বক্সার গহীন অরন্যে এবার সরাসরি রয়াল বেঙ্গল টাইগারের দর্শন পেতে কোর জঙ্গলে ৮০ টি দলের ৪০০ সদস্য টানা ছয়দিন তল্লাশি চালাবে জঙ্গলে। সেই সাথে হিমালয়ান ব্ল্যাক বিয়ার সহ ব্ল্যাক প্যান্থারের গণনার কাজও করা হবে বক্সার জঙ্গলে।
গোটা দেশের সাথেই শনিবার থেকে বক্সার জঙ্গলেও শুরু হল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সুমারি। দীর্ঘ ২৩ বছর পর বক্সার জঙ্গলে রয়াল বেঙ্গল টাইগারের দর্শন মেলায় দেশের টাইগার প্রজেক্ট গুলোর মধ্যে এখন এই জঙ্গলের দিকেই নজর ntca(National tiger conservative authority) কর্তৃপক্ষের।
দেশে ২০১৮ সালে সর্বশেষ বাঘশুমারি হয়। সে বছর বক্সাতেও শুমারি হয়। যদিও সে বার বক্সায় বাঘের সরাসরি উপস্থিতির কোন প্রমাণ মেলেনি।তবে এবারের বাঘ শুমারি বক্সার ক্ষেত্রে যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। সম্প্রতি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতর থেকে সরাসরি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি উঠে এসেছে বনদপ্তরের ট্রাপ ক্যামেরায়। জানা গিয়েছে, এনটিসিএ নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনেই ৬ দিনের সুমারি শুরু হয়েছে। চলবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বক্সার ৭৬২ বর্গকিলোমিটার এলাকায় টানা সার্ভে চলবে। প্রতি দুই বর্গকিলোমিটার এলাকার জন্য একটি করে ট্র্যাপ ক্যামেরা পাতা হচ্ছে। বন্যপ্রাণীর শরীরের দুদিকের ছবি তোলার জন্য থাকবে দুদিকে দুটি ক্যামেরা। মূলত আগেই নির্দিষ্ট করা ট্রানজেক্ট লাইন ধরে সার্ভে শুরু হয়েছে।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের সবকটি রেঞ্জ ও বিটের থেকে বনকর্মীদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ৮০ টি দল। এবার বাঘের পাশাপাশি হাতি সহ মাংসাশী ও তৃণভোজী বৃহৎ প্রাণীদেরও গনণা চলবে। জানা গিয়েছে, বাঘ গণনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই বনকর্মীদের রীতিমতো শিবির করেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। যেখানে ক্যামেরা ট্রাপিং নিয়ে ছিল আলাদা প্রশিক্ষণ। জিপিএস ডিভাইস সহ, নিদিষ্ট মোবাইল অ্যাপ সহ নিয়ম মেনেই জঙ্গলের প্রতিটি কম্পার্টমেন্ট ধরে ধরে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলেছে এদিন।
বক্সার ফিল্ড ডিরেক্টর বুদ্ধরাজ শেওয়া, ডিএফডি (পশ্চিম) প্রবীন কাসওয়ান, ডিএফডি(পূর্ব) হরিশ, সুমারিতে অংশ নিয়েছেন এদিন। উল্লেখ্য, আগে বাঘের পায়ের ছাপ ও স্ক্যাটের নমুনা দেখেই বাঘ শুমারি হলেও বর্তমানে লাইন ট্রানসেক্ট এবং সাইন সার্ভে শুরু হয়েছে। নেওয়া হচ্ছে ক্যামেরা ট্রাপিং সহ অত্যাধুনিক অন্যান্য উপায়।
পাশাপাশি এবারের সমীক্ষার উদ্দেশ্য হল বনে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর ঘনত্ব চিহ্নিত করা এবং সেইসঙ্গে বনের কোন এলাকা বাঘ, হাতি, গাউর, সম্বর, বার্কিং ডিয়ার, হগ ডিয়ার, চিতাবাঘ, চিতল প্রভৃতি বন্যপ্রাণীর প্রজাতি রয়েছে তা খুঁজে বের করা। একই সঙ্গে সমস্ত রেঞ্জ এবং বিটগুলিতে ছয় দিন ধরে চলবে। উল্লেখ্য, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের মত গভীর জঙ্গলের ভেতর বাঘ সুমারি যথেষ্টই চ্যালেঞ্জর বনকর্মীদের কাছে।
তবে প্রায় ২৩ বছর পর এবার ইতিমধ্যেই বক্সা থেকে বাঘের ছবি উঠে এসেছে। যা বাড়তি উৎসাহ তৈরি করেছে বনকর্মীদের মধ্যেও। বক্সায় এই মুহূর্তে ঠিক কতগুলো রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে, আগামীতে গণনা থেকে সেই তথ্য উঠে আসবে। এদিকে, জানুয়ারি মাস ধরেই ক্যামেরা ট্রাপিং চলবে জঙ্গলে। বনকর্তারা আশাবাদী নতুন আরও রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি উঠে আসতে পারে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর বুদ্ধরাজ শেওয়া বলেন,আজ থেকে বাঘ গণনা শুরু হয়েছে। যথেষ্টই আশাবাদী ক্যামেরা ট্রাপিং থেকে ভাল ফলাফল উঠে আসবে।