৬ বছরের শিশুকন্যাকে দরজা বন্ধ করে নৃশংসভাবে কেটে টুকরো টুকরো করল মা। এরপর নিজের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন মহিলা। ঘটনাটি আলিপুরদুয়ারের জটেশ্বর এলাকায়। ঘটনায় এলাকার আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কে কাঁপছেন।
খুনের কারণ অজানা
বৃহস্পতিবার সকালে শিশুকন্যাকে কুপিয়ে খুনের ঘটনাটি ঘটে ফালাকাটার জটেশ্বরের কুটিরপাড়ায়। মায়ের হাতে এভাবে নিজের শিশু কন্যা খুন হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তবে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে এখনও পর্যন্ত খুনের সঠিক কারণ জানতে পারেনি।
তদন্তে নেমেছে পুলিশ
নিজের শিশু কন্যাকে টুকরো টুকরো করে কেটে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মা শান্তশ্রী বর্মন (২৬)কে চিকিৎসার জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ঘটনার পর প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি শিশু কন্যাটির মা মানসিক কিছুটা ভারসাম্যহীন ছিলেন। মহিলার পরিবার ও প্রতিবেশীদের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
আচমকা ঘটে যায় পুরো ঘটনা
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জটেশ্বর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জটেশ্বর বাজারের কুটিরপাড়ার ওই মহিলা এদিন সকাল ৮ টা নাগাদ আচমকা ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। এরপর ধারালো একটি ছুরি দিয়ে নিজের ছ’বছরের শিশু কন্যাকে কুপিয়ে টুকরো করে খুন করেন বলে অভিযোগ। শিশুকন্যাকে খুনের পর শান্তশ্রী দেবী নিজের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দিয়ে নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন।
দরজা ভেঙে রক্তাক্ত মা ও মেয়েকে উদ্ধার করা হয়
খুনের সময় শিশু কন্যাটির আর্ত চিৎকার শুনে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে আসেন। কিন্তু ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় প্রতিবেশীরা প্রথমে ঘরে ঢুকতে পারেনি। শেষে প্রতিবেশীরা ঘরের দরজা ভেঙে রক্তাক্ত মা সহ শিশুটিকে উদ্ধার করে বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে। পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হওয়ায় মা শান্তশ্রীদেবীকে পরে বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
খুনে হতভম্ব অভিযুক্তের পরিবারও
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তশ্রীদেবীরও অবস্থাও আশঙ্কাজনক। শান্তশ্রীদেবীর দাদা তারাপদ বর্মন বলেন, ন’বছর আগে তাঁর বোনের বিয়ে হয়েছিল ফালাকাটার গুয়াবরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মালসাগাঁও গ্রামে। বোনের মানসিক সমস্যা ছিল। তাই বলে ছোট্ট ভাগ্নিকে এভাবে খুন করে ফেলবে ভাবতেই পারছি না। প্রত্যক্ষদর্শী হিতেন অধিকারী বলেন, শিশুটির আর্ত চিৎকার শুনে ছুটে যাই। ঘরের দরজা ভেঙে মা ও শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা!
এদিকে, তদন্তে নেমে পুলিশ ধারালো ছুরিটি উদ্ধার করেছে।পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মানসিক ভারসাম্যের কারণে শান্তশ্রীদেবী সংসার করতে পারেননি। ছ’মাস আগে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মালসাগাঁও থেকে শান্তশ্রীদেবীকে জটেশ্বরের কুটিরপাড়ায় বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। জটেশ্বর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান সমরেশ পাল বলেন, খুবই দু:খজনক ঘটনা। পুলিশ বিষয় খতিয়ে দেখছে।