শিলিগুড়ি পুরনিগমের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর থেকে দলে প্রার্থী নিয়ে বেড়েই চলেছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। টিকিট না পেয়ে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন পত্র তুললেন দুই তৃণমূলের নেতা।
বিক্ষুব্ধ বিকাশ ও নিখিল
আগের দিনই তালিকা প্রকাশ করার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা বিকাশ সরকার তাঁর দলবল নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। অন্যদিকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১০ বছরের বিদায়ী কাউন্সিলর নিখিল সাহানিকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। তিনিও বিক্ষুব্ধের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন।
টিকিট না পেলে নির্দল হিসেবে লড়বেন
এদিন তাঁরা দুজনই নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন তুলেছেন। তবে মনোনয়ন তুললেও তাঁদের আশা দল তাঁদের বিষয়টি বিবেচনা করে তাঁদেরই ফের প্রার্থী করবে। নইলে নির্দল হিসেবে লড়বেন তাঁরা। তবে তাদের এই মনোনয়নকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের মধ্যে শুরু হয়েছে জল্পনা। শুরু হয়েছে কোন্দলও। এই দুই নেতা আসলে প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব ঘনিষ্ঠ বলে খবর। ফলে নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
নিখিলের সমর্থনে বিক্ষোভ অনুগামীদের
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হবার পর থেকেই শিলিগুড়ি পুরনিগমের ২৪ নং ও ১৮ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী নিয়ে রোজই লেগে রয়েছে অশান্তি ও বিক্ষোভ। চলতি শিলিগুড়ি পুরনিগমের নির্বাচনে এবার ১৮ নং ওয়ার্ড থেকে তৃণমূল প্রার্থী করছে হিন্দি বলয়েরই সঞ্জয় শর্মাকে। যার জেরে ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর নিখিল সাহানির নাম বাদ গিয়েছে। আর এতে ক্ষুব্ধ নিখিল অনুগামীদের দাবি, ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী করতে হবে প্রাক্তন কাউন্সিলর নিখিল সাহানিকেই। এই দাবিতে এদিন ক্ষোভ বিক্ষোভ দেখায় এলাকাবাসীরা। বিকেলে রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে শিলিগুড়ি বাগরাকোট এলাকায় বিক্ষোভ দেখায় এলাকাবাসী। এদিন সকালেই মনোনয়নপত্র তোলেন প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা ৪ নম্বর বরোর বিদায়ী চেয়ারম্যান নিখিল সাহানি ।
দলের উপর চাপ বাড়াচ্ছেন বিকাশবাবু
অন্যদিকে একইভাবে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ২৪ নং ওয়ার্ডে শাসকদলের প্রার্থী করা হয়েছে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা বর্ষীয়ান নেতা প্রতুল চক্রবর্তীকে। ওই ওয়ার্ড থেকে বিজেপি শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে প্রার্থী করা হয়েছে। তবে ওই ওয়ার্ডে যেহেতু রাজ্য যুব তৃণমূলের কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সরকার কেপ্রার্থী করা হয়নি তাই বিকাশ অনুগামীরা বিকাশ সরকারকে প্রার্থী করার দাবিতে লাগাতার বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। এদিন বিকাশবাবুও ব্যক্তিগতভাবে মনোনয়নপত্র তোলেন।
বিকাশ উবাচ
এদিন বিকাশ সরকার বলেন, "আমি কোনওদিনই দল বিরোধী কাজ করিনি। দলের জন্য সময় দিয়েও টিকিট পাইনি। এলাকাবাসীরা আমাকে জোর করছে টিকিট না পেলে নির্দল হিসেবে দাঁড়াতে। আমি এলাকাবাসীর কথা মাথায় রেখে মনোনয়ন পত্র তুললাম। বাকিটা দল বিবেচনা করুক।
নিখিল উক্তি
অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে নিখিল সাহানি বলেন, "আমাকে প্রার্থী করা নিয়ে দল বিবেচনা করছে। বহিরাগত ও দুবার পরাজিত প্রার্থীকে এলাকাবাসীরা চাইছে না। সময় কম দেখে মনোনয়ন তুললাম। বাকিটা দল বিবেচনা করুক। এলাকাবাসীরা চাইলে দলের টিকিট না পেলে নির্দল হিসেবে লড়ব।"
অন্য হেভিওয়েটরা
অপরদিকে এদিন শিলিগুড়ির মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন শিলিগুড়ির বিধায়ককে শংকর ঘোষ সহ বিজেপি প্রার্থীরা। একই সঙ্গে প্রাক্তন বিধায়ক ও প্রদেশ কংগ্রেস কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর মালাকারের সঙ্গে গিয়ে ২৬ নং ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন তাঁর মেয়ে রুচিরা মালাকার। পুরনিগমের ১১ ও ১২ নং ওয়ার্ড থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা নান্টু পাল ও তাঁর স্ত্রী মঞ্জুশ্রী পাল।