মুখ্যমন্ত্রীর সাধের "জল ধরো জল ভরো প্রকল্প "মুখ থুবড়ে পড়েছে। ভারত-ভুটান সীমান্তের প্রত্যন্ত জেলা আলিপুরদুয়ারে। জেলার পাহাড়ি রিমোট এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ পাহাড়ের ডলোমাইট মিশ্রিত অপরিশোধিত জল পান করে পেটের সমস্যায় ভুগছে।
যদিও প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। বর্ষার মরশুমে যদিও বা বৃষ্টির জলে পুষ্ট পাহাড়ের ঝর্ণাগুলো থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের পানীয় জলের সমস্যার কিছুটা সমাধান হয়।
তবে শীতের মরশুমে এবং গরম কালে তীব্র জলসংকটে ভোগেন এই পাহাড়ি এলাকার প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ। প্রশাসন এই বাসিন্দাদের জলকষ্ট থেকে মুক্তির পথ না দেখালেও স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পাহাড়ের বুকে একটি আস্ত জলাধার বানিয়ে ফেললেন।
আলিপুরদুয়ার কালচিনি ব্লকের জয়গাঁ এলাকায় ডারাগাঁও-এর গেরিগাও এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই জলকষ্টের সমস্যায় জেরবার। জয়গাঁ এলাকার ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম গেরিগাও। প্রায় দুশো পরিবারের বসবাস এই গ্রামে। নৈসর্গিক দৃশ্য চোখ আটকে রাখলেও এই এলাকার মানুষদের জলের জন্য সংগ্রাম হৃদয় ভারাক্রান্ত করে তুলবেই।
বছরের পর বছর চলে আসা এই সমস্যা সমাধানে নিজেরাই হাত লাগালেন গ্রামবাসীরা। গ্রামে তৈরি করেছেন ১০-১২ টি ওয়াটার রিজার্ভার।স্থানীয়দের মতে,বর্ষাকালে জলের সমস্যা হয় না। কারণ সেসময় পাহাড়ি ঝোরা পরিপূর্ণ থাকে। জলের সমস্যা হয় শীতে।সেসময় এক একদিন মাটি খুঁড়তে হয় জলের জন্য।
প্রশাসনকে এ বিষয়ে জানানো হলেও পরিদর্শন ছাড়া আর কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে তাদের অভিযোগ। জলকষ্ট থেকে মুক্তি পেতে ওয়াটার রিজার্ভার তৈরি করেছেন গ্রামবাসীরা। পাহাড়ের ঝর্ণার জল সেই রিজার্ভারে জমা হচ্ছে এবং সেখান পুরো গ্ৰামে পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে ।
এলাকার বাসিন্দারা নিজেদের শ্রম ও নিজেদের অর্থ দিয়ে এই রিজার্ভার তৈরি করেছে । বাসিন্দারা জানান দীর্ঘ বহু বছর ধরে এই গ্ৰামে পানীয় জলের সমস্যা। ভুটান-সীমান্ত লাগোয়া এই গেরিগাঁও গ্ৰামের বাসিন্দারা জানান ইঞ্জিনিয়ার বহুবার এসেছে এসে পরিদর্শন করে গিয়েছে কিন্ত পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা হয়নি এখন অবধি।
তাই আর কারও অপেক্ষায় বসে না থেকে আমরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে নিজেদের সমস্যা দূরীকরণে উদ্যোগী হয়েছি ।
গেরিগাও সমাজ উন্নয়ন কমিটির সভাপতি দীপক লামা বলেন, ব্লক প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসনকে বলেও এত দিন কোন কাজ হয়নি।