পাহাড়ে অপ্রাসঙ্গিক হতে চলেছেন বিমল গুরুং? এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে প্রথম তিন রাউন্ডের গণনার পর। তিনটি আসনেই তাঁরা পিছিয়ে রয়েছেন।
পাহাড়ে তিন রাউন্ডের শেষে সব আসনেই পিছিয়ে বিমল গুরুং পন্থী প্রার্থীরা। দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে এগিয়ে বিনয় পন্থী মোর্চার প্রার্থী। অন্যদিকে কার্শিয়াং এগিয়ে বিজেপি প্রার্থী। পাহাড়ি আপাতত যা গণনার ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে, তাতে বিমল গুরুংপন্থীদের পক্ষে ফিরে আসা কঠিন। এখনও অনেক রাউন্ড গণনা বাকি থাকলেও বিমল পন্থীদের প্রতি অনাস্থা ফুটে উঠছে পাহাড়বাসীর মধ্যে।
বিমল গুরুংয়ের প্রথমে আন্দোলনে নামা এবং পরে আন্দোলন, মাঝপথে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া, তারপর দীর্ঘদিন বিজেপির সমর্থনে ও আশ্রয়ে দীর্ঘদিন দিল্লি ও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর ছবি মানুষের কাছে পৌঁছে ছিল। পরে বনিবনা না হওয়ায় রাজনৈতিক স্বার্থেই তিনি ফিরে এসে তৃণমূলের হাত ধরেছেন বলে পাহাড়বাসীর মধ্যে অনেকের অভিযোগ ছিল। তবে তা কতটা ব্যাপক তা প্রমাণ হতে নির্বাচনের ফল আসা জরুরি ছিল।
প্রথম কয়েক রাউন্ড দেখলেই বোঝা যাচ্ছে তাতে বিমল গুরুংয়ের প্রতি মানুষ বিশ্বাস হারিয়েছে, সেই বিষয়টি উঠে আসছিল বডি ল্যাঙ্গুয়েজেও।
এর আগে প্রথমে কংগ্রেস তথা ইউপিএ সরকারের আমলে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন তৈরি হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে। প্রথম জিটিএ চেয়ারম্যান মনোনীত হন বিমল গুরুং। এরপর কয়েক বছরের মধ্যেই জিটিএ কে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে না দাবি তুলে আন্দোলনে নামেন। ২০১৭ সালের জুন মাস থেকে দু মাসের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিক হিংসার ঘটনা ঘটে পাহাড়ে। নেতৃত্বে বিমল গুরুং। জিটিএ এর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাতে ইস্তফা দেন গোটা জিটিএ সদস্যরা। আন্দোলনের মাঝে খুন হন এসআই অমিতাভ মালিক। এরপর খুন সহ একাধিক মামলায় ইউএপিএ ধারায় বিমল গুরুং, রোশন গিরিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এরপরই গা ঢাকা দেন বিমল ও তাঁর সহযোগীরা। এরপর নিয়মিত গোপন ডেরা থেকে তিনি বার্তা প্রকাশ করলেও সামনে আসেননি। তবে দিল্লিতে কখনও বিজেপি নেতার ছেলের বিয়েতে তাঁকে দেখা গিয়েছে।
এর মাঝে বিনয় তামাং, অনিত থাপারা রাজ্যের সঙ্গে সমঝোতা করে পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে উদ্যোগ নেন। এরপর দীর্ঘ আড়াই বছর পর বিমলকে প্রকাশ্য়ে কলকাতায় দেখা যায়, তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করে পাহাড়ে ফেরার জন্য। যা ভালভাবে নেয়নি পাহাড়ের আবেগপ্রবণ মানুষ। তার ফলই এল ভোটে।