এক সময় উত্তরবঙ্গ তথা গোটা দেশ কাঁপিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল তাদের সংগঠন কামতাপুর পিপলস পার্টি। তারপর ধীরে ধীরে তিস্তা-মহানন্দা দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে। আন্দোলনের ঝাঁঝ যেমন কমেছে, বহু রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর নতুন করে নেতৃত্ব তৈরি না হওয়াতে সংগঠনও দুর্বল হয়েছে। মাঝে দল ভেঙে গিয়েছিল। পরে আবার তা একত্র হয়।
ফের সক্রিয় বদলে যাওয়া কেপিপি
দীর্ঘদিন পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবি ওঠেনি। উঠলেও তা খাতায় কলমেই থেকে গিয়েছে। কখনও তা দানা বাঁধেনি। নেতৃত্বদের মধ্যে কেউ প্রয়াত হয়েছেন কেউ রাজ্য সরকারের সঙ্গে সদ্ভাব রেখে চলার দিকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। কারও কারও বিজেপির সঙ্গে সখ্যতা নিয়েও বিভিন্ন সময়ে নিউজপ্রিন্ট খরচ হয়েছে। মোট কথা আগের মতো আক্রমণাত্মক আর নেই। বদলে গিয়েছে কেপিপি।
সাধারণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে পথে নামছে কেপিপি
অবশেষে দীর্ঘ বছর পর ফের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে সামনে এসেছে কেপিপি। ১২ মে গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে অবরোধ করবে বলে ঘোষণা করেছেন। তারা বিভিন্ন জেলা ও মহানগরে পথ অবরোধের কর্মসূচি নিয়েছে। ১২ মে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অবরোধ চলবে। সব জেলার বিভিন্ন রাজ্য ও জাতীয় সড়কে আলাদা আলাদাভাবে। কিন্তু একই সময়ে অবরোধ হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দলের সভাপতির দাবি
দলের সভাপতি নিখিল রায় জানিয়েছেন, জ্বালানি তেল, রান্নার গ্যাস, নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়তে থাকায় সাধারণ মানুষের অবস্থা এখন নাজেহাল। বিভিন্ন এলাকায় দুর্নীতির বাড়ছে। যার সামনা করেই মানুষকে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। উত্তরবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসা হচ্ছে। যার প্রতিবাদে এই অবরোধ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শক্তি পরীক্ষা করছে কেপিপি
মনে করা হচ্ছে সাধারণ মানুষের সাধারণ সমস্যা নিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামাঞ্চলে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি যাচাই করে নিতে চাইছে কেপিপি। তারা সরাসরি হোক অথবা কোনও দলের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচনে লড়তে চাইছে বলেও সূত্রের খবর। পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরাসরি সেই পথে নামলে রাজ্য সরকারের রোষানলে পড়তে হবে। ফের ধরপাকড় মুখে পড়তে হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে তালাক ঘুরিয়ে এইভাবে আন্দোলনে নামতে চাইছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আলাদা রাজ্য নিয়ে কী বলছেন নিখিল?
নিখিলবাবুর দাবি, আলাদা রাজ্যের দাবি আমাদের বরাবরই আছে। আমরা কামতাপুরিদের জন্য আলাদা রাজ্য চেয়েছিস এমন নয়। আমরা উন্নয়ন, প্রগতির স্বার্থে একটি পৃথক রাজ্য চেয়েছি। তবে আপাতত সমস্ত মানুষের জন্য নিত্য সমস্যার বিরুদ্ধে এগিয়ে এসেছি। আপাতত অবরোধ হবে জনস্বার্থে। পরে কী করা হবে, তা পরে ঠিক করা হবে।