বেকারত্বের জ্বালা মেটাতে চাই চাকরি। বহু দোরে ঘুরেও কাজ হয়নি। শেষে কবিরাজি জড়িবুটির তুকতাককে আঁকড়েই এগোতে চাইছিলেন। কিন্তু কবিরাজের ছল চাতুরি ধরতে পারেননি। তাঁকে ওষুধ খাইয়ে অজ্ঞান করে ধর্ষণ করে ওই কবিরাজ বলে অভিযোগ। ঘটনায় শিলিগুড়ির বাগডোগরা এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শেষমেষ পালিয়েও শেষরক্ষা হল না। পুলিশের জালে ধরা পড়ল অভিযুক্ত।
পাঞ্জিপাড়া থেকে গ্রেফতার অভিযুক্ত
বেকারত্বের সমস্যা নিয়ে চাকরি পাওয়ার আশায় কবিরাজের কাছে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হলেন এক যুবতী। যুবতীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে বাগডোগরা থানার পুলিশ রবিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়া এলাকা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত যুবকের নাম রহমত আলি। ধৃতকে সোমবার শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তার জামিন বাতিল হয়েছে।
চাকরির জন্য মরিয়া হয়েই ফাঁদে
অভিযোগ, কলেজে পড়াশুনো করে ওই যুবতী। পাশাপাশি হাতখরচ তুলতে যাদুবলে চাকরি পাওয়ার সহজ পদ্ধতি খুঁজে পেয়ে মন সঁপে দিয়েছিল অনায়াস চাকরিতে। শিলিগুড়ি মহকুমার অন্তর্গত রাঙ্গাপানি এলাকার ২২ বছরের যুবতী চাকরি পাওয়ার আশায় গত মাসে ওই কবিরাজ তথা জ্যোতিষীর সঙ্গে পরিচয় করেন। সেই সুবাদে যুবতী কবিরাজকে ফোন মারফত যোগাযোগ করলে তার চাকরির সমস্যা মিটিয়ে দেবে বলে আশ্বাস দেয় ওই কবিরাজ। তার বদলে ৮৫ হাজার টাকা দাবি করে ওই কবিরাজ জ্যোতিষী। এরপরই চাকরির আশায় যুবতী ওই কবিরাজের কথা মতো বাড়ি থেকে ৮৫ হাজার টাকা সরিয়ে নিয়ে তুলে দেয় তাকে। যুবতীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। অবসরের টাকায় বাড়ি তৈরি করছিলেন। সেখান থেকেই টাকা সরায় সে।
নিখোঁজের খোঁজে আসল ঘটনা উদ্ধার
অভিযোগ, যেদিন ওই যুবতী বাগডোগরা এলাকায় অভিযুক্তকে টাকা তুলে দেন, সেদিন তাঁকে ঠান্ডা পানীয় খাইয়ে তাকে অচৈতন্য করে উত্তর দিনাজপুরে নিয়ে যায় অভিযুক্ত। এরপরে ওই যুবতী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় তার পরিবারের তরফে বাগডোগরা থানায় একটি নিখোঁজ অভিযোগও দায়ের করে তার পরিবার।
কবিরাজের খপ্পর থেকে পালিয়ে আসেন যুবতী
জানা গিয়েছে যুবতী তার ডেরায় রাখাকালীন তাঁকে একা পেয়ে নানা আছিলায় অচৈতন্য করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে ওই কবিরাজ জ্যোতিষী। এরপরই কোনও ক্রমে ওই যুবতী ফিরে আসে বাড়ি। পরে তার বাড়িতে বিষয়টি জানান। চলতি মাসের ৯ তারিখে শিলিগুড়ির বাগডোগরা থানায় যুবতী তার পরিবারকে নিয়ে অভিযুক্ত রহমত আলির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে। এরপর থেকেই ফেরার ছিল ওই অভিযুক্ত। তবে প্রতিবেশীদের কারও মতে যুবতী প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে বাড়ি ছেড়েছিল। পরে যুবকের ভাবগতিক ভালো না লাগায় পালিয়ে আসতে পারে।
পুলিশের সন্দেহ জ্যোতিষী ভুয়া
পরে ঘটনার তদন্তে নেমে রবিবার রাতে শিলিগুড়ির বাগডোগরা থানার পুলিশ একটি বিশেষ টিম পাঞ্জিপাড়া এলাকা থেকে অভিযুক্ত রহমতকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতর কাছ থেকে পুলিশ বেশ কিছু পাথর ও রুদ্রাক্ষ উদ্ধার করে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা অভিযুক্ত রহমত আলি মানুষকে বোকা বানিয়ে নানা রকম পাথর রুদ্রাক্ষ বিক্রি করত। তবে সোমবার ধৃত ব্যক্তিকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। সমস্ত ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বাগডোগরা থানার পুলিশ।