একে বিরূপ আবহাওয়ায় আগের মতো আমের স্বাদ নেই। তার উপর সরকারি নীতি আমচাষিদের জন্য বরাবরই কোনও সুরাহা আনে না।
তাই ফলন ভাল হলেও তাতে যে সব সময় লাভ ঘরে তোলা যায়, তা নয়। তার উপর এবার আমের ভরা মরশুমে করোনা আবহে রাজ্যের তরফে লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
ফলে পরিবহণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আম রপ্তানি হবে কি করে? তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এক লক্ষ আম চাষি ও ব্যবসায়ী। একে ট্রেন তুলে নেওয়া হচ্ছে একের পর এক।
তার উপর আবার সড়ক পরিবহণও ১৫ দিনের জন্য আপাতত বন্ধ। তাই মাথায় হাত তাঁদের। কীভাবে আম পাঠানো যাবে তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না তাঁরা। বাইরে না হলেও অন্তত রাজ্যের মধ্যে আন্ত জেলা পরিবহণ চালু থাকায় আম কিছুটা পাঠানো যাচ্ছিল।
এবার তাও বন্ধ হয়ে গেল। ফলে যেগুলি রপ্তানির জন্য তৈরি হচ্ছিল সেই আমের গাদা এখন স্থানীয় বাজারে ভ্য়ান দিয়ে টেনে নিয়ে গিয়ে বিক্রি ছাড়া উপায় নেই। তাও তাতেও সীমিত সময়ের বাজার কতটা বিক্রি করা সম্ভব হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা।
মানুষের পাতে এখন ডাল-ভাত পড়াটাই হয়েছে বড় চিন্তার বিষয়, সেখানে আম খাবে কে? ফলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে। তার চেয়ে লাভ কিছু নেই। ১৫ দিন পরও পরিবহণ যদি না খোলে, তাহলে আরও আম নষ্ট হয়ে যাবে।
ক্ষতিপূরণে সরকারি সাহায্য পাবেন, সে আশাও নেই। উদ্যান পালন বিভাগে যোগাযোগ করেও সুরাহা হয়নি। সব ফলের ক্ষেত্রেই একই সমস্যা। ফলে কাকে ছেড়ে কাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাবে সে বিষয় নিশ্চিত নন তাঁরা।
তবে যদি নবান্ন থেকে কোনও নির্দেশ আসে, তাহলে অন্য কথা। তখন যে কোনও রকম ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব হবে। নইলে আপাতত পরিস্থিতি পরিবর্তন হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
বহু বাগানে আম গাছেই রয়ে গিয়েছে। এবার আগাম দাদন দিয়ে বাগান কিনে নিতে আসেননি বহু পরিচিত পাইকাররাই। ফলে গাছ থেকে আম নামানোর লোক পাওয়া যাচ্ছে না। আর নামিয়েই বা হবে কী?
নিজেদের প্রয়োজনের বা খাওয়ার জন্য আম আর কতটুকু দরকার? সেটুকু আম এক বা দুটি গাছ থেকেই হয়ে যায়। বাকি কয়েক হাজার গাছে আম ঝুলছে সমঝদারের আশায়।
দ্রুত পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলে গাছে পেকে আম ঝড়ে পড়ে যাবে। যেটুকু থাকবে তা পাখি কিংবা বাদুড়ের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। আক্ষেপ আমচাষিদের।