ঢাকা-শিলিগুড়ি মিতালি এক্সপ্রেস কবে চলবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটলো না। বাংলাদেশের তরফে ভাড়া ঘোষণা করে দেওয়া হলেও ভারতের তরফে এখনও কোনও প্রস্তুতিই সম্পন্ন হয়নি বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশে একটি অনুষ্ঠানে এ খবর জানিয়েছেন খোদ সেদেশে নিযুক্ত সহকারী ভারতীয় হাইকমিশনার।
এখনই উত্তরবঙ্গে আসছে না বাংলাদেশের ট্রেন
মিতালি এক্সপ্রেস চলাচল আপাতত স্থগিত করা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার সঞ্জীবকুমার ভাট্টি। বুধবার তিনি ওই অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, মিতালী এক্সপ্রেস নিয়ে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। যেহেতু কিছু প্রস্তুতি বাকি রয়েছে। সেগুলো সম্পন্ন না করা হলে এখনই তা চালু করা সম্ভব নয়। সেগুলি সমস্ত খতিয়ে দেখে তারপরই ট্রেন সার্ভিস চালু করা হবে। সহকারী আরও বলেন, বিদেশিদের ই-টুরিস্ট ভিসা প্রদানে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। শিগগিরই এই কার্যক্রম শুরু করা হবে।
কোভিডের কারণে সূচনা হলেও, এখনও চালু হয়নি ট্রেন
কলকাতা থেকে দুটি ট্রেন চালু থাকলেও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ স্থাপনে শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বাংলাদেশের ঢাকা পর্যন্ত ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুই দেশের সরকার। গত বছরই এই ট্রেন পরিষেবা শুরু হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সে সময় পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ায় তা স্থগিত হয়ে যায়। তারপর থেকে করোনা সংক্রমণের কারণে এই ট্রেন পরিষেবা চালুর উদ্যোগ থমকে রয়েছে বলে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
বাংলাদেশের তরফে ভাড়া ঘোষণা করে বার্তা
কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই আবারও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ স্থাপন ত্বরান্বিত করতে মিতালি এক্সপ্রেসের ভাড়ার তালিকা ঘোষণা করে দেয় বাংলাদেশ রেলমন্ত্রক। যদিও ভারতের রেল মন্ত্রকের তরফে এখনও পর্যন্ত এই ধরণের কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। পাশাপাশি নিরাপত্তা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিষয়গুলি সুনিশ্চিত করার আগে তা চালু করা হবে না বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
এখন চালু রয়েছে মৈত্রী এবং বন্ধন
এখন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে দুটি ট্রেন চালু রয়েছে। একটি মৈত্রী এবং অন্যটি বন্ধন এক্সপ্রেস। বন্ধন এক্সপ্রেস কলকাতা থেকে বাংলাদেশের খুলনা পর্যন্ত চলাচল করে। অন্যদিকে মৈত্রী এক্সপ্রেস কলকাতা থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলাচল করে। মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেসের মতো উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগকারী প্রথম ট্রেনটি মিতালি এক্সপ্রেস সফল হবে বলে আশায় দুই দেশ। তাছাড়াও এই ট্রেন পরিষেবা চালু হলে বাংলাদেশ থেকে উত্তরবঙ্গের প্রচুর পর্যটক ভ্রমণে আসবে। শুধু ভ্রমণ নয়, বাংলাদেশ থেকে শিলিগুড়িতে প্রচুর মানুষ চিকিৎসা, পড়াশোনা এমনকী বাণিজ্যিক কারণে রোজ আসেন। তাঁদের জন্য সুবিধা হবে। এখন তাঁরা হিলি সীমান্ত দিয়ে কিংবা ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে সড়কপথে আসেন। তাতে তাঁদের গাড়ি বদলে, হেঁটে সীমান্ত পার হতে হয়। ট্রেন চালু হলে সরাসরি শিলিগুড়িতে এনজেপি স্টেশনে এসে থামতে পারবে ট্রেন।
মিতালি এক্সপ্রেসের রুট
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত মোট যাত্রাপথ ৫৩০ কিলোমিটার। এই পথ অতিক্রম করতে সময় লাগবে ৯ ঘন্টা। পথে বাংলাদেশের রয়েছে ৪৪৬ কিলোমিটার পথ বাকিটা ভারতে। এই পথে বাংলাদেশে পড়বে পার্ব্বতীপুর, টাঙাইল সহ মোট ১৫টি রেল স্টেশন। কিন্তু কোথাও থামবে না ট্রেনটি। তবে বাংলাদেশের রেলের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ট্রেনের এই সফরে রয়েছে হলদিবাড়ি, চিলাহাটি স্টপেজ।