগ্নেয় শিলা পাওয়া যায়। এটি অত্যন্ত কঠিন এবং গাঢ় রঙের হওয়ায় ওই অংশ দূর থেকে কালচে দেখায়। এছাড়াও, এই এলাকাগুলিতে ধুলোর মতো সূক্ষ্ম কণা থাকে। সেগুলিকে লুনার রেগোলিথ বলা হয়।
চাঁদের এই একেকটি গর্তের আকারও কিন্তু বিশাল। কিছু কিছু ক্রেটারের ব্যাস কয়েকশো কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। পৃথিবী থেকে সবচেয়ে বড় যে ক্রেটারটি দেখা যায়, তার নাম টাইকো ক্রেটার। এটি প্রায় ৮৫ কিলোমিটার চওড়া।
আজও বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা চাঁদের এই দাগগুলি নিয়ে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই দাগের ভেতরেই লুকিয়ে সৌরজগতের নানা অজানা তথ্য।