বিতর্কের কেন্দ্রে তৃণমূল বিধায়ক
কোচবিহারের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া শনিবার নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না এবং বিজেপি প্রার্থী হিসেবে গ্রামীণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন যাঁরা ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা তাদের ‘যত্ন’ নেবে। কি রকম যত্ন তা অবশ্য তিনি খোলসা না করলেও ইঙ্গিত পরিষ্কার।
দলের তরফে প্রকাশ্যে অবশ্য মন্তব্যের বিরোধিতা
তাঁর মন্তব্যে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কার্যত অস্বস্তিতে। তাঁরা অবশ্য দ্রুত এই ধরণের মন্তব্য দল অনুমোদন করে না বলে বিতর্ক ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে অবাধ ও সুষ্ঠভাবে জেতার ব্যাপারে তাঁরা আত্মবিশ্বাসী।
জগদীশ বাণী
স্থানীয় টিএমসি কর্মীদের সঙ্গে এক বৈঠকে কোচবিহারের সিতাইয়ের বিধায়ক বলেন, "এটা মনে রাখবেন। গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের মতো, ২০২৩ পঞ্চায়েতের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে না। যারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করতে যাচ্ছেন আগামী গ্রামীণ নির্বাচনে এখানে গেরুয়া বাহিনীর হয়ে যাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে যাবেন, তাঁরা সাবধান হয়ে যান। আমাদের লোকেরা আপনার যত্ন নেবে। "
সৌগত রায়ের কণ্ঠে গণতন্ত্রের সুর
তিনি আরও বলেছিলেন, "আপনি যদি বিজেপির মতো হত্যাকারী এবং সাম্প্রদায়িক দলের নামে ভোট চান, তাহলে আপনাকে করুণ পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।" তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সৌগত রায় পিটিআইকে বলেন, দল এই ধরনের মন্তব্য অনুমোদন করে না। "পঞ্চায়েত নির্বাচন এখনও অনেক দূরে। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন লড়ব এবং জিতব। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসকে বিপুলভাবে ভোট দিয়েছে এবং গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ষড়যন্ত্র ও ভয় দেখিয়েছে। তারা সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। আমাদের। "
কুণাল ঘোষের বক্তব্যে না বিজেপি, না তৃণমূল
তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেন, বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় গেরুয়া শিবিরের বেশ কয়েকজন নেতা ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন, কিন্তু ভোটাররা তাদের প্রত্যাখ্যান করেন।
দিলীপ ঘোষের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
সিতাই বিধায়কের মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "তিনি যা বলেছেন তা বাস্তবায়নের জন্য আমি তাকে চ্যালেঞ্জ জানাই। এই ধরনের কথা আমাদের কর্মীদের মধ্যে ভয় ধরাতে পারবে না। আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাসী কৌশলের বিরুদ্ধে লড়াই করব।"
তৃণমূলের কৌশল কাজে লাগবে না
তিনি দাবি করেন, জগদীশবাবু মার্চ ও এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনের পর নির্বাচনী এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন কারণ তিনি জনগণের ক্রোধে ভীত ছিলেন। রাজ্যের ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিএমসির রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে বুথ দখল এবং হিংসার খবর পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করে। দিলীপবাবু বলেন, "২০১৮ সালের ভোটের পর থেকে সময় বদলেছে এবং বিজেপি গত বিধানসভা নির্বাচনে ৭৭ টি আসন জিতেছে। আমরা নিশ্চিত করব যে তিন বছর আগে যে কৌশলে তৃণমূল পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করেছিল সেটা এবার বাস্তবায়ন করতে পারবে না।"