scorecardresearch
 

৫ গোঁজ প্রার্থীই বিঁধবে তৃণমূলকে, গৌতমের ভোট কাটবে অজানা ঘাতক

তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দলেরই ৫ সৈনিক মনোনয়ন জমা দিল শিলিগুড়িতে। এদিকে প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবের বিরুদ্ধে ভোট কাটতে দাঁড়িয়ে পড়েছেন এক ব্যবসায়ী। সব মিলিয়ে স্বস্তিতে নেই জোড়াফুল শিবির।

Advertisement
গৌতম দেব গৌতম দেব
হাইলাইটস
  • গৌতম দেবকে লড়তে হবে কঠিন লড়াই
  • তৃণমূলের পাঁচ ওয়ার্ডে লড়াই নিজেদের সঙ্গে
  • টাকা নিয়ে টিকিট দেওয়ার অভিযোগ বিক্ষুব্ধদের

দলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করে বিক্ষুব্ধ পাঁচ তৃণমূল নেতা নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন। একই সঙ্গে ৩৩ নং ওয়ার্ড থেকে গৌতম দেবের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হলেন এক ওষুধ ব্যবসায়ী। সব মিলিয়ে নির্দল প্রার্থী নিয়ে ব্যাপক অস্বস্তিতে তৃণমূল শিবির। পাশাপাশি দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রার্থী বাছাইয়ে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিক্ষুব্ধরা। মনোনয়ন প্রত্যাহার না হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা সভাপতি।

শিলিগুড়ি পুরনিগমের নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে পথে নেমেছিল তৃণমূল নেতারা। দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ ও পথ অবরোধ। যদিও দলের কড়া বার্তাতেও গলেনি বরফ। শেষমেশ পুরনিগমের পাঁচটি ওয়ার্ড থেকে নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়ন জমা দিলেন সক্রিয় তৃণমূলকর্মীরা। আর এতেই ব্যাপক অস্বস্তিতে দল।

সোমবার ছিল মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ফলে এদিন সকাল থেকে শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের কার্যালয় সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা নিজের মনোনয়নপত্র জমা দিতে সকাল থেকে দফায় দফায় ভিড় করে। একই সঙ্গে এদিন তৃণমূলের প্রার্থীরা নিজেদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়। তারই মাঝে দলের নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দেয় বিক্ষুব্ধরা।

১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলনেতা বীরেন্দ্র কাপুর ওরফে মাসুম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা মেয়র পরিষদ নিখিল সাহানি, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সরকার, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী রিনা দাস ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের জেলা তৃণমূল নেত্রী তথা দলের ৬ ওয়ার্ডের পর্যবেক্ষক মল্লিকা দেবনাথ। এদিন প্রত্যেকেই এই প্রার্থী বাছাই করাকে স্থানীয় জেলা তৃণমূলের কিছু নেতৃত্বের ব্যক্তি স্বার্থেকে দায়ী করেছেন। অপরদিকে ৩৩ নং ওয়ার্ড থেকে গৌতম দেবের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন স্থানীয় এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী বিজন সরকার।

Advertisement

এদিন বিক্ষুব্ধ নির্দল প্রার্থী বিকাশ সরকার বলেন, দলের একজন সৈনিক। দলের উপর আস্থা ছিল। তবে বেশ কয়েকজন নেতা ঠান্ডা ঘরে থেকে নোংরা ষড়যন্ত্র করেছে। টাকা নিয়ে টিকিট দেওয়া হয়েছে। কয়েকজন নেতাকে খুশি করতে এসব করা হয়েছে। দল দেখুক কী সিদ্ধান্ত নেবে?

অন্যদিকে ওপর নির্দল প্রার্থী নিখিল সাহানি বলেন, যে এর আগে কোনও দিন নির্বাচনে জয়ী হননি এমন লোককে টিকিট দিয়েছে দল। তবে তাঁকে টিকিট না দেওয়ার পিছনে বেশ কয়েকজন নেতারা নোংরা রাজনীতি করেছেন। দলের উচিৎ এটা বিবেচনা করা।

মল্লিকা দেবনাথ বলেন, "আমাকে দিয়ে ওয়ার্ডে কাজ করানো হয়েছে। আমাকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল টিকিট দেওয়া হবে। শেষে নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। যাকে প্রার্থী করা হয়েছে তাকে মানুষ মানছেন না। তাঁকে চেনেন না কেউ। মানুষ আমাকে চাইছে। সেজন্য নির্দল হিসেবে প্রার্থী হয়েছি।

পুরনিগমের ১ নং ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী বীরেন্দ্র কাপুর বলেন, "দীর্ঘদিন থেকে দলে রয়েছি। আমার কাছে পিকের দল গিয়েছিল। আমি জেলা সভাপতি, গৌতম দেব সবাইকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে টিকিট দেওয়া হলো না। সেজন্য এলাকাবাসীদের দাবি মত আমি নির্দল হিসেবে লড়ব।

অপরদিকে গৌতম দেবের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো নির্দল প্রার্থী বিজন সরকার বলেন, আমার লড়াই কারও সাথে নয়। আমার সঙ্গে ওয়ার্ডের মানুষ রয়েছে। তাদের দাবি মতই আমি নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ছি। মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে জয়ী করবে আমি তাতে নিশ্চিত।

জেলা সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, টাকা দিয়ে আমাদের দলে টিকিট দেওয়া হয় না। আমাদের দলের প্রার্থী ঠিক করেছেন খোদ দলনেত্রী। যারা দলের বিরুদ্ধে গিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। যদি বোঝানোর পরও তারা মনোনয়ন পত্র না তুলে নেয় তবে দল তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে।" 

গৌতম দেব বলেন, " যারা আজ নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিল তারা সবাই আমাদের সহকর্মী। তারা যাতে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয় সেই জন্য আমি তাদের সাথে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলব । দলের কোনো ক্ষতি হোক আশাকরি কেউ চায় না। তাই আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করব।"

 

Advertisement