অবশেষে স্বপ্নপূরণ। বিধানসভা ভোটে হারার এক বছরের মধ্যে নিজের সম্মান পুনরুদ্ধার করলেন তৃণমূলের দীর্ঘদিনের সৈনিক গৌতম দেব। শিলিগুড়ির নতুন মেয়র হতে চলেছেন তিনি। খোদ মুখ্য়মন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছেন তাঁর নাম। ফলে খুশির জোয়ার খানিকটা বেশি।
শাপমোচন হলো গৌতম দেবের
সাংগঠনিক পদ প্রায় সবই গিয়েছে। জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দুর্বল সংগঠনের কারণে। বারবার লড়াই করে হার স্বীকার করতে হয়েছিল। শিলিগুড়ি পৌরনিগম এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ প্রবল তৃণমূল ঝড়েও অটুট ছিল বামেদের গড় হিসেবে। অবশেষে শাপমোচন হলো। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক মূলস্রোতে প্রবলভাবে ফিরলেন প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন ও পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব।
জিতে মাটিতে পা রাখার বার্তা গৌতমের
জিতে অবশ্য দলের আদেশ এবং দলের নির্দেশেই চলবেন বলে জানিয়ে দিলেন গৌতম দেব। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকেই মেয়র হিসেবে ঘোষণা করেছেন শুনে আপ্লুত গৌতমবাবু জানিয়ে দিলেন, "আমি বরাবরই দিদির কাছ থেকে বাড়তি প্রশ্রয় পেয়ে আসছি। তবে দিদি যদি এ কথা বলে থাকেন সেটা মাথা পেতে নেব। শিলিগুড়ির উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূল কাজ করতে হবে। মানুষের কাছে আরও নত হয়ে যেতে হবে।"
সমস্ত অপমানের হিসেব মিটিয়ে নিলেন
১ বছর আগে এপ্রিল মাসে বিধানসভা নির্বাচনে নিজের বিধানসভা থেকে, পরপর দুবার জেতার পর অবশেষে পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছিল নিজেরই একসময়ের অনুগামী বর্তমানে বিজেপি নেত্রী শিখা চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। এমনকী নিজের এলাকা শিলিগুড়ি বিধানসভাও হাতছাড়া হয়েছিল। তারপর থেকেই প্রবল সমালোচনা এবং সাংগঠনিক রদবদলের নামে তাঁকে এবং তার অনুগামীদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সংগঠন থেকে। কাটা ঘায়ে নুনের মতো বরাবরই দলের মধ্যে অ্যান্টি লবি বলে পরিচিত রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মেয়ে পাপিয়া ঘোষকে জেলা সভানেত্রী করে তার মাথার উপর বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এদিন অদৃশ্য জবাবে সমস্ত হিসেব চুকিয়ে দিলেন তিনি।
ফিনিক্স পাখির মতোই প্রত্যাবর্তন
নির্বাচনের আগে তৃণমূলের একাধিক লবি শিলিগুড়িতে সংগঠনকে জেরবার করছিল। আরও একবার হার মানে শিলিগুড়িতে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের পদ এবং সাংগঠনিক বড়সড় রদবদল অবশ্যম্ভাবী ছিল। গৌতমবাবুর মতো আরও অনেক সংগঠনের প্রথম সারির নেতাদের বানপ্রস্থে চলে যাওয়া একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। সেই জায়গা থেকে ফিনিক্স পাখির মতো উঠে এলেন গৌতম দেব।
আগামাী পাঁচ বছর ঘাসফুলের পৌরনিগম
নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে দূরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি আসন থেকে জিতলেন। নিজে জিতলেন, সঙ্গে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে দলকে বোর্ড এনে দিলেন। যদি, কিন্তু, তবে-এর মধ্যে থেকে বের করে এনে আগামী পাঁচ বছরের জন্য শিলিগুড়ি পুরনিগমের জোড়া ফুলের পতাকা স্থাপন করলেন। সেই সঙ্গে তার সুপ্ত বাসনা, শিলিগুড়ির মেয়র হওয়ার, তাও পূরণ করে নিলেন দিদির হাত ধরে।
কোন ওয়ার্ডে কারা জিতলো? এক ঝলকে
01. তৃণমূল কংগ্রেস - সঞ্জয় পাঠক
02. তৃণমূল কংগ্রেস - গার্গী চ্যাটার্জি
03. তৃণমূল কংগ্রেস - রামভজন মাহাতো
04. বিজেপি - বিবেক সিং
05. বিজেপি - অনিতা মাহাতো
06. তৃণমূল কংগ্রেস - আলম খান
07. তৃণমূল কংগ্রেস - পিন্টু ঘোষ
08. বিজেপি - শালিনী ডালমিয়া
09. বিজেপি - অমিত জৈন
10. তৃণমূল কংগ্রেস - কমল আগরওয়াল
11. বিজেপি - মঞ্জুশ্রী পাল
12. তৃণমূল কংগ্রেস - বাসুদেব ঘোষ
13. তৃণমূল কংগ্রেস - মানিক দে
14. তৃণমূল কংগ্রেস - শ্রাবণী দত্ত
15. তৃণমূল কংগ্রেস - রঞ্জন সরকার
16. কংগ্রেস - সুজয় ঘটক
17. তৃণমূল কংগ্রেস - মিলি সিনহা
18. তৃণমূল কংগ্রেস - সঞ্জয় শর্মা
19. সিপিআই(এম)- মৌসুমী হাজরা
20. তৃণমূল কংগ্রেস - অভয়া বোস
21. তৃণমূল কংগ্রেস - কুন্তল রায়
22. CPI(M)- দীপ্ত কর্মকার
23. তৃণমূল কংগ্রেস - লক্ষ্মী পাল
24. তৃণমূল কংগ্রেস - প্রতুল চক্রবর্তী
25. তৃণমূল কংগ্রেস - জয়ন্ত সাহা
26. তৃণমূল কংগ্রেস - সিক্তা দে বসু রায়
27. তৃণমূল কংগ্রেস - প্রশান্ত চক্রবর্তী
28. তৃণমূল কংগ্রেস - সম্প্রিতা দাস
29. সিপিআই(এম)- শরদিন্দু (জয়) চক্রবর্তী
30. তৃণমূল কংগ্রেস - সাথী দাস
31. তৃণমূল কংগ্রেস - মৌমিতা মন্ডল (মউ)
32. তৃণমূল কংগ্রেস - তাপস চ্যাটার্জি
33. তৃণমূল কংগ্রেস - গৌতম দেব
34. তৃণমূল কংগ্রেস - বিমান তরফদার
35. তৃণমূল কংগ্রেস - সম্পা নন্দী
36. তৃণমূল কংগ্রেস - রঞ্জন শীল শর্মা
37. তৃণমূল কংগ্রেস - অলোক ভক্ত
38. তৃণমূল কংগ্রেস - দুলাল দত্ত
39. তৃণমূল কংগ্রেস - পিংকি সাহা
40. তৃণমূল কংগ্রেস - রাজেশ প্রসাদ শা (মুন্না প্রসাদ)
41. তৃণমূল কংগ্রেস - শিবিকা মিত্তল
42. তৃণমূল কংগ্রেস - শোভা সুব্বা
43. তৃণমূল কংগ্রেস - সুখদেব মাহাতো
44. তৃণমূল কংগ্রেস - প্রীতিকানা বিশ্বাস
45. সিপিআই(এম)- মুন্সী নূরুল ইসলাম
46. তৃণমূল কংগ্রেস - দিলীপ বর্মণ
47. তৃণমূল কংগ্রেস - অমর আনন্দ দাস