শেষ ম্যাচে যেটাতে তিনি খেলেছেন, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে পেন কিলার নিয়ে দুর্দান্ত অর্ধশতরান করেছেন।আর তাঁর উইকেট কিপিং নিয়ে কথা বলার সাহস অতি বড় ঋদ্ধি বিরোধীরও নেই। শেষ ম্যাচে ভাল ব্য়াট করেও আর কোনও সুযোগ না পেয়ে জাতীয় দল থেকে তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপরই তিনি মুখ খুলেছেন রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও। আর তাঁর সঙ্গেই প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন উইকেটকিপারের নিজের শহর শিলিগুড়ির বাসিন্দারা।
রবিবার শিলিগুড়িতে একাধিক জায়গায় ঋদ্ধির সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়েছে। বিসিসিআইয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে, ফের ঋদ্ধিকে দলে শামিল করার দাবি উঠেছে। রবিবার বিক্ষোভে শামিল শিলিগুড়ির ইয়ুথ ক্লাব, শিলিগুড়ি ক্রিকেট লাভার্স ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন।
বোর্ডের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ইয়ুথ ক্লাবের সভাপতি রাজকুমার সাহা দাবি করেন, আমরা চাই দ্রুত ঋদ্ধিকে দলে ফেরানো হোক। ওঁকে অন্যায়ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। ভাল খেলার পরও এভাবে কাউকে দল থেকে বের করে দেওয়া যায় না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। ক্লাব সম্পাদক সঞ্জীব মাইতি দাবি করেন পারফরম্যান্স সবারই ওঠানামা করে। কিন্তু অন্যরা ইনেক সুযোগ পান। ঋদ্ধি সুযোগ না পেয়ে বাদ পড়বেন কেন? ইঞ্জেকশন নিয়ে খেলে টেস্ট বাঁচাতে পারেন যে খেলোয়াড়, তাঁকে এভাবে বের করে দেওয়া তাঁরও অপমান। ওঁর তিনটি শতরান আছে, ওঁর প্রশংসা স্বয়ং অ্যাডাম গিলক্রিস্ট করেছেন। ঋদ্ধির যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাটাই বোকামি। আমরা ঋদ্ধির পাশে রয়েছি। ভারতীয় দলে উইকেটের পিছনে দস্তানা হাতে ঋদ্ধিকেই আবার আমরা দেখতে চাই। সাফ দাবি তাঁদের।
শিলিগুড়ি ক্রিকেট লাভারদের সভাপতি মনোজ ভার্মা জানান, ঋদ্ধিকে যেভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে তা ঠিক নয়। ঋদ্ধির বয়সটাই যদি মাপকাঠি হয়, তাহলে তাঁকে ফেয়ারওয়েল ম্যাচ দিয়ে তারপর অবসর দিতে পারতো। এভাবে সিনিয়র খেলোয়াড়কে বাদ দেওয়ার পিছনে কি কারণ রয়েছে, তা জানা নেই।
ঋদ্ধিমান সাহা বাদ পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাম নেতা ও ক্রীড়াপ্রেমী অশোক ভট্টাচার্য। এ বিষয়ে তিনি বিসিসিআইকে চিঠি লিখবেন বলেও জানান। তাঁর সঙ্গে সৌরভের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তাই শিলিগুড়িবাসী আশাবাদী তিনি চিঠি লিখলে কাজ হতে পারে। শিলিগুড়ির সম্ভাব্য মেয়র গৌতম দেবও মনে করেন নির্বাচকরা সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি। ঋদ্ধিমানের প্রতি অবিচার করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজের জন্য শনিবারই ভারতীয় দল ঘোষণা করেছেন নির্বাচকরা। ফের ঋদ্ধিমানের পরিবর্তে পছন্দের তালিকায় ঋষভ পন্থই রয়েছেন। দ্বিতীয় উইকেট কিপার হিসেবে রাখা হয়েছে শ্রীকর ভরতকে। যার পর বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ঋদ্ধিমান। একহাত নিয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়কেও।
ক্ষোভ ছড়িয়েছে তাঁর ছোটবেলার ক্লাব যেখান থেকে হাতেখড়ি সেই শিলিগুড়ির অগ্রগামী সংঘেও। তাঁর কোচ জয়ন্ত ভৌমিক এ পবিষয়টি মানুষের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন। তবে অন্যায় হয়েছে এটা বোঝার জন্য় ক্রিকেট বোদ্ধা হতে হয় না, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।