একে অনিয়মিত আবহাওয়া, প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা এবং সরকারি উদাসীনতায় যখন বিপন্ন আম চাষীরা, ঠিক তখনই সরকারি নির্দেশে রাজ্য জুড়ে লক ডাউনের ঘোষণায় কার্যত পথে বসেছেন মালদা জেলার প্রায় এক লক্ষ আমচাষি।
দক্ষিণের আম বাজার ধরেছে
বর্তমানে মালদার আমকে পিছনে ফেলে এখন জেলার বাজার দখল করেছে দক্ষিণের আম। বিভিন্ন বাজারে শোভা পাচ্ছে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন প্রজাতির আম, এই সমস্ত আমের রং আর গন্ধে আকৃষ্ট ক্রেতারা।
অন্য দিকে সরকারি সাহায্য বা তেমন কোনো প্রযুক্তিগত শিক্ষা বা উদ্যানপালন বিভাগ এর ট্রেনিং না পাওয়ায় প্রতিবছরই মার খাচ্ছে মালদা জেলার আমের গুণগত মান।
কদর কমেছে মালদার আমের
এক সময় মালদার আমের খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও এই জেলার আম পাড়ি দিত বিদেশের বহু জায়গায়। কিন্তু দিনের পর দিন বাগানের যত্ন না নেওয়ায়, অনিয়ন্ত্রিতভাবে কীটনাশক এবং রাসায়নিক এর ব্যবহারে কমছে, এই জেলার আমের কদর।
রপ্তানি বন্ধ
আগে প্রচুর পরিমাণ বাংলাদেশের রপ্তানি হলেও, হঠাৎ করেই রপ্তানি শুল্ক বেড়ে যাওয়া এবং গুণগত মান কমার ফলে প্রতিবেশী দেশেও বিগত কয়েক বছর ধরে বন্ধ রপ্তানি। এক সময় মালদার আম জেলার সীমান্ত পেরিয়ে রপ্তানি হতো ভারতবর্ষের বিভিন্ন জেলায়, সরকারি উদ্যোগে কিছু আম পরীক্ষামূলকভাবে পাঠানো হতো বিদেশে। লকডাউন এর কারণে এখন তাও বন্ধ।
দিশেহারা আম চাষিরা
জেলার অর্থনীতির ক্ষেত্রে আম এবং রেশমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় জেলা রেশম শিল্প যখন প্রায় বিলুপ্তির পথে, তখন আমের এই বেহাল অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ জেলার অর্থনীতির সাথে সাথে এই চাষের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি ও।বর্তমানে প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। কিন্তু এত বিপুল সংখ্যক আমচাষীদের প্রশিক্ষিত করা বা তাদের গুণগত মান সম্পর্কে সচেতনতা অভাবে দেশে-বিদেশে মার খাচ্ছে জেলার এই অর্থকরী ফল।ফলে কার্যত দিশেহারা জেলার আম চাষিরা।
পিছিয়ে পড়ছেন চাষিরা
প্রতিবারই নির্বাচনের সময় অন্যান্য ইস্যুর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে উঠে আসে জেলার আম চাষিদের বঞ্চনার ইতিহাস। প্রতিবার নির্বাচন আসে যায়, বিধায়ক, সাংসদ পরিবর্তন হয়। শুধু পরিবর্তন হয় না জেলার হতভাগ্য এইসব আম চাষিদের ভাগ্য লিখন। পিছিয়ে পড়া এই জেলা, অর্থনৈতিকভাবে আরও কিছুটা পিছিয়ে পিছিয়ে পড়ে।