প্রত্যাশামতোই দার্জিলিং পুরসভা দখল করল হামরো পার্টি। হামরো পার্টি থেকে জিতে কাউন্সিলর হওয়া দীপেন ঠাকুরিকে দলবদলের পুরস্কার দিলেন অনিত থাপা। তিনিই নতুন চেয়ারম্যান। এদিন চেয়ারম্যান নির্বাচনের বৈঠকে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (BGPM)ও তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)-র ১৬ জন উপস্থিত ছিল। বিরোধী হামরো পার্টি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কোনও কাউন্সিলরই উপস্থিত হননি। ফলে বিনা বাধায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন দীপেন ঠাকুরি।
সোমবার পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচন ছিল। পুরসভা সূত্রে খবর, সেখানে অনিত থাপার দল এবং তৃণমূলের কাউন্সিলররাই শুধু ছিলেন। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেননি হামরো পার্টি এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কাউন্সিলররা। ফলে বিরোধিতা বা ভোটাভুটির দরকার হয়নি। গোলমাল এড়াতে ভোর ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পুরসভা চত্বর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তবে প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে।
উল্লেখ্য নির্বাচনে জিতে দার্জিলিং পুরসভায় বোর্ড গঠন করেছিল অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি। চেয়ারম্যান হয়েছিলেন রীতেশ পোর্টেল। পরে হামরো পার্টি ছেড়ে ৬ কাউন্সিলর অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দেন। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় হামরো পার্টি। এরপর হাইকোর্টে মামলা করে হামরো পার্টি। যদিও তাদের আপত্তি খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। এরপর থেকে চেয়ারম্যান পদ ফাঁকাই ছিল। এদিন বৈঠক করে নয়া চেয়ারম্যানকে বেছে নেওয়া হয়। ক্ষমতা হারানো হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড জানিয়েছেন, নতুন বোর্ডকে দার্জিলিংয়ের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। সেটাই শেষ কথা। অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে নয়া বোর্ড ব্যবস্থা না নিলে তাঁরা আদালতের শরণাপন্ন হবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন। যদিও বিজিপিএম সভাপতি অনিত থাপা দার্জিলিংয়ের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
গত পুরভোটে ১৮ আসন জিতে ক্ষমতায় এসেছিল হামরো পার্টি। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সম্প্রতি ওই দলের ৬ জন কাউন্সিলর অনীতের দলে যোগ দেন। এর পরেই পুরসভা দখলের প্রক্রিয়া শুরু করে দেয় প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। অনাস্থা প্রস্তাব এনে সরিয়ে দেওয়া হয় পুরসভায় হামরো পার্টির চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টেলকে। তার বিরুদ্ধেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চেয়ারম্যান। কিছু দিন আগে পুরসভায় অনাস্থা সভা নিয়ে হামরো পার্টির সেই আর্জি খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালতের জলপাইগুড়ি সার্কিটে বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য এবং সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ। তখন থেকেই কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, পুরসভার ক্ষমতা হারাতে চলেছে হামরো।