নবদ্বীপের মতোই দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের দইয়ের স্বতন্ত্র স্বাদ ও পরিচিতি রয়েছে। গোটা রাজ্যে এমনকী রাজ্যের বাইরেও আগে দই পাঠানো হতো। কিন্তু বিপণনের অভাবে তা অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে।অনেক জায়গাতেই গঙ্গারামপুরের বিশেষ পাঠানো হয় প্রতি বছরই। তা সামান্য পরিমাণে। আপাতত শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ির কয়েকটি দোকানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই দই নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা হয়। তা ছাড়া এখানে তৈরি দই বাণিজ্যিকভাবে আর কোথাও পাঠানো হয় না।
গঙ্গারামপুরের নামে বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় দই বিক্রি হয়
এখন গঙ্গারামপুরের দই পেতে হলে ওই দুই শহরে নতুবা গঙ্গারামপুরেই আসতে হয়। পাশের শহর এই জেলার জেলা সদর বালুরঘাটেও তা পাওয়া যায় না, কারণ সেখানেও খুব ভাল দই তৈরি হয়। তাই চাহিদা কম। বাইরে যেসব জায়গায় গঙ্গারামপুর দই বলে বিক্রি হয়, নবদ্বীপের মতোই সেখানকার স্থানীয় দই বিক্রি করে দেওয়া হয় ওই দুই বিখ্যাত দইয়ের নাম করে বলে অভিযোগ এখানকারই দই বিক্রেতাদের। ফলে গঙ্গারামপুর এর নাম ও যশ দুইই নষ্ট হচ্ছে।
এবার অনলাইনে দই বিক্রি করবে জেলা পরিষদ
এই পরিস্থিতি গঙ্গারামপুরের দই এর সুনাম রক্ষা করতে এবং পাশাপাশি জেলা পরিষদের আয় বাড়াতে অনলাইনে গঙ্গারামপুরের দই ডেলিভারি দেবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ। সরাসরি রাজ্যের যে কোনও জায়গায় গ্রাহকের বাড়িতে পৌঁছে যাবে দই। শিলিগুড়ি হোক অথবা কলকাতা, ঘরে বসেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের ওয়েবসাইটে গিয়ে অর্ডার করে দিলেই হল, দুয়ারে পৌঁছাবে এই সুস্বাদু দই।
ওয়েবসাইড ডেভলপমেন্টের কাজ শুরু হয়েছে
ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদের আইটি কর্মীরা ওয়েবসাইটটিকে আপডেট করা সহ সাজানোর কাজ শুরু করেছেন। এটির রেগুলার এক্টিভিটিস এর জন্য মনিটরিং এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগানো হয়েছে ।কর্পোরেট ধাঁচে কাজ করতে চাইছে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। গঙ্গারামপুরের নয়াবাজারে তৈরি মিষ্টি দইয়ের কদর উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়।
বিপণনের অভাবে মার খাচ্ছে এই ঐতিহ্যশালী দই
অথচ সুষ্ঠু বিপণনের অভাবে সেই দই ঠিকঠাক বাজারজাত হয়নি বলে আক্ষেপ রয়েছে দই শিল্পীদের। কারিগররা পাননি সরকারি আনুকূল্য। একটা সময়ে কয়েকশো পরিবার দই তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এখন সাকুল্যে ৪০ থেকে ৫০ টি পরিবার দই তৈরি করে। দোকানগুলি থেকে দৈনিক তিন থেকে চার কুইন্ট্যাল দই বিক্রি হয়।” কয়েকজন ব্যবসায়ী নিজের উদ্যোগে শিলিগুড়িগামী রাতের বাসে তুলে দেন দইয়ের বাক্স। সব মিলিয়ে প্রায় ৫ কুইন্ট্যাল দই যায়। শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ির কিছু দোকানে গঙ্গারামপুরের দই বিক্রি হয়।
অথচ এত সুস্বাদু দই, চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে মেলে না। শত বছর প্রাচীন দইকে ফের ঘরের দোরগোড়ায় এনে জেলা পরিষদ সেই আক্ষেপ মেটাতে চাইছে।