scorecardresearch
 

নির্দেশিকা নিয়ে বিভ্রান্তি, জনসমাগম কমলো উত্তরবঙ্গের পার্কগুলিতেও

বন দফতরের নির্দেশিকা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে মানুষের মধ্যে। ফলে কোন পার্ক খোলা, কোন পার্খ বন্ধ বুঝঢে উঠতে পারছেন না অনেকেই। তাই উদ্যান পালন বিভাগের পার্কগুলি খোলা থাকলেও তাতে যাতায়াক প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকেই। ক্ষতির মুখে পার্কগুলি।

Advertisement
উদ্যান পালন বিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ উদ্যান পালন বিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ
হাইলাইটস
  • ছোট পার্কগুলি দিব্যি খোলা
  • স্যানিটাইজেশন করা হচ্ছে নিয়মিত
  • কমেছে বনজের মধু বিক্রিও

মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির জেরে ক্ষতির মুখে বনদপ্তরের উদ্যান ও কানন বিভাগের ছোট ছোট পার্কগুলি

পার্কে আসতে ডিএফও-র আবেদন

রাজ্য বনদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে মানুষের বিভ্রান্তির জেরে লোকসানের শিকার হচ্ছে বনদপ্তরের পার্ক গুলি। পার্ক খোলা থাকলেও দর্শকের সংখ্যা মাত্র হাতে গোনা। তবে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে পার্কে সমস্ত খেলনায় স্যানিটাইজ করা হচ্ছে পার্ক কর্তৃপক্ষ তরফে। সরকারের কোডিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহরবাসীকে বনদপ্তর পার্কগুলিতে আসার আবেদন জানালেন উদ্যান ও কানন বিভাগের উত্তরবঙ্গ জোনের ডিএফও অঞ্জন গুহ।

কোন পার্ক বন্ধ, কোন পার্ক খোলা তা নিয়ে বিভ্রান্তি

দেশজুড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর রাজ্যজুড়ে বেশ কিছু বিষয়ের উপর বিধি নিষেধ জারি করে রাজ্যে কার্যত মিনি লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। সেই সাথে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে রাজ্য বনদপ্তরের পক্ষ রাজ্যের সমস্ত বড় চিড়িয়াখানা সাফারি পার্ক গুলিকে বন্ধের ঘোষণা করা হয়। যদিও এই নির্দেশিকায় বন্ধের তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে বনদপ্তরের উদ্যান এবং কানন বিভাগের অন্তর্গত ছোট ছোট পার্ক গুলিকে। কিন্তু মানুষের মধ্যে এই বিজ্ঞপ্তি ঘিরেই এখন বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।

কোথায় কটি পার্ক

বনদপ্তরের উদ্যান এবং কানন বিভাগের অন্তর্গত উত্তরবঙ্গ জোনে পার্ক রয়েছে ৩২ টি। যার মধ্যে ২১টি পার্কে প্রবেশে রয়েছে টিকেট। বাকি পার্কগুলি সকলের জন্য উন্মুক্ত। তেমনি শিলিগুড়ি পুরনিগমের ২৩ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত ডাবগ্রাম এলাকার শিলিগুড়ি পার্কে দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে টিকিট। বন দপ্তর সূত্রে খবর শিলিগুড়ি পার্কে প্রতিনিয়ত প্রচুর মানুষ বিকেলে প্রকৃতির মুক্ত বাতাসে বেশ খানিকটা সময় কাটাতে আসেন। শুধু তাই নয় ইঁট কাঠ কংক্রিটের এই শহরে শিশুদেরও প্রকৃতির মুক্ত বাতাসে খেলাধুলা করার বেশ কিছুটা রসদ রয়েছে এই পার্কে।

Advertisement

বন দফতরের পরিসংখ্যান

বনদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জানা গিয়েছে অন্যান্য বছরে এই সময়ে উদ্যান ও কানন বিভাগের উত্তরবঙ্গ জোনের অন্তর্গত ৩২ টি পার্কে প্রতিদিন গড়ে ৪ হাজার মানুষ আসে। কিন্তু চলতি বছর সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় অর্ধেকেরও কম। উত্তরবঙ্গের জনের অন্তর্গত ২১ টি পার্কে টিকিট মূল্যের নিরিখে পার্কে সাধারণত প্রতিদিন গড় রাজস্ব আয় হয় ৩০-৪০ হাজার টাকা। সেখানে করোনা কালে এই আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় গড়ে ২০ হাজার টাকার কাছাকাছি। বনদপ্তরের উদ্যান ও কানন বিভাগের উত্তরবঙ্গ জোনের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, করোনার এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে প্রতিনিয়ত পার্কে সমস্ত জায়গা স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। শিশুদের খেলনা ও বসার বেঞ্চ সবকিছুতেই জীবাণুনাশকের কাছে প্রতিদিনই চলে। এবং পার্কে আসা দর্শনার্থীদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়।

বিক্রিতে ভাঁটা বনজের সম্পদেও

অন্যদিকে গতবছর আনুষ্ঠানিকভাবে শিলিগুড়ি ডাবগ্রামের শিলিগুড়ি পার্ক থেকে বন উন্নয়ন নিগমের তৈরি মধু বিক্রি আনুষ্ঠানিক ভাবে বিক্রি শুরু হয়। জানা গেছে গত কয়েক মাসে বনদপ্তরের তৈরি বনজ মধু বিক্রিতে ভালই সাড়া ফেলেছে। জানাগেছে চলতি  বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে প্রায় ৫৪ কেজি করে প্রতিমাসে মধু বিক্রি হয়েছে শিলিগুড়ি পার্ক থেকে। কিন্তু আচমকাই পার্কে দর্শক কমে যাওয়ায় সেই বিক্রিতে প্রভাব পড়েছে অনেকটাই। ২৫০ গ্রাম মধুর দাম ১৩০ টাকা এবং ৫০০ গ্রামের দাম ২৪০ টাকা। বনদপ্তরের উদ্যান ও কানন বিভাগের শিলিগুড়ি রেঞ্জের রেঞ্জার মানব চক্রবর্তী বলেন, গত কয়েকদিন থেকে পার্কে দর্শনার্থীদের সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে।

কোভিড বিধি মেনেই চলছে পার্ক

কিন্তু শিলিগুড়ি পার্কে সরকারের সমস্ত রকম কোভিড বিধি মেনেই প্রবেশ করানো হয় দর্শকদের। মাস্ক ছাড়া কোনো দর্শনার্থীকে পার্কে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এছাড়া পার্কের ভিতরেও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়। একই সাথে তিনি আরও বলেন গত কয়েক মাসে শিলিগুড়ি পার্কে বনদপ্তরের তৈরি মধু ভালো বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দর্শক না থাকায় এক ধাক্কায় মধুর বিক্রি অনেকটাই কমেছে। এদিন তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শরীরের জন্য মধু অত্যন্ত কার্যকরী। তাই যদি বিক্রি বাড়ে সেক্ষেত্রে যতটা প্রয়োজন হবে ততই যোগান দেওয়া যাবে।

 

Advertisement