তিন মাস বাদে ১৫ই সেপ্টেম্বর পর্যটকদের জন্য ডুয়ার্সের জঙ্গল খুলতে চললেও প্রশাসনিক ভবন ডুয়ার্স কন্যার ট্যুরিস্ট হেল্প ডেস্ক থেকে কোনও তথ্যই ট্যুরিস্টরা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।
উলটে ট্যুরিস্ট হেল্প ডেস্কেরই বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সরকারি হেল্পের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সাধের পর্যটনের জেলায় ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশ বিদেশের পর্যটকদের জন্য ডুয়ার্স কন্যায় বছর দুই আগে চালু হয়েছিলো এই ট্যুরিস্ট হেল্প ডেস্ক।
তবে মাত্র চার বছরের ব্যবধানেই লাটে উঠেছে ট্যুরিস্ট হেল্প ডেস্কের পরিষেবা। জেলায় করোনার দাপট কিছুটা কমেছে। তা ছাড়াও তিনমাস বাদে জঙ্গল খুলতে চলায় পর্যটনে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন পর্যটন কারবারিরা।
তবে জেলার সরকারি হেল্প ডেস্কের এই বেহাল অবস্থায় অনেকেই হতাশ। ট্যুরিস্ট হেল্প ডেস্কের ফোন নম্বরে (০৩৫৬৪-২৫৭৫৩৭) ফোন করলে জেলার পর্যটনের নূন্যতম কোনও তথ্য জানা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসনের দাবি, ডুয়ার্স কন্যায় অবস্থিত ওই ট্যুরিস্ট হেল্প ডেস্কটিকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক সুরেন্দ্রনাথ মিনা বলেন, আগে একটি বেসরকারি ট্যুরিজম সংস্থাকে দিয়ে ওই ট্যূরিস্ট হেল্প ডেস্কটি চালানো হয়েছিল।
চুক্তি শেষ হওয়ায় ওই সংস্থাকে হেল্প ডেস্ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সরকারীভাবেই হেল্প ডেস্কটি চলছে। পর্যটকরা যাতে সার্বিকভাবে ওই ট্যুরিস্ট হেল্প ডেস্ক থেকে জেলার পর্যটন ব্যবস্থার খুঁটিনাটি জানতে পারে তার জন্য সমস্ত ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
আলিপুরদুয়ার ট্যুরিজম নির্ভর জেলা। ১৫ সেপ্টেম্বর জঙ্গল খোলার পর প্রতি বছর পুজোর আগে আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভুটানঘাট, পরিযায়ী পাখিদের বাসভুমি নারারথলি বিল, সমতল থেকে ২৯০০ ফুট উচ্চতায় বক্সা ফোর্ট, রাজাভাতখাওয়া, রায়মাটাং ও জয়ন্তীর টানে দেশবিদেশের পর্যটকরা ছুটে আসে। আবার চিলাপাতা, কোদালবস্তি, মেন্দাবাড়ি, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান , টোটোপাড়া ও গারুচিরা এলাকাতেও বেড়াতে আসেন পর্যটকরা।
জেলার এই সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রের এলাকায় সরকারি বেসরকারি হোমস্টে, ব্লু হোমস্টে, লজ ও রিসর্টও আছে। জেলায় প্রায় ১৫০ টির মতো হোমস্টে আছে। আছে অগুনতি লজ ও রিসর্ট। পর্যটকদের জেলার এই পর্যটন কেন্দ্রগুলির খুঁটিনাটি তথ্য জানাতেই চার বছর আগে ডুয়ার্সকন্যার একেবারে নীচের তলার তিন নম্বর রুমে ওই ট্যুরিস্ট হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছিল।
অভিযোগ, জেলা সদর থেকে কোন পর্যটন কেন্দ্রের কত দূরত্ব, পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে যেতে গাড়ি ভাড়া কত কিংবা হোমস্টে ও রিসর্টগুলিতে থাকার ভাড়া কত সেসব বিষয়ে কোন তথ্যই মিলছে না বলে অভিযোগ। এর ফলে জেলা সদরে এসে ফাঁপড়ে পড়েন পর্যটকরা। আবার, কোনও পর্যটন কেন্দ্রে কি দেখা যাবে, কোথায় জঙ্গল সাফারি বা হাতি সাফারি হয় এসব তথ্যও পর্যটকদের সরকারি ওই হেল্প ডেস্ক থেকে মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
পর্যটনের কোনও রুট ম্যাপ, গাড়ি ভাড়ার চার্ট, হোমস্টে বা লজের ভাড়ার চার্টও মেলে না ওই সরকারি হেল্প ডেস্কে। আবার কোথায় গেলে পাখি, হরিণ, বাইসন, গণ্ডার বা হাতির দেখা মিলবে তারও কোন সুলুকসন্ধান সরকারি ওই হেল্প ডেস্কে মিলছে না। আলিপুরদুয়ার ডিস্ট্রিক্ট ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, পর্যটকদের স্বার্থে ডুয়ার্সকন্যায় সরকারি ভ্যানেই ওই ট্যূরিস্ট হেল্প ডেস্কে গড়ে তোলা হোক।