শিশুকে ফেলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মাকে ধর্ষণ! এমনই ভয়াবহ ঘটনার অভিযোগ উঠল অসম থেকে আলিপুরদুয়ারগামী ট্রেন সিংফ এক্সপ্রেস। আলিপুরদুয়ার জংশন নেমে অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। ঘটনার খবর ছড়াতেই ট্রেনে নিরাপত্তা নিয়ে ফের বড়সড় প্রশ্নের মুখে রেল। শুক্রবার রাতে গুয়াহাটি থেকে আলিপুরদুয়ার জংশনগামী সিফং এক্সপ্রেসে এই ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের অভিযোগে দুই অভিযুক্তকে আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে গ্রেপ্তার করেছে জিআরপি।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অসমের শ্রীরামপুর থেকে আলিপুরদুয়ার জংশন স্টেশনের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। মূল অভিযুক্ত একজন হলেও অপরজন ধর্ষণে সহযোগিতা করে বলে অভিযোগ। জিআরপির ডিএসপি তপনকুমার ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘ধর্ষণের অভিযোগে দুই অভিযুক্তকে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবারই তাদের আদালতে তোলা হয়েছে।’
জিআরপি সূত্রে জানা , ওই মহিলা সন্তানকে নিয়ে শনিবার দুপুরে আলিপুরদুয়ারে বাড়ি ফেরার জন্য গুয়াহাটি থেকে সিফং এক্সপ্রেসে চাপেন। ওই ট্রেনটির সব ক’টি কামরাই অসংরক্ষিত ও জেনারেল কামরা। অসমের ফকিরাগ্রামে আসার পর ট্রেনের বেশিরভাগ যাত্রী নেমে যান। ফকিরাগ্রামের পর থেকে আলিপুরদুয়ার জংশনের মধ্যে ট্রেনটির আর কোনও স্টপেজ নেই। এই রাস্তাটুকু পার হতে ট্রেনটির প্রায় ১ ঘন্টা সময় লাগে। ফকিরাগ্রামে ট্রেনের কামরা ফাঁকা হয়ে যাওয়ার সুযোগে দুই অভিযুক্ত ধর্ষণের মতলব আঁটে বলে অভিযোগ। রাত দশটা নাগাদ শ্রীরামপুরের কাছাকাছি ট্রেন আসতেই এক যুবক ওই মহিলার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রথমে মহিলা ভয়ে অপর যুবকের থেকে সহযোগিতা চান। কিন্তু ওই যুবক সাহায্য তো করেইনি, বরং তার শিশুকে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন বলে মহিলার অভিযোগ। এরপর আর বাধা দিতে পারেননি মহিলা বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি।
ট্রেনটি আলিপুরদুয়ার জংশনে পৌঁছানোর পর সাহস করে শিশু নিয়ে জিআরপির অফিসে গিয়ে অভিযোগ করেন। সঙ্গে সঙ্গেই জিআরপির অফিসাররা অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। শেষপর্যন্ত মহিলা ও অন্য যাত্রীদের সহযোগিতায় দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় জিআরপি। রবিবার তাদের আলিপুরদুয়ার জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
তবে একটি চলন্ত ট্রেনের কামরায় কীভাবে একজন মহিলাকে ধর্ষণ করা হল, ট্রেনে নিরাপত্তা আদৌ থাকে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জেনারেল কামরায় সাধারণত অল্প হলেও যাত্রী থাকে। তাহলে সকলের নজর এড়িয়ে কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। কেউ থাকলে বাধা দিল না কেন, তা নিয়েও ভাবছেন তাঁরা। অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীকে জিজ্ঞাসা করে তদন্তে এগোতে চাইছেন তাঁরা।