কাউকে শাস্তি দেওয়ার চল হিসেবে আগে গায়ে বিছুটি পাতা ঘষে দেওয়ার চল ছিল। তাঁরা নির্ঘাৎ কালিম্পংয়ের (Klaimpong) লঙ্কা ডল্লে খোরসানির (Dalle Khursani) নাম শোনেননি। শুনলে এটাও শাস্তির অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হত নিশ্চিত করে বলা যায়। আপাতত মধ্যপ্রাচ্যে (Middle East) এর খুব কদর হয়েছে। জিভ থেকে মাথার চাঁদি, হাড়জ্বালানি ঝালে মন মজেছে আরব দুনিয়ার। তাঁরা এখন এটি বেশি করে আমদানি করতে চাইছেন এই লঙ্কা।
আরও পড়ুন ঃ Palmistry: আপনার হাতের রেখায় 'H'? জানুন কবে হবেন বড়লোক
এই মস্তিষ্ক বিভ্রাট ঘটানোর মতো ঝাল লঙ্কার স্থানীয় নাম ডল্লে খোারসানি। চলতি কথায় বলে শুধুই ডল্লে। ইংরেজিতে বলে রাউন্ড চিলি। তবে অন্য জায়গার রাউন্ড চিলির সঙ্গে এর পার্থক্য রয়েছে ঝালে। একটা গোটা লঙ্কা তো অনেক দূর, এক কামড় খেয়ে মুখ অবিকৃত রাখতে পারলেই গর্ব হওয়ার কথা। পাহাড়ের সব জায়গাতেই কমবেশি হলেও মূলত কালিম্পং থেকেই ওই লঙ্কা পাড়ি দিয়েছে কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে।
২২ অগাস্ট প্রথম রফতানি হয় ডল্লে
জানা গিয়েছে, কালিম্পং এক নম্বর ব্লকের চাষিদের ফলানো ডল্লে খোরসানি গত ২২ অগাস্ট প্রথম বিদেশে রফতানি করা হয়। বাগডোগরা থেকে দিল্লি হয়ে ডল্লে পৌঁছয় আরব। ভার্চুয়ালি ডল্লে পাঠানোর প্রক্রিয়ার সূচনা করেন এগ্রিকালচার অ্যান্ড প্রোসেসড ফুড প্রোডাক্টস এক্সপোর্ট ডেভলপমেন্ট এজেন্সির (অ্যাপেডা) চেয়ারম্যান ড. এম আঙ্গামুত্থু। কালিম্পং এ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যের হর্টিকালচার দপ্তরের আধিকারিকদের পাশাপাশি চাষিদের প্রতিনিধিরাও।
পাহাড়-ডুয়ার্স চাইছে ডল্লে রফতানি করে বিদেশি মুদ্রা আয় করতে
একবার ডল্লের স্বাদ পেতেই আরও বরাত আসতে শুরু করেছে। জিআই ট্যাগের তকমা আগেই মিলেছিল। ফলে অরিজিনালিটি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। এবার তাই পাহাড়ের অন্য ডল্লে উৎপাদকদের পাশাপাশি ডুয়ার্স ও তরাইয়ের চাষিরাও চাইছে বেশি করে ডল্লে ফলিয়ে আরব পাঠাতে। কালিম্পং এর জেলা হর্টিকালচার অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, ডল্লের চাহিদা প্রচুর। যত চাহিদা তত ফসল ফলানো হয় না। তাই নিয়মিত ও নিরবচ্ছিন্ন রফতানি জারি রাখতে পরিকল্পনা করে কাজ করতে হবে। এ নিয়ে কালিম্পংয়ে রপ্তানিকারীদের সঙ্গে, উৎপাদক, আমাদের দপ্তর ও রপ্তানি বাণিজ্যের প্রসারে গঠিত কেন্দ্রীয় সংস্থা অ্যাপেডার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
কী কী কাজ লাগে ডল্লে?
এমনিতে সবজি রান্না করা ছাড়াও কালিম্পং এর ডাল্লে খুরসানি আচার ও আইসক্রিমে ফ্লেভার যোগ করতে ব্যবহার করা যায়। ওষধি গুণও রয়েছে এই লঙ্কার। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর বলেই বিশেষজ্ঞ মহল জানাচ্ছেন।
কত ডল্লে ফলে বছরে?
কালিম্পংয়ের পাশাপাশি পাহাড় ও পাহাড় লাগোয়া ডুয়ার্সে ব্যপক চাষ হয় এই লঙ্কার। আপাতত বছরে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ টন মতো ডাল্লে খুরসানি উতপাদিত হয়। মোট চাষের পরিধি ১০০ হেক্টরের মতো। খোলা বাজারে ওই লংকার দাম কিলো প্রতি ৪০০ টাকা। যদিও রফতানি করলে দ্বিগুণ লাভের সুযোগ রয়েছে।