আচমকা ফোনে হতে পারেন আপনিও প্রার্থী
আচমকা তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব নিয়ে ফোন আসলে ঘাবড়াবার কিছু নেই। আসন্ন পুর নির্বাচনে শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রার্থী হতে স্বচ্ছ এবং প্রভাবশালী লোক খুঁজছে ঘাসফুল বাহিনী। তা দলের পুরনো কর্মী কিংবা রাজনৈতিক যোগসূত্র না থাকলেও মিলতে পারে কাউন্সিলর হওয়ার সুযোগ। এই লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে আইপ্যাক।
শিলিগুড়িতে আটকে গিয়েছে ঘাসফুলের অশ্বমেধের ঘোড়া
রাজ্য জুড়ে জয়পতাকা উড়লেও শিলিগুড়িতে এসে বারবার আটকে গিয়েছে তৃণমূলের অশ্বমেধের ঘোড়া। অজ্ঞাত কারণে তৃণমূলকে দূরে সরিয়ে রেখেছে শিলিগুড়ি এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। শিলিগুড়ি কিংবা শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে এখনও পর্যন্ত ক্ষমতা অধরা ঘাসফুল বাহিনীর কাছে।
স্থানীয় নেতৃত্বে অনাস্থা শহরবাসীর
এর কারণ হিসেবে বারবার নানা রকম কারণ উঠে আসছে। বিভিন্ন তথ্যের খোঁজে হন্যে হয়ে জানার চেষ্টা করছে এখানকার মানুষ। খোঁজ লাগিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। শেষমেষ স্থানীয় নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা তৃণমূলকে বারবার বঞ্চিত করছে বলে শিলিগুড়ি শহর উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বলে রিপোর্ট মিলেছে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের হাত ধরে।
ভরসা সেই পিকে
প্রশান্ত কিশোরের উপরই ভরসা করেই এবার শিলিগুড়ি পুরভোটে প্রার্থী বাছাই করবে তৃণমূল। শিক্ষক থেকে খেলোয়াড়, রাজনীতিবিদ থেকে মিঠাইওয়ালা কিংবা সামাজিক কর্মী থেকে ব্যবসায়ী। যে কেউ, যে কোনও সময় টিম পিকের নজরে পড়ে যেতে পারেন। আর একবার নজর পড়লেই কেল্লাফতে। টিকিটের প্রস্তাব আসবে আপনার কাছে। এমনটাই জানা যাচ্ছে তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই।
আতঙ্ক ঘাসফুল শিবিরে
প্রকাশ্যে কেউ অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। পাছে দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের রোষ নজরে পড়তে হয়। তাই প্রকাশ্যে মুখে কুলুপ আঁটেন তাঁরা। ভিতরে ভিতরে অনেকেই ক্ষোভ এবং আশঙ্কার দোলাচলে ভুগছেন। বিশেষ করে যে সমস্ত নেতা-কর্মীরা জমি দখল, এলাকা দখল করে বিক্রিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মদত দিয়ে চলেছেন, তাঁদের থরহরিকম্প অবস্থা। এই বুঝি কাউন্সিলর পদটি যায়।
অনেকেই বাতিল, আসতে পারে নতুন মুখ
গতবারের অনেক কাউন্সিলরই ইতিমধ্যে পিকের রিপোর্টে বাতিলের খাতায় চলে গিয়েছে। এর মধ্যে যেমন রয়েছে শিলিগুড়ি পুরনিগমের সংযোজিত এলাকার বেশ কিছু বিদায়ী কাউন্সিলর, তেমনই মূল শহরের দার্জিলিং জেলার অন্তর্ভুক্ত ওয়ার্ডগুলির মধ্যে বেশ কয়েকজনের টিকিট এবার বাতিল হতে চলেছে বলে খবর। এর মধ্যে ২৪ নম্বর ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল মারা গিয়েছেন, এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর তৃণমূল ছেড়ে নির্দল প্রার্থী অরবিন্দ ঘোষ আগেই মারা গিয়েছেন। ফলে এই দুই জায়গায় নতুন করে প্রার্থী খুঁজতে হবে সব দলকেই। তৃণমূলের কাছে অবশ্য দলীয় কর্তৃত্ব ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ খানিকটা বেশিই।
সব দেখবে উপরমহল
জানা গিয়েছে যে স্থানীয় স্তরে কোনও রকম বাছাই এবার করা হচ্ছে না। সবটাই হবে থার্ড পার্টি সিস্টেমে।রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই নির্ভর করবে বর্তমান কাউন্সিলর কারা টিকিট পাবেন, কাদের বাতিল করা হবে, কাদের নতুন করে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী করা হবে। বিশেষ করে বেশ কিছু এলাকায় দলীয় কোন্দলে গতবার কাউন্সিলর পদ ছাড়া হয়েছিল, তৃণমূলের সেগুলিকে নজর রাখা হচ্ছে।
আগের তালিকাও গুরুত্বহীন
এর আগে পুরভোটের জন্য বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নাম চাওয়া হয়েছিল। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ভোট হয়নি। ফলে সেই তালিকাও মোটামুটি এখন খরচের খাতায়। নতুন তালিকা তৈরির মধ্যে সমস্ত নাম যাচাই করা হলেও সেগুলিকে মান্যতা দেওয়া হবে বলে অনেকেই মনে করছেন না। তবে এই সিদ্ধান্তে তৃণমূলের সবাই অখুশি তা নয়। একটা অংশ এতে ব্যপক খুশি হয়েছেন, অন্তত দুর্নীতির দায় তাঁদের নিতে হবে না বলে।