ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি। সেই সঙ্গে গান-বাজনা এবং সঙ্গে উপরি পাওনা ইলিশ। একসঙ্গে যদি সবই মেলে। তা হলে মন্দ কি ?
করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে পর্যটকদের মধ্যে আঁকুপাঁকু, কোথায় যাব, কোথায় গেলে আনন্দের পাশাপাশি সুরক্ষা বজায় থাকবে ?
তাদের জন্য সঠিক ডেস্টিনেশন হতে পারে ডুয়ার্সের ড্রিমল্যান্ড রিসর্ট। ১১ সেপ্টেম্বর সেখানেই আয়োজিত হচ্ছে ইলিশ-বোরলি উৎসব।
নামে যদিও ইলিশ আর বোরলি, তবে সঙ্গে অতিরিক্ত থাকছে বাঙালদের পয়লা নম্বর পছন্দের শুঁটকি। সঙ্গে ঘটির পছন্দের চিতল।
এবার সঙ্গে বাড়তি সংযোজন বোরোলি এবং বাকি মাছগুলি। আর পছন্দের মাছগুলি যখন এক টেবিলে এক পাতে উঠে আসে, তখন তাকে অস্বীকার করতে পারাটা খুব একটা সহজ নয়।
শিলিগুড়ির দুই যুবক সৌরভ ও সাহেব জুটি গত কয়েক বছর ধরেই ইলিশপ্রেমীদের জন্য এই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন।
প্রত্যেকবারই উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা। ফলে তারা নতুন যারা অংশ নিতে চান, তাঁদের জন্য বেছে বেছে জায়গা দিতে চেষ্টা করছেন।
কারণ পুরনো যারা একবার ঘুরে গিয়েছেন, তাঁরা প্রতি বছরই ফিরে ফিরে আসেন। তবে যাঁরা থাকবেন না, সারাদিন উপভোগ করে ফিরে যাবেন, তাঁদের জন্য অবশ্য কোনও বাধা নেই।
প্রধান উদ্যোক্তা সৌরভ বাবুজি দাস জানালেন, এমনিতে ইলিশের যা দাম বা অন্যান্য মাছের যে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে রোজকার জীবনে কব্জি ডুবিয়ে মাছ খাওয়ার দিন প্রায় শেষ।
তবে বিশেষ উৎসব-অনুষ্ঠানে এবং আলাদা করে যদি কোনও অনুষ্ঠান করা যায়, তাহলে অন্তত একটা দিন মানুষ ভালো মানের মাছ খেতে পারে।
তাতে কেউই কার্পণ্য করেন না। সেই জায়গা থেকে চিন্তা ভাবনা করেই মানুষকে ভালো মাছের পদ, বিশেষ করে ইলিশের পদ তুলে দেওয়ার ভাবনা।
সেই সঙ্গে বাড়তি পাওনা, সারাদিনের স্ফূর্তি, নাচ-গান, বাচ্চাদের বিনোদন। সঙ্গে থাকবে দিনভর নানা অনুষ্ঠান। যা করোনা আবহে বিনোদনের সম্পূর্ণ আনন্দ দেবে।
যারা সারাদিন কাটিয়ে সন্ধ্যায় বা রাতে ডিনার করে শিলিগুড়ি বা আশপাশে জলপাইগুড়ি বা অন্যান্য জায়গায় ফিরে যেতে চান, তাঁদের জন্য জনপ্রতি ১৭০০ টাকা ধরা হয়েছে।
তবে রাতে থাকলে সেই প্যাকেজ দাঁড়াবে মাথাপিছু সাড়ে তিন হাজার টাকা। তবে চার বা বেশি সংখ্যায় কোনও দল প্যাকেজ নিলে তাতে বাড়তি ছাড় রয়েছে।
সেক্ষেত্রে খরচ অনেকটাই কমে যাবে বলে জানিয়েছেন বাবুজি। তবে তাঁদের মূল আনন্দ খাওয়া। ইলিশের রকমারি তাঁদের উৎসবের ট্রেডমার্ক। তাই সেটিকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।
গত চার বার ইলিশের উৎসব প্রচুর জনপ্রিয় হওয়ায় এবার তারা সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গের ট্রেডমার্ক মাছ বরোলিকেও ।
তবে সঙ্গে রাখা হয়েছে শুঁটকি এবং চিতল। ফলে ৪ মাছের চল্লিশ পদ দিনভর আপনাকে তিষ্ঠোতে দেবে না, এটুকু হলফ করে বলা যায়।
তবে আয়োজকরা বারবারই একটা জিনিস মনে করিয়ে দিচ্ছেন, থাকতে হলে আগাম বুকিং জরুরি। নইলে আশপাশের রিসর্ট খুঁজতে যেতে হবে।
তবে তারও অভাব অবশ্য় নেই লাটাগুড়িতে। তবু বাইরে থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁরা যেন গুছিয়েই আসেন। ওই রিসর্টে জায়গা না পেলেও অন্যান্য জায়গায় রাত কাটাতে কোনও অসুবিধা নেই।
তবে করোনা পরবর্তী সুরক্ষা মেনে আনন্দের জন্য একটা দিন যদি নিজেকে ও পরিবারকে উৎসর্গ করতে চান, তাহলে এর কোনও বিকল্প নেই।