Sittong The Orrange village: এক টুকরো ইউরোপ! দার্জিলিঙে সিটং গিয়েছেন? মংপুর কাছেই...

দার্জিলিংয়ের কমলালেবুর সিংহভাগ চাষ হয় এখানেই। অনেকে বলেন এক টুকরো ইউরোপ! দার্জিলিঙে সিটং গিয়েছেন? মংপুর কাছেই। কীভাবে যাবেন সামান্য খরচে, দেখে নিন।

Advertisement
এক টুকরো ইউরোপ! দার্জিলিঙে সিটং গিয়েছেন? মংপুর কাছেই...কমলালেবু গ্রাম সিটং
হাইলাইটস
  • যেন এক টুকরো ইউরোপ
  • দার্জিলিঙের সিটং গিয়েছেন?
  • মংপুর কাছেই এই গ্রাম আকর্ষণের কেন্দ্র

কমলালেবু (Orange) বলতেই যে নাম সবার আগে মাথায় আসে তা হল দার্জিলিংয়ের কমলালেবু (Darjeeling Orange)। দার্জিলিংয়ের চা (Darjeeling Tea) এর মতোই সর্বোৎকৃষ্ট। আকারে খানিকটা ছোট, হালকা টক এর সঙ্গে মিষ্টি। এর স্বাদই আলাদা বলেন প্রকৃত কমলালেবুপ্রেমীরা (Orange Lovers)। নাগপুরের কমলা (Nagpur Orange) কিংবা কিন্নো যতই বাজারে ভরে থাকুক না কেন, এ কমলালেবুর টানই আলাদা। দার্জিলিংয়ের কমলালেবু নাম হলেও আসলে দার্জিলিং শহর থেকে অনেকটা দূরে মূলত রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত মংপুর (Mungpoo) কাছে অবস্থিত সিটংয়েই (Sittong) দার্জিলিংয়ের কমলালেবুর অধিকাংশ উৎপন্ন হয়। ছবির মতো সুন্দর সিটংকে অনেকে ইউরোপের সুন্দর টুরিস্ট ডেস্টিনেশনের সঙ্গে তুলনা করেন।

সিটং যেন এক টুকরো ইউরোপ

দার্জিলিং-এর চা-পাতা, টয়ট্রেনের সঙ্গে একযোগে যে নাম উচ্চারিত হয় তা হলো কমলালেবু। মজার বিষয় হলো, দার্জিলিং-এর কমলালেবুর সিংহভাগই উৎপন্ন হয় সিটং-এই। শীতকাল থেকে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত ঘুরতে গেলে গাছে গাছে ঝুলে থাকতে দেখবেন কমলালেবু। তারপর কমলালেবু না থাকলেও এখানকার সৌন্দর্য বিন্দুমাত্র কমে না। বরং বর্ষায় এর অন্য রূপ। সিটং যেন এক টুকরো ইউরোপ (Europe)।

সিটং

রিয়াং নদী পেরিয়ে কমলার বাগান

সিটং-এর উচ্চতা চার হাজার ফুটের কাছাকাছি হলেও ঠান্ডা কালিম্পং-মংপুর তুলনায় বেশি। মংপু থেকে সিটং সাড়ে আট কিলোমিটার। পথে পড়বে রিয়াং নদী। স্থানীয়দের প্রিয় পিকনিক স্পট রিয়াং নদীর পার। সঙ্গে সারাক্ষণই হিমেল বাতাস বয় নদীর জলের আশপাশে। নদীর উৎসও কাছেই একটি ঝরণা থেকে।  নদীর অল্প জল যদিও গতি ভালই থাকে। পার হয়েই ওপারে যেতে হবে। এরপর আরও কিছুটা চড়াই-উৎরাই পার হয়ে সিটং পৌছতে হবে। রাস্তা পাহাড়সুলভ কখনও খারাপ কখনও ভাল। পথে যেতে যেতেই দুপাশে নজরে পড়বে কমলালেবুর বাগান। নানা আকারের কমলা ঝুলছে। কোনওটা সবুজ, কোনওটা কমলা, কোনওটা হলুদ।

কমলালেবু ছাড়াও আকর্ষণ এখানকার সিনিক বিউটি

সিটংয়ের মূল আকর্ষণ কমলালেবু বাগান হলেও বছরের সব সময় এখানে ঠাণ্ডা স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া থাকে।এমনিতেও বেশ নয়নাভিরাম। এছাড়াও এখানে সিঙ্কোনা চাষ হয়। মংপুর মতোই এটিও সিঙ্কোনা চাষের জন্য বিখ্যাত। এর বাইরে হয় বড় এলাচ। আছে সব ধরনের শাকসবজি। ফলের মধ্যে কমলালেবু ছাড়াও হয় কলা, পেঁপে। আর ফুলঝাড়ু যে গাছ থেকে হয়, তারও চাষ হয় সিটং-এ।

Advertisement

কমলা

দেখার মতো জায়গা

এখানে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন একটি গুম্ফা, বাঁশ ও মাটি দিয়ে তৈরি। গুম্ফাটি আপার সিটং-এ। ট্রেক করে উঠতে হয়। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার  দারুণ ভিউ পাওয়া যায়। একটি অতি প্রাচীন গির্জাও রয়েছে। গির্জাটি একেবারে হোম স্টে লাগোয়া। এটিও বাঁশ আর মাটির তৈরি ছিল আগে, সম্প্রতি সংস্কার হয়ে পাকা করা হয়েছে। তবে স্থাপত্যে পুরোনো ঐতিহ্য বজায় থাকছে।

সিটং হলো পাখির স্বর্গ। মহানন্দা স্যাংচুয়ারি কাছেই। কাছেই লাটপাঞ্চার এখানকার এক আকর্ষণীয় টুরিস্ট স্পট। লাটপাঞ্চার ছাড়াও কাছাকাছির মধ্যে আছে বাগোড়া, চটকপুর। কার্শিয়ং, মিরিক হয়েও আসা যায় সিটং। অর্থাৎ এই অঞ্চলকে ঘিরেই অনেকগুলি স্পট দেখে নেওয়া যায়। ছোট ছোট ট্রেকিং রুটও আছে সিটং-এ।

কীভাবে যাবেন: এনজেপি স্টেশন থেকে শিলিগুড়ি তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ড থেকে কিংবা বাগডোগরা এয়ারপোর্ট থেকে গাড়িতে সরাসরি সিটং যেতে পারেন। গাড়িভাড়া গড়ে ৩০০০ টাকা। তবে সময় ও সিজন ভেদে কমবেশি হতে পারে।

অনেকে শিলিগুড়ি থেকে বাইক ভাড়া নিয়ে চলে যান। নিজেরাই যেখানে ইচ্ছে ঘুরে ফিরে যান। তাতে গাড়িভাড়ার চেয়ে অনেক কম খরচ হয়।

কোথায় থাকবেন: প্রচুর হোম স্টে আছে। আগে থেকে বুক করে নিতে পারেন। টুরিজম দফতরের সাইটেই খোঁজ পাবেন।

খরচ: থাকা-খাওয়া প্রতিদিন জনপ্রতি ১,২০০ থেকে ১৫০০ টাকা।

খাওয়াদাওয়া- সাধারণ খাওয়াদাওয়া। চিকেন ও ডিম ছাড়া তেমন কিছু পাবেন না। বেশি আশাও করবেন না। এলাকা প্রত্যন্ত। প্রতিটি জিনিসই অনেকটা দূর থেকে আনতে হয়।

 

POST A COMMENT
Advertisement