scorecardresearch
 

বাজার বিকোচ্ছে নকল দার্জিলিং চা, আসল-নকলের ফারাক বোঝে না কেউ

দার্জিলিংয়ের চা বলে বাজার থেকে যা নিয়ে আসছেন, তা আদৌ দার্জিলিংয়ের চা তো আপনি জানেন? দার্জিলিংয়ের চা বলে এ রাজ্যের বাজারে ঢুকে গিয়েছে নকল দার্জিলিং চা। আসলে সেটা নেপালের চা।

Advertisement
দার্জিলিং চায়ে গোলমাল দার্জিলিং চায়ে গোলমাল
হাইলাইটস
  • বাজারে বিকোচ্ছে নকল দার্জিলিং চা
  • দার্জিলিংয়ের চা বলে নেপালের চা বিকোচ্ছে
  • স্বাদে-গন্ধে বহু পিছিয়ে নিম্নমানের নেপালি চা

বাঙালির চা ছাড়া সকাল-বিকেল কাটে না। কাজ করতে গিয়ে ক্লান্ত অথবা মাঝরাতে কাজ করতে গিয়ে ঘুম তাড়াতে হলে চাকরি চাই। আর তা যদি হয় ধোঁয়া ওঠা গরম দার্জিলিংয়ের চা, তাহলে আর কোনও কথাই নেই। তাইতো বাজার ঘুরে দোকান থেকে পরখ করে দার্জিলিংয়ের চা নিয়ে এসে তবেই আমরা শান্তি পাই। আয়েসে গলা ভেজাই।

আদৌ দার্জিলিংয়ের চা কি না

কিন্তু যেটা দার্জিলিংয়ের বলে বাজার থেকে নিয়ে আসছেন তা আদৌ দার্জিলিংয়ের চা কি না! তা কি আপনি জানেন? আপনি-আমি কেউই জানেন না। কারণ দার্জিলিংয়ের চা বলে এ রাজ্যের বাজারে ঢুকে গিয়েছে নকল দার্জিলিং চা। তা হলো আসলে নেপালের চা।

দেখতে হুবহু এক

লম্বা লম্বা পাতা। গন্ধ খানিকটা কম হলেও দার্জিলিং চা এর মতোই। কিন্তু স্বাদ দার্জিলিং চা-এর ধারে কাছেও নেই। আসল দার্জিলিং চা কোনওদিন হয়তো খাননি। বা খেলেও এত আগে খেয়েছেন যে ফের নতুন করে সেই স্বাদ খুঁজতে গিয়ে নেপালের চায়েই মৌতাত করেছেন। ফলে হয়তো দার্জিলিংয়ের চা খাওয়াই হয়নি আপনার।

বেশি দামে নকল চা

আসল দার্জিলিং চায়ের পাতার দাম তুলনামূলক বেশি। পাশাপাশি তার স্বাদ-গন্ধ অনেক তীব্র এবং উঁচুমানের। কিন্তু অভিজ্ঞতা না থাকায় নেপালে নিম্নমানের চাই আমরা দার্জিলিং চা বলে আয়েশ করে খেয়ে যাচ্ছি। নিম্নমানের চা দাম কম, অথচ বেশি দাম দিয়ে আমরা সেটাকে নিয়ে আসছি।

কেউ চেনে না আসল চা

পকেটের পয়সা খরচ করে নকল চা খেতে বাধ্য হচ্ছেন আপনি। কারণ দার্জিলিং চা কেউ চেনেনই না। যাঁরা চেনেন, তাঁরা বাজারের দোকান থেকে চা কেনেন না। ফলে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে কম দামের নকল চা বেশিদামে কিনে বাড়ি নিয়ে যান।

Advertisement

ক্ষতিগ্রস্ত আসল চা উৎপাদকরা

এ বিষয়টি সকলেরই জানা রয়েছে। যেমন দার্জিলিং চায়ের বদনাম হচ্ছে, তেমনই তাদের অর্থনৈতিক একটা বড় ক্ষতি হচ্ছে। প্রকৃত দার্জিলিং চায়ের উৎপাদক-মালিকরাও ভেজাল দার্জিলিং চা বিক্রি হয় আসল চায়ের দাম পাচ্ছেন না দার্জিলিং চা এর উৎপাদকরা।

আইনি কড়াকড়ি

কেন্দ্রীয় টি বোর্ড একটি তথ্য সরবরাহ করেছে। প্রায় ৪০ মিলিয়ন কেজি নকল চা গত কয়েক বছরে নেপাল থেকে দার্জিলিং বাজারে ঢুকেছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কড়াকড়ি আইন থাকলেও, সেই আইন প্রয়োগ করার মত লোকের অভাবে আম বাঙালি ঝামেলায় পড়ছে।

রাজ্য চাইছে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ

বিষয়টি নজরে রয়েছেন রাজ্য সরকারের। কিছুদিন আগেই শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না বিষয়টি গুরুতর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে এসে এই বিষয় নিয়ে উৎপাদকদের সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমস্য়ার নিষ্পত্তি করতে সরাসরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি। এই চায়ের গুণাগুণ যাচাই করার প্রক্রিয়া চালু করা হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তা নিয়ে কোনও রকম পদক্ষেপ নজরে পড়েনি।

গুণগত মান নিয়ে তথ্য নেই

তবে নেপালের নিম্নমানের চা শরীরের পক্ষে কতটা ক্ষতিকর তা নিয়ে পরিষ্কার কোনও তথ্য নেই কারও কাছে। তবে এটা যে পরিষ্কার প্রতারণা, তা স্বীকার করেছেন সকলেই। চা উৎপাদকরা ইতিমধ্যেই হতাশা প্রকাশ করে রাজ্য সরকারের কাছে দাবি করেছেন। জানানো হয়েছে টি বোর্ডেও।

Advertisement