scorecardresearch
 

রাজ্য থেকে বদলে দেওয়া হচ্ছে 'বোরে', তৃণমূলের লক্ষ্য মিশন শিলিগুড়ি

রাজ্য থেকে বদলে দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় দাবার ঘুঁটি। জেলা সভানেত্রী কিছুই জানেন না। তিনিও সবে নতুন। আগের নেতাদের সরিয়ে তাঁকে সামনে আনা হয়েছে। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে বদলে যাওয়া তৃণমূল। সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। পারবেন তিনি !

Advertisement
শিলিগুড়ি পুরনিগম-ফাইল ছবি শিলিগুড়ি পুরনিগম-ফাইল ছবি
হাইলাইটস
  • তৃণমূলের মিশন শিলিগুড়ি
  • আইপ্যাক যা বলবে
  • রাজ্য থেকে বদলে দিচ্ছে ঘুঁটি

সংগঠনে কে ব্লক সভাপতি হচ্ছেন আর কে অঞ্চল সভাপতি হচ্ছেন, তা জানা নেই জেলা সভানেত্রীর। কাকে নিয়ে দলের লড়াই লড়তে হবে তা নিয়েও অন্ধকারে তিনি। শিলিগুড়িতে তৃণমূলের সংগঠনে স্থানীয় কাউকেই বিশ্বাস করছে না দলের রাজ্য নেতৃত্ব।

নির্বাচন আসে-যায় তৃণমূলের ভাগ্য বদলায় না

একের পর এক নির্বাচন আসে, যায়। গোটা রাজ্যে বিজয়ধ্বজা উড়িয়েও শিলিগুড়ি ও দার্জিলিং জেলায় বারবার আটকে গিয়েছে তৃণমূলের কেতন। বিশেষ করে শিলিগুড়িতে পুরনিগম ও পঞ্চায়েত দুটো জায়গাতেই বারবার পর্যুদস্ত হতে হয়েছে এতদিন। গোটা রাজ্যের বিজয়-পতাকা উড়িয়ে শিলিগুড়িবাসীর মন পায়নি তৃণমূল।

একই ভরাডুবির কাহিনী 

শেষ বিধানসভা নির্বাচনে ছবিতে কোনও বদল হয়নি। গোটা রাজ্যে তৃণমূলের জয়-জয়কার হলেও শিলিগুড়িতে বিজেপির হাতে পরাস্ত হতে হয়েছে তাদের। শুধু শিলিগুড়ি কেন, লাগোয়া জলপাইগুড়ি এবং পাহাড়েও তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে। ফলে সাংগঠনিকভাবে তৃণমূলের রদবদল আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন আগেই।

প্রাক্তনদের সাইডলাইনে সরিয়ে রাখা হয়েছে

প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা প্রাক্তন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত রকম দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বিদায়ী জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকারকেও। শহরের বাসিন্দা প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এর মেয়ে পাপিয়াদেবীকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

রাজ্যস্তর থেকেই অপারেশন হবে

মনে করা হয়েছিল তাঁকে সামনে রেখেই ঘুঁটি সাজাবে জোড়াফুল বাহিনী। কিন্তু কার্যত তাঁকেও অন্ধকারে রেখে দলীয় সংগঠনে রদবদল চালাচ্ছে দল। তৃণমূলের ছোট ছোট সংগঠন এবং মাইক্রো-লেবেলে বদল ঘটছে। তার বিন্দুমাত্র জানেন না জেলা সভানেত্রী। সমস্তটাই করা হচ্ছে রাজ্যস্তর থেকে।

নেপথ্যে আইপ্যাক

অর্থাৎ নিয়োগ করা নেতাকর্মীরা পরবর্তী নির্বাচনগুলিতে কে কোথায় কাজ করবেন তা ঠিক করবে শীর্ষ নেতৃত্ব। ফল না পেলে ফের বদলে যেতে পারে সংগঠন। এই পদ্ধতিতে এই রদবদলের পিছনে মূল মাথা প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক-এর বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। নিজে কিছু জানেন না এবারে নিজে স্বীকার করেছেন পাপিয়া দিনই তিনি জানিয়ে দিয়েছে সমস্ত রাজ্য স্তরের ব্যাপার।

Advertisement

নেতাদের রিপোর্ট যাচ্ছে তৃণমূল ভবনে

দলীয় সূত্রে খবর, শিলিগুড়ি শহরে কমিটির সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনই ব্লক ও অঞ্চল স্তরে সাংগঠনিক রদবদল হচ্ছে। প্রত্যেকটি ব্লকের অঞ্চল টাউন সভাপতির কাজকর্মে নজরদারি করা হচ্ছে। পাশাপাশি তোলাবাজি, জমি দখল, অনৈতিক ও বেআইনি কাজে যুক্ত থাকেন কি না সে বিষয়ে রিপোর্ট যাচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে।

মুখ বদলেও লাভ হয়নি

শিলিগুড়িতে সাংগঠনিক জেলার তিনটি টাউন কমিটি, ব্লক কমিটি রয়েছে। মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি এবং ফাঁসিদেওয়ায় দুটি করে এবং একটি সাংগঠনিক ব্লক রয়েছে। এর মাঝেই সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রতিটি ব্লকে একজন করে অবজারভার নিয়োগ করা হয়েছিল। পাশাপাশি তিনটি বিধানসভায় আলাদা চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও পারেনি পরিস্থিতির পরিবর্তন কেন হচ্ছে না, সে বিষয়ে উদ্বেগে রয়েছে তৃণমূল।

মিশন শিলিগুড়ি

উত্তরবঙ্গে তাদের জয়পতাকা ওড়াতে হবে। শিলিগুড়ি তাদের দখল করতে হবে। সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত। সে কারণেই শিলিগুড়িতে ক্ষমতা দখলে মরিয়া তৃণমূল। এখন অবশ্য পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি তৈরি হয়নি। দ্রুত কমিটি তৈরি করে তা জেলা নেতৃত্বের হাতে তুলে দেওয়া হবে। রাজ্যের ঠিক করে দেওয়ার নেতাকর্মীদের নিয়ে লড়াই করতে হবে স্থানীয় টিমকে। পরবর্তী নির্বাচনগুলিতে এখন এই পদ্ধতিতে কতটা সফলতা আসবে, তা দেখতে হলে আসন্ন নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

 

Advertisement