ডুয়ার্স মানেই জঙ্গল। কোথাও হালকা পাহাড় বা পাহাড়ের পাদদেশ। পাহাড়ের তুলনায় ডুয়ার্সের বৈচিত্র্য় একটু কম। এখন ডুয়ার্সের পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র লাটাগুড়িতে নতুন জায়গা। যা আবিষ্কার করেছেন পর্যটকরাই। সেটাই এখন 'হটস্পট'। ঘুরতে গিয়ে অলস সময় কাটানো, ছবি তোলা তো আছেই, মাঝে মধ্যে মিলে যাচ্ছে জলখেতে আসা বন্যপ্রাণীও। ফলে সোনায় সোহাগা। আসুন দেখে নিই কীভাবে যাবেন, খরচ কত?
আরও পড়ুনঃ এ যেন দুয়ারে কাঞ্চনজঙ্ঘা, উত্তরবঙ্গের সব জায়গায় এখন ট্রেন্ডিং এই গিরিশিখর
শীত এখনও না ঢুকলেও শীতের আমেজ এখন উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সের ঝোপে-ঝাড়ে-জঙ্গলে-গাছের পাতায় ভাল রকম টের পাওয়া যাচ্ছে। তাপমাত্রা যত কমছে সাধারণ মানুষের মনে ফূর্তি তত জেগে উঠছে। মন বলছে চরৈবেতি। তা ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করার আগে কোথায় যাবেন তা ঠিক করতে হবে তো! কয়েকদিন পরেই পিকনিক দলের ভিড় উপচে পড়বে ডুয়ার্সের বিভিন্ন নদীর পাড়ে। সে রকমই একটি জায়গা মাল ব্লকের কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার লালপুল। কয়েক বছর ধরে লালপুলের সৌন্দর্যের টানে হাজির হচ্ছেন স্থানীয়দের পাশাপাশি বাইরের পর্যটকরাও। এখনও পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি এই এলাকা। তবে সুযোগ আছে। স্থানীয়দের আশা, এই লালপুলকে ব্যবহার করতে পারলে এটিও অফবিট ডেস্টিনেশনে পরিণত হবে।
লাটাগুড়িতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা টোটোয় ভোরে এবং বিকেলের দিকে লালপুলে হাজির হচ্ছেন। লাটাগুড়ি বনাঞ্চল থেকে বেরিয়ে আসা হাতি-হরিণেের দেখাও মিলছে। কখনও কখনও গণ্ডারও চলে আসে বলে স্থানীয়দের দাবি। লালপুলের পাশেই বেসরকারি একাধিক রিসর্ট রয়েছে। ফলে তাদের পোয়াবারো। তবে সরকারি উদ্যোগ হলে আর ভালও হয় বলে এলাকাবাসী জানাচ্ছেন। কারণ কোথাও লালপুল বলে প্রচার হয় না। লাটাগুড়ির নামেই এর প্রচার। তবে আলাদা করে প্রচার হলে তা আরও ভাল হতো বলে মনে করছেন তাঁরা।
একদিকে নেওড়া নদী -একদিকে লাটাগুড়ির জঙ্গল
যে নদীর উপর লালপুল, সেটি ডুয়ার্সের পরিচিত নেওড়া নদী। একদিকে অন্যদিকে লাটাগুড়ির বনাঞ্চল। এখনও নিস্তব্ধ পরিবেশ। জানা-অজানা পাখির ডাক আর নির্জনতাই এখানকার ইউনিক সেলিং পয়েন্ট। আপাতত এটি সেলফি স্পট, হালকা সময় কাটানো কিংবা পিকনিকের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত। গত বছর পঞ্চায়েতের তরফে পর্যটকদের জন্য শৌচাগার ও পানীয় জলের বন্দোবস্ত করে দিয়েছে। এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠী স্পটটি পরিচালনা করে।
আরও পড়ুনঃ এই মাসে জন্ম? জীবনসঙ্গী পাওয়া কঠিন হতে পারে
ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আগে শুধু লোকেরা পিকনিক করতে আসতেন, এখন বাইরের পর্যটকদের গাড়িচালকরা এখানে সাইট সিইং-এর জন্য নিয়ে আসেন। তবে তাও খুব কম। এখন সরকারিভাবে প্রমোশন ও প্রচার করা হলে এটি অন্যতম পছন্দের জায়গা হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে এর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন পঞ্চায়েত প্রধান ফুলমণি ওরাওঁ। জেলা পরিষদ, পর্যটন দপ্তর এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের কাছেও এ বিষয়ে আবেদন জানানো হবে বলে জানান। লালপুলকে ঘিরে নৌকা বিহার ও অন্যান্য বিনোদনের ব্যবস্থা চাইছেন স্থানীয়রা। বছর ভর পর্যটকদের আনাগোনা হত।
খরচ?
খরচ লাটাগুড়ির রিসর্টের যা খরচ তাই। ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে রিসর্ট মেলে। আর সেখান থেকে টোটোয় ৫০ টাকা দিয়ে ঘুরে আসতে পারবেন এখানে। পাশের রিসর্টগুলি পেলে টোটোভাড়াও লাগবে না। তাহলে এবার আর সময় নষ্ট নয়। একবার ঘুরেই আসুন।