নিজের জেতা আসন থেকে টিকিট না পেয়ে ১৮ নং ওয়ার্ড থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা তথা ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর নিখিল সাহানি সহ আরও চারজন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা। শেষমেষ গৌতম দেবকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার নিখিল সাহানি সস্ত্রীক শিলিগুড়ি মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে এসে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। বাকিদের অবশ্য দল মান ভাঙাতে পারেনি।
ক্ষোভ পুরোপুরি কমেনি
শিলিগুড়ি পুরনিগমের নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই দলের অন্দরে শুরু হয় ক্ষোভ বিক্ষোভ। দল থেকে টিকিট না পেয়ে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করে বেশ কয়েকজন তৃণমূল। তার মধ্যে ছিলেন ১৮ নং ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান নিখিল সাহানি, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা তথা রাজ্য সম্পাদক বিকাশ সরকার সহ আরও কয়েকজন।
বাকিদের রাগ কমেনি
গত দু'বার পুর নির্বাচনে ওই ওয়ার্ড থেকেই বিপুল ভোটে জিতেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার তাকে প্রার্থী করেনি দল। যার ফলে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা করেছিলেন। শুধু নিখিল নয়, দলের কড়া নির্দেশকে অমান্য করে ১ নম্বর ওয়ার্ডের থেকে তৃণমূল নেতা মাসুম কাপুর, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের থেকে রাজ্য যুব সম্পাদক বিকাশ সরকার, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেত্রী রিনা দাস ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেত্রী মল্লিকা দেবনাথ একইভাবে টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা করেছিলেন।
নিখিল ছিলেন ফ্যাক্টর
যার ফলে অস্বস্তিতে পরে যায় তৃণমূল কংগ্রেস। বিক্ষুব্ধদের মনোনয়ন প্রত্যাহার নিয়ে দলের ভেতরে চলে দফায় দফায় আলোচনা। শেষমেষ অন্যরা মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলেও একমাত্র নিখিল সাহানি দলের আবেদনে সাড়া দেন। জানা গিয়েছে গৌতম দেবের এবং জোড়াসাঁকোর বিধায়ক তথা তৃণমূলের হিন্দি সেলের চেয়ারম্যান বিবেক গুপ্তার আবেদনে সাড়া দিয়ে নিখিল সাহানি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন।
কোন অঙ্কে রাজি নিখিল?
প্রশ্ন হচ্ছে কোন অঙ্কে নিখিলকে রাজি করালো দল? যা অন্যরা মেনে নিলেন না। গৌতম দেবের সঙ্গে নিখিলের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। একইভাবে বিকাশ সরকারের সঙ্গেও গৌতম দেবের মধুর সম্পর্ক। খানিকটা সেই কারণেই অনেকে টিকিট পাননি বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ দলের মধ্যে জেলায় শেষ কথা থেকে প্রায় পিছনের সারিতে চলে যাওয়া গৌতম দেব এখন দলের মধ্যে ছড়ি ঘোরাতে পারছেন না। সভাপতি পদে তাঁর সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই থাকা আরেক প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মেয়ে পাপিয়া ঘোষ। সঙ্গে কংগ্রেস থেকে দ্বিতীয়বার তৃণমূলে আসা অলক চক্রবর্তী এখন চেয়ারম্যান। ফলে তাঁর কথা কেউ শুনছে না।
কী বলছেন নিখিল-গৌতম?
নিখিল সাহানি যদিও বলেন, "আমাকে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব বুঝিয়েছে। সেজন্য দলের কথা মাথায় রেখে আমি মনোনয়ন প্রত্যাহার করলাম।" তবে কী বুঝিয়েছে দল তা অবশ্য খোলসা করেননি তিনি। অন্যদিকে গৌতম দেব বলেন, "নিখিল প্রথম দিন থেকে দলে আছে। তাঁর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। সেই মতো মনোনয়ন প্রত্যাহার করল। সেজন্য ওকে ধন্যবাদ। বাকিদেরও আমি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। তাঁরা শোনেননি। কিছু করার নেই। দল যা ভালো বুঝবে পদক্ষেপ করবে।"