মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও অনৈতিকভাবে শিলিগুড়ি পৌরনিগমের প্রশাসক বোর্ডে রাজনৈতিক নেতাদের বসানোর অভিযোগ তুলে এবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে বামেরা। একই সাথে মেয়াদ বর্ধিত প্রশাসক বোর্ডের সময়কালে বরাদ্দকৃত রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের অর্থ এবং খরচ হওয়া অর্থের স্পেশাল অডিটের দাবিও জানিয়েছেন বামেরা।
বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর রাজ্যে তৃতীয়বার তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর মেয়াদোত্তীর্ণ শিলিগুড়ি পুরনিগমে গৌতম দেবকে চেয়ারম্যান করে প্রশাসক নিয়োগ করে রাজ্য সরকার। তবে প্রশাসক বোর্ডের গৌতম দেব সহ তৃণমূল নেতার বসানোর পর থেকেই বিরোধিতা করে আসছিল বামেরা।
এবার বর্তমান পৌর প্রশাসক বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করতে চলেছে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট । সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমটাই জানালেন দার্জিলিং জেলা সিপিএমের সম্পাদক জীবেশ সরকার এবং সিপিআইএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য।
এদিন দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের দলীয় কার্যালয় অনিল বিশ্বাস ভবন ওই সাংবাদিক বৈঠকটি হয়। ইতিমধ্যে বিকাশ ভট্টাচার্য হাইকোর্টে মামলা রুজু করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন অশোক ভট্টাচার্য।
তাদের বক্তব্যের পরই রাজনৈতিকমহলে জোর বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়। মেয়াদ বর্ধিত প্রশাসক বোর্ডের সময়কালে বরাদ্দকৃত রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের অর্থ এবং খরচ হওয়া অর্থের স্পেশাল অডিটের দাবিও জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ এবং শিলিগুড়ি পৌরনিগমের অবিলম্বে নির্বাচনের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন এবং নাগরিক কনভেনশনের কর্মসূচি নিয়েছে বামেরা বলেও জানিয়েছেন তারা।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, "২০২১ সালের ১৮ মে নির্ধারিত প্রশাসক বোর্ডের সময় পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তারপরেও রাজ্য সরকার বিভিন্ন নেতাদের পুনর্বাসন হিসেবে প্রশাসক বোর্ডে বসিয়ে চলেছে। এটা কোনভাবেই সম্ভব না। সম্পূর্ণটাই অনৈতিক এবং আইন বিরুদ্ধ। সেজন্যই আমরা আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছি।"
তিনি জানিয়েছেন ২০২০ সালের ১৮ মে পর্যন্ত নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। তারপরে আরো এক বছর প্রশাসক বোর্ড ক্ষমতায় ছিল পৌরনিগমের। কিন্তু সেই সময়ও পার হয়ে গিয়েছে। শুধু শিলিগুড়ি পৌরনিগম নয় রাজ্যের আরো ১৭ টি পৌরসভায় তিন বছর ধরে কোনও রকম নির্বাচন করছে না রাজ্য সরকার।
অন্যদিকে অশোক ভট্টাচার্য ওই বক্তব্যে কটাক্ষ করে শিলিগুড়ি পৌরনিগমের বর্তমান প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব। তিনি বলেন, "প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে সম্পূর্ণটাই আইন মেনে। আইনের উপদেশ অশোকবাবুর থেকে নেব না। নানা রকম অনৈতিক কাজ ক্ষমতায় থাকাকালীন তারাই করে গিয়েছেন। সেই সমস্ত কাগজ তৈরি করা হয়েছে। সময় এলে তা প্রকাশ্যে আনা হবে।"