ডুয়ার্সের চা বলয়ের এক আদিবাসী নিরক্ষর মহিলা চা শ্রমিক। এখন গোটা দেশের কাছে নজির। সংসার চালাতে নিজের পরিবারের পেটের জন্য লড়াই করতে হয়। তা সত্ত্বেও নাবালিকা বিয়ে রোধ, নারী পাচার রুখতে লড়াই এবং চা বলয়ের স্কুলছুটদের স্কুলে ফেরাতে দেশে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কালচিনি চা বলয়ের সুসারি তিরকি।
আর সেই সুবাদেই চলতি মাসের আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন সুসারি তিরকি। কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইণ্ডাস্ট্রিজ থেকে সুসারি তিরকিকে এই পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হবে।
দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ চা বাগানের এই মহিলা চা শ্রমিকের হাতে এই জাতীয় পুরস্কার তুলে দেবেন। তবে সুসারি নিজে নিরক্ষর হলেও প্রবল অধ্যাবসায় আর ধৈর্যের জেরে সে এখন কম্পিউটার চালানোয় যথেষ্ট পোক্ত।
গত এক যুগের বেশি সময় ধরে সুসারি চা বাগানে কাজের পাশাপাশি বাগানে নাবালিকা বিয়ে রোধ, নারী পাচার বন্ধ, এবং স্কুল ছুট ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে ফেরাতে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে গেছে সুসারি।
সুসারির সেই কাজের সুবাদে এবছর কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইণ্ডাস্ট্রিজ সুসারিকে জাতীয় পুরস্কার দেবার জন্য মনোনীত করেছে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর সুসারি তিরকিকে এই জাতীয় পুরস্কার তুলে দেবেন দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
আলিপুরদুয়ার জেলার সুসারির এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুশির আবহাওয়া ডুয়ার্স জুড়ে। জানা গিয়েছে ,কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইণ্ডাস্ট্রিজ-এর পক্ষ থেকে প্রতি বছরই তিনটি ভাগে পুরস্কৃত করা হয় শিক্ষা স্বাস্থ্য ও অর্থ আর এ বছর শিক্ষা বিভাগে উত্তরবঙ্গের একমাত্র ব্যাতিক্রমি মহিলা হিসেবে এই পুরষ্কার পাচ্ছেন সুসারি তিরকে।
কালচিনি চা বলয়ের বাসিন্দা এই মহিলা স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে পাঠানো, নাবালিকা মেয়ের বিয়ে বন্ধ করা, কোথাও আবার নারী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে বারবার রুখে দাঁড়িয়েছেন। এছাড়াও শিক্ষা প্রদান মাধ্যমে সমাজে চা-বলয়ে ছাত্রছাত্রীদের বিকাশের লক্ষ্যে দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর লড়াই। এই বিষয়ে সুসারি তিরকে বলেন, আগামী ২৯শে সেপ্টেম্বর দেশের রাষ্ট্রপতির হাত থেকে এই জাতীয় পুরস্কার তিনি গ্রহন করবেন। তিনি একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন এর সাথে যুক্ত রয়েছেন দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে। শিশুশ্রম বন্ধ করতেও তিনি অগ্ৰণী ভূমিকা গ্ৰহণ করেছেন ।