নতুন করে আবারও মালদার কালিয়াচক ৩নম্বর ব্লকের বীরনগর এলাকায় শুরু হয়েছে ভাঙন। ইতিমধ্যে গঙ্গার গ্রাসে তলিয়ে গিয়ে এলাকার মসজিদ সহ প্রায় ৭০টি বাড়ি।
যার ফলে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হেলদোল নেই স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের । এই পরিস্থিতিতে গৃহহীন বহু পরিবার।
জানা গিয়েছে,মরশুমের শুরুতে মালদার কালিয়াচক ৩নম্বর ব্লকের বীরনগর এলাকার লালুটোলা,ভিমাটোলা,চিনাবাজার এলাকায় গঙ্গা আগ্রাসী হয়ে ওঠে।
আর যার ফলে বসতভিটা সহ চাষের জমি এমনকি পি এইচ ইর জলের পাইপ ভাঙনে তলিয়ে যায়। এমত অবস্থায় নিজেদের উদ্যোগে কেউ বা খোলা মাঠে আবার কেউ স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও স্কুলে আশ্রয় নেয়।
তবে তা বেশীদিন স্থায়ী হয়নি। কারণ গঙ্গার বিধ্বংসী রূপ সমস্তটা ভাঙনে তলিয়ে যায়। যার ফলে ওই সমস্ত এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
ফের সোমবার ভোর রাত থেকে গঙ্গা ভয়ঙ্কর আকার নেয়। যার ফলে তলিয়ে যায় একশোর বেশি বসতভিটা, মসজিদ,বিঘার পর বিঘা চাষের জমি।
আর এই ভাঙন দেখে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত। এলাকার বাসিন্দা হাসিনা বিবি জানান,বিয়ের পর থেকে এখানে বসবাস করছি। নদীর তীরে জমির কাজ করে সংসার চালাই।
এ বছর গঙ্গার ভয়ঙ্কর ভাঙনে সমস্তটা তলিয়ে গিয়েছে। অথচ ভ্রুক্ষেপ নেই প্রশাসনের। দেখা নেই পঞ্চায়েতের। কোথায় যাব, কি করব ! আমরা দিশাহারা। প্রশাসনের আশ্বাস সার কোন কিছু দিচ্ছে না।
এলাকার আরেক বাসিন্দা হুমায়ুন কবীর জানান, আমাদের সমস্ত কিছু গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। সেই কারণে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে।
পঞ্চায়েত প্রধান বা এলাকার বিধায়ক কাউকেই এলাকায় দেখা যাচ্ছে না বা তারা আসছেন না। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন আমাদের রক্ষা করুন। না হলে অচিরেই গঙ্গা গর্ভে আমাদেরও তলিয়ে যেতে হবে।
এদিকে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে। মানুষ মরে গেলে তারপর কখন কে আসবে জানেন না বাসিন্দারা।
এলাকার বিধায়ক চন্দনা সরকার জানান, একদিকে যখন রাজ্য সরকার বলছে কেন্দ্রীয় সরকারের ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধের কাজ সঠিক সময়ে করলে এই ধরনের ভাঙ্গনের কবলে পড়তে হয় না এলাকার মানুষদের।
যার ফলে এই এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন হচ্ছে। সঠিক কাজ করা হচ্ছে না। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের ফারাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ বলছে সঠিকভাবে কাজ করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে যেভাবে ভাঙ্গন হচ্ছে সেই ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের বিডিও মামুন আক্তার জানান, ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্কুল ও তাদের থাকার জন্য ত্রিপল এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।