বিনয়-বিমল কাছাকাছি
বুধবার রাতে পুরনো সহকর্মীর সঙ্গে এক মঞ্চে ফের বিমল গুরুং। কিছুদিন আগেই নিজের তৈরি দল ছেড়ে দিয়ে পতাকা এবং পদত্যাগ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন পুরনো সুপ্রিমোর হাতেই। সেই বিনয় তামাং বুধবার বিমল গুরুংয়ের গেস্ট হাউসে একক বৈঠক করলেন। বৈঠকে শুধুমাত্র বিমল-বিনয় ছাড়া কেউ ছিলেন না। ফলে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে, বিনয়কে বিমলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরবর্তীতে রাজনৈতিক পদক্ষেপ শুরু করতে চলেছেন।
ভাঙলেন তবু মচকালেন না
যদিও ভাঙলেও মচকালে না বিনয়-বিমল কেউই। বিমল গুরুং পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন এটি কোনও রাজনৈতিক নয়, পুরনো সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করেছি. পাহাড়ের উন্নতি এবং প্রগতির জন্য আলোচনা হয়েছে। তার বাইরে কিছু নয়। কী বুঝলেন !
গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলে দাবি অনিতের
পাশাপাশি এই বৈঠক নিয়ে অনিত থাপা গোষ্ঠীর তরফে অলককান্তমনি থুলুং জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এই বৈঠককে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাঁর দাবি, বিনয় তামাং দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি এখন একজন সাধারণ মানুষ। তা ছাড়া বিনয় তামাং নির্বাচনের আগে বিমল গুরুংকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, তাঁকে পাহাড়ে উঠতে দেবেন না। এখন আবার তিনি তাঁর স্থান পরিবর্তন করে বিমলের সঙ্গে দেখা করছেন। ফলে এসব অস্থির মস্তিষ্ককে নিয়ে তাদের চিন্তাভাবনার সময় নেই।
অনিতের আক্ষেপ বিনয়কে নিয়ে
যদিও তাঁরই দলের বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদক অনিত থাপা, বিনয়ের দল ছাড়ায় আক্ষেপ করেছেন দুদিন আগে। তারই মাঝে গুরুংয়ের সঙ্গে বিনয়ের ঘনিষ্ঠতা পাহাড়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ এবং ক্ষমতা কার হাতে থাকবে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
তৃণমূল-বিজেপির কড়া নজর
অন্যদিকে তৃণমূল নেতা লালবাহাদুর রাই জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা নজর রাখছি পরিস্থিতি রিপোর্ট পাঠানো হবে দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। অন্যদিকে বিজেপির তরফেও দার্জিলিং পাহাড়ের নেতা কল্যাণ দেওয়ান জানিয়েছেন দুজনেরই মতির ঠিক নেই, সুতরাং কে কখন কোথায় থাকবে তারা নিয়ে আলোচনা করার কোনও মানে হয় না। জিএনএলএফ এ নিয়ে কোনও রকম মন্তব্য করতে নারাজ।
সাম্প্রতিক অতীত
২০১৭ সালে পাহাড়ের ধারাবাহিক হিংসার সময়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায় ভাঙন ধরে। বিমল গুরুং, রোশন গিরিরা পাহাড় ছেড়ে পালিয়ে যান একাধিক মামলার চাপে পড়ে। সেই সুযোগে দলের রাশ নিজের হাতে তুলে নেন বিনয় তামাং এবং অনিত থাপা। বিমল রোশনকে বহিষ্কৃত বলে ঘোষণা করেন তাঁরা। পরে বিমল গুরুং ফিরলেও, বিনয়ের সঙ্গে আর এক হননি তাঁরা। দুটি আলাদা ভাগে বিভক্ত হয়ে মোর্চা তাদের কার্য সম্পাদন করতে থাকে। কিছুদিন আগে হঠাৎই বিনয় নিজের তৈরি দল থেকে পদত্যাগ করে বিমল গুরুংকে নেতা বলে ঘোষণা করে দেন। যা পাহাড়ের রাজনীতিতে নতুন মোড় তৈরি করে। তারপর থেকে নিশ্চুপ থাকলেও বুধবারই প্রথম দীর্ঘ চার বছর পর বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে দেখা করলেন বিনয়। এর পর পাহাড়ের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি কোথায় যাচ্ছে তার দিকে নজর গোটা রাজ্যর সঙ্গে দেশেরও।